Shramashree App: প্রতিমাসে পাবেন ৫০০০ টাকা। পশ্চিমবঙ্গের নতুন প্রকল্প। আজই শ্রমশ্রী অ্যাপ ডাউনলোড করে শ্রমশ্রী প্রকল্পে আবেদন করুন

পশ্চিমবঙ্গ সরকার সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant Worker) জন্য Shramashree App তথা শ্রমশ্রী অ্যাপ চালু করেছে। যাতে শ্রমশ্রী প্রকল্পে (Shramashree Scheme) সকলেই মোবাইল থেকেই আবেদন করতে পারেন। এবার যারা প্রকৃত পরিযায়ী শ্রমিক এবং বাইরের রাজ্য থেকে ফিরে এসে বাংলায় ফের কাজ শুরু করতে চান, তারা আবেদন করলেই প্রতিমাসে ৫০০০ টাকা করে পাবেন। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, শ্রমশ্রী প্রকল্প কি? কারা সুবিধা পাবেন? কিভাবে আবেদন করবেন। সমস্ত কিছুই এই প্রতিবেদন থেকে জেনে নিন।

Shramashree Scheme Shramashree App Download

পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকরা অনেকদিন ধরে অন্য রাজ্যে বা বিদেশে কষ্ট করে রুজি রুটি চালানোর লড়াই করছেন। এখন সরকার তাদের জন্য চালু করেছে Shramashree App, যা সরকারি সাহায্য পাওয়ার একটি ডিজিটাল মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে শ্রমিক ভাই-বোনেরা সহজেই সরকারি সুবিধা পাবেন, বিশেষ করে ৫০০০ টাকার আর্থিক সহায়তা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই উদ্যোগটি শ্রমিকদের জীবনকে আরও সহজ করে তুলবে।

শ্রমশ্রী প্রকল্প কী এবং এর গুরুত্ব কেন?

শ্রমশ্রী অ্যাপটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শ্রমশ্রী প্রকল্পে আবেদন করার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায়, যা মোবাইল থেকেই আবেদন করা যায়। এই অ্যাপটি বিশেষভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য তৈরি। এটি কর্মসাথী পোর্টালের মোবাইল সংস্করণ, যার মাধ্যমে শ্রমিকরা অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন। অন্য রাজ্য বা বিদেশে কাজ করা শ্রমিকরা এখন ফোনেই সবকিছু সম্পন্ন করবেন, কোনো কম্পিউটারের দরকার নেই। এই অ্যাপটি শ্র মশ্রী প্রকল্পের অধীনে ৫০০০ টাকার এককালীন ভ্রমণ সহায়তা এবং মাসিক আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এটি শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। সরকারের এই পদক্ষেপটি গত আগস্ট মাস থেকে চালু হয়েছে, যা লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের জীবন বদলে দেবে।

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য অপরিহার্য

পরিযায়ী শ্রমিকরা প্রায়ই অন্য প্রান্তে বাংলা বলায় হয়রানির শিকার হন, যা তাদের ফিরে আসতে বাধ্য করে। শ্র মশ্রী অ্যাপ এই কষ্টকে মোকাবিলা করে আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করে। এটি শুধু টাকা দেয় না, বরং পরিবারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে। অ্যাপের লোকেশন ট্র্যাকিং ফিচার ভুয়া আবেদন রোধ করে সত্যিকারের উপকারীদের সাহায্য করে। এর ফলে শ্রমিকরা নিরাপদে বাড়ি ফিরে নতুন কর্মসংস্থান খুঁজে পাবেন। এই প্রকল্পটি রাজ্যের ২২ লক্ষেরও বেশি শ্রমিকের জন্য একটি আশার আলো। সামগ্রিকভাবে, এটি শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার একটি নতুন অধ্যায় শুরু করেছে।

আরও পড়ুন, লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা বাড়ছে? খবর এলো।

শ্রমশ্রী অ্যাপের নতুনত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যসমূহ

শ্রমশ্রী অ্যাপের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো সরাসরি রেজিস্ট্রেশন সুবিধা, যা কর্মসাথী পোর্টালে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন সম্ভব করে। আবেদন প্রক্রিয়া এতটাই সরল যে যেকোনো সাধারণ শ্রমিক সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারবেন। লোকেশন-ভিত্তিক পরিষেবা অ্যাপটিকে আরও নির্ভরযোগ্য করে তোলে, কারণ এটি আপনার বর্তমান অবস্থান যাচাই করে। প্রতারণা রোধের জন্য বিশেষ অ্যালগরিদম যুক্ত করা হয়েছে, যা ভুয়া দাবি বন্ধ করে। এছাড়া, অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ইউজারদের জন্য ডিজাইন করা, যা সহজ ডাউনলোডের সুবিধা দেয়। এই বৈশিষ্ট্যগুলি শ্রমশ্রী অ্যাপকে অন্যান্য সরকারি অ্যাপ থেকে আলাদা করে।

কীভাবে এটি শ্রমিকদের জীবন সহজ করে?

