বেকার ছেলেমেয়ে, গৃহিণী ও ছাত্রছাত্রীদের ৫ লাখ টাকা করে দিচ্ছে। PMEGP Loan প্রকল্পে অনলাইনে আবেদন করলেই একাউন্টে টাকা পাবেন

দেশের সমস্ত বেকার ছেলে মেয়ে, গৃহিণী, কলেজ পড়ুয়া ও অস্থায়ী কর্মীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী PMEGP Loan Scheme নামে নতুন প্রকল্প শুরু করলেন। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি। যার ফলে বেকার সমস্যা নিরসন ও যুব সমাজের মধ্যে কাজের অনুপ্রেরণা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কাজ করার উৎসাহ সৃষ্টি করা। এই প্রকল্পের সুবিধা, কারা যোগ্য এবং কিভাবে এই প্রকল্পে আবেদন করবেন বিস্তারিত জেনে নিন।

PMEGP Loan – Prime Minister Employment Generation Program

PMEGP Loan প্রকল্প বেকার যুবকদের স্বনির্ভর করে তুলতে সাহায্য করে। এই প্রকল্পটি খাদি ও গ্রামোদ্যোগ কমিশন (KVIC) দ্বারা পরিচালিত হয় এবং গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি করে। PMEGP প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ব্যাঙ্ক থেকে MSME Loan বা ব্যবসায়িক ঋণ নিয়ে ছোটো ব্যবসা শুরু করতে পারেন, যেখানে সরকার আর্থিক সহায়তা বা সাবসিডি প্রদান করে। গ্যারান্টার ছাড়া এবং কম সুদে ও সরকারি সাবসিডি নিয়ে সরকার ব্যাবসার জন্য আর্থিক সাহায্য দেয়। এটি লক্ষাধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। তবে, সমস্ত রকম ব্যবসার জন্য এই প্রকল্পে টাকা পাওয়া যায় না, তাই আবেদনের আগে সমস্ত কিছু জেনে আবেদন করুন।

PMEGP Loan Scheme এর উদ্দেশ্য ও সুবিধা

PMEGP Loan প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো গ্রামীণ এবং শহুরে এলাকায় বেকারত্ব কমিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। এই প্রকল্প ক্ষুদ্র উদ্যোগ গড়ে তুলতে সহায়তা করে এবং ক্রেডিট-লিঙ্কড সাবসিডি প্রদান করে। এই সাবসিডি প্রকল্পের মোট খরচের ১৫% থেকে ৩৫% পর্যন্ত হতে পারে। এটি শুধুমাত্র নতুন প্রকল্পের জন্য প্রযোজ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থান নিশ্চিত করে। উদ্যোক্তারা এই ব্যবসায়িক ঋণের মাধ্যমে মেশিন ক্রয় বা কারখানা স্থাপন করতে পারেন। বিশেষ করে মহিলা, SC/ST, এবং অক্ষম ব্যক্তিরা অতিরিক্ত সুবিধা পান।

সরকারি সাবসিডির বিবরণ

PMEGP এর সাবসিডি প্রকল্পের খরচের উপর নির্ভর করে। সাধারণ শ্রেণির জন্য শহরাঞ্চলে ১৫% এবং গ্রামাঞ্চলে ২৫% সাবসিডি দেওয়া হয়। বিশেষ শ্রেণির (SC/ST, মহিলা, প্রাক্তন সৈনিক) জন্য শহরে ২৫% এবং গ্রামে ৩৫% সাবসিডি প্রযোজ্য। এই সাবসিডি এককালীন এবং ব্যাঙ্ক ঋণের সাথে সমন্বিত হয়। তিন বছরের লক-ইন পিরিয়ডের পর এটি অ্যাডজাস্ট করা হয়। উত্তর-পূর্বাঞ্চল বা পাহাড়ি এলাকায় উচ্চ হারে সুবিধা পাওয়া যায়।

PMEGP Loan কারা পাবেন?

PMEGP ঋণের জন্য আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে। ম্যানুফ্যাকচারিং প্রকল্পের জন্য, যদি খরচ ১০ লক্ষ টাকার বেশি হয়, তবে ৮ম শ্রেণি পাস হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ শ্রেণির আবেদনকারীরা অগ্রাধিকার পান। একই পরিবার থেকে শুধুমাত্র একজন এই সুবিধা নিতে পারেন। যারা পূর্বে অন্য সরকারি স্কিমের সুবিধা নিয়েছেন, তারা এই প্রকল্পে অংশ নিতে পারবেন না। সেলফ হেল্প গ্রুপগুলোও এই স্কিমের জন্য যোগ্য, তবে অন্য কোনো সাহায্য নেওয়া যাবে না।

অস্থায়ী কর্মী ও শ্রমিকেরা বিনামূল্যে আর্থিক সাহায্য পেতে এখানে দেখুন।

কারা লোন পাবেন না?

PMEGP Loan এর আওতায় কৃষি, পশুপালন, বা চা-কফি চাষের মতো কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত নয়। পরিবেশগত নিষেধাজ্ঞার কারণে কিছু প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়। বিদ্যমান ব্যবসার জন্য নতুন ঋণ নয়, তবে আপগ্রেডেশনের সুযোগ রয়েছে। মদ উৎপাদন বা জুয়ার মতো নিষিদ্ধ কার্যক্রম এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত নয়। স্থানীয় নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক। এই বিধিনিষেধ প্রকল্পের গুণমান নিশ্চিত করে।

PMEGP ঋণের সুদের হার ও পরিমাণ

PMEGP ঋণের সুদের হার সাধারণত ১১-১২% এর মধ্যে থাকে, তবে এটি ব্যাঙ্কের নীতির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে সর্বোচ্চ ২৫ লক্ষ টাকা এবং সার্ভিস সেক্টরে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় ঋণের ক্ষেত্রে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ১ কোটি এবং সার্ভিসে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সীমা রয়েছে। ঋণের মেয়াদ ৩ থেকে ৭ বছর, যাতে প্রাথমিক মর্যাটোরিয়াম অন্তর্ভুক্ত। CGTMSE গ্যারান্টির মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোল্যাটারাল-মুক্ত ঋণ পাওয়া যায়। সাবসিডি সামঞ্জস্য হলে সুদের হার কমে যায়।

আরও পড়ুন, আপনার একটি মাত্র মেয়ে হলে টাকা দিচ্ছে সরকার।

PMEGP ঋণের জন্য অনলাইন আবেদন

PMEGP ঋণের জন্য অনলাইন আবেদন করতে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান। আধার কার্ড যাচাই করে ইউজার আইডি তৈরি করুন, যা এসএমএসের মাধ্যমে পাবেন। লগইন করে প্রকল্পের বিবরণ পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করুন। আবেদন জমা দেওয়ার পর PMEGP Loan KVIC বা DIC দ্বারা যাচাই করা হয়। অনুমোদনের পর ব্যাঙ্কে গিয়ে ব্যবসায়িক ঋণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন। EDP প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক, যা ২-৩ সপ্তাহ স্থায়ী হয়।

click here red button

প্রয়োজনীয় নথিপত্র

PMEGP ব্যবসায়িক ঋণে আবেদনের জন্য আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং বয়সের প্রমাণপত্র প্রয়োজন। প্রকল্প রিপোর্ট এবং শিক্ষাগত সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। বিশেষ শ্রেণির জন্য ক্যাটাগরি সার্টিফিকেট প্রয়োজন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ এবং ফটো আইডি দাখিল করতে হবে। সঠিক নথি জমা দেওয়া আবেদনের সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই নথিগুলো অনলাইনে আপলোড করে সময় বাঁচান।

আরও পড়ুন, বাড়ি বসে কি কাজ করে ইনকাম করবেন, এখানে দেখুন।

উপসংহার

PMEGP Loanহলো স্বনির্ভর ভারত গড়ার একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষাধিক যুবক নিজেদের ব্যবসা শুরু করে সফল হয়েছেন। সঠিক পরিকল্পনা এবং নথিপত্র দিয়ে আবেদন করলে সাফল্য নিশ্চিত। আরও বিস্তারিত জানতে অফিসিয়াল PMEGP পোর্টালে ভিজিট করুন। এই স্কিমটি অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আজই আপনার উদ্যোক্তা যাত্রা শুরু করুন!

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!