এই অ্যাপটি শ্রমিকদের সময় বাঁচায়, কারণ সবকিছু মোবাইলে হাতের মুঠোয়। এটি ব্যবহার করে শ্রমিকরা তাদের পরিচয়পত্র আপলোড করে তাৎক্ষণিক স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন। অ্যাপের ইউজার-ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস নতুন প্রযুক্তির ভয় দূর করে। এর মাধ্যমে শ্রমিকরা সরকারের সাথে সরাসরি যুক্ত হয়ে তাদের অধিকার দাবি করতে পারবেন। এটি শুধু আর্থিক সাহায্য নয়, বরং মানসিক সমর্থনও প্রদান করে। সামগ্রিকভাবে, এই অ্যাপ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি ডিজিটাল সুরক্ষা কবচ।

শ্রমশ্রী প্রকল্পে আবেদনের সহজ পদ্ধতি

ধাপ ১:  শ্রমশ্রী অ্যাপ ডাউনলোড করুন

প্রথমে কর্মসাথী ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড লিঙ্কে ক্লিক করুন এবং APK ফাইলটি সংগ্রহ করুন। তারপর আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এটি ইনস্টল করুন, যাতে কোনো সমস্যা না হয়। অ্যাপটি খুলে নিরাপত্তা অনুমতি দিন। এই ধাপটি খুব সহজ, মাত্র কয়েক মিনিটের কাজ। ইনস্টল হয়ে গেলে অ্যাপটি রেডি। স্মরণ রাখবেন, এই অ্যাপ টি শুধুমাত্র সরকারি সাইট থেকেই ডাউনলোড করবেন।

ধাপ ২: রেজিস্ট্রেশন ও তথ্য প্রবেশ

অ্যাপ খুলে রেজিস্টার বাটনে ট্যাপ করুন এবং মোবাইল নম্বর দিন। OTP জেনারেট করে ভ্যালিডেট করুন, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আসবে। তারপর নাম, আধার নম্বর এবং অভিভাবকের নাম লিখে রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করুন। এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত দ্রুত এবং নিরাপদ। OTP যাচাইয়ের পর আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। এখানে কোনো জটিলতা নেই, সাধারণ শ্রমিকও সহজে করতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশন শেষে আপনি লগইন করে চেক করে নেবেন।

আরও পড়ুন, মাত্র ১০০০ টাকা বিনিয়োগে বাড়ি বসে এই ব্যবসা করে প্রতিমাসে ১৫০০০ টাকা আয় করুন।

ধাপ ৩: আবেদনপত্র পূরণ ও নথি আপলোড

  • ব্যক্তিগত তথ্য যেমন মোবাইল নম্বর, জন্মতারিখ, রেশন কার্ড নম্বর টাইপ করুন।
  • স্থায়ী ঠিকানা লিখুন: জেলা, ব্লক, পিনকোড সহ সম্পূর্ণ বিবরণ।
  • কর্মস্থলের তথ্য দিন—যদি ভারতের বাইরে হয়, পাসপোর্ট নম্বর যোগ করুন।
  • কাজের ধরন, মজুরি এবং নিয়োগকর্তার বিবরণ উল্লেখ করুন, স্ব-নিযুক্ত হলে এড়িয়ে যান।
  • ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, নমিনি এবং পরিবারের তথ্য যোগ করুন।
  • নথি আপলোড করুন: ছবি, আধার, ভোটার আইডি—সব JPG বা PDF-এ, ৫০০ কেবি-এর নিচে।
  • এই ধাপগুলি সাবধানে সম্পন্ন করলে আবেদন সম্পূর্ণ হবে।

ধাপ ৪: অনলাইনে ফর্ম জমা ও স্ট্যাটাস চেক

সব তথ্য পর্যালোচনা করে ফাইনাল সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন, যাতে কোনো ভুল না থাকে। জমা হয়ে গেলে রেফারেন্স নম্বর পাবেন। পরে চেক স্ট্যাটাস অপশনে গিয়ে আপডেট দেখুন। আবেদন গৃহীত ও মনোনীত হলেই একাউন্তে টাকা ঢুকবে। যদি কোনো সমস্যা হয়, হেল্পলাইন নম্বরে কল করুন।

click here red button

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সতর্কতা

শ্রমশ্রী প্রকল্পে ৫০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা পেতে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থেকে আবেদন করতে হবে, কারণ অ্যাপ লোকেশন ট্র্যাক করে। আবেদনের পর স্ট্যাটাস চেক করে নিন, যাতে দেরি না হয়। এই প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা এবং নিবন্ধিত পরিযায়ী শ্রমিকদের শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তাই নয়, সন্তানদের শিক্ষা সহায়তাও দেয়। তবে প্রতারণা এড়াতে সতর্ক থাকুন, সরকারি ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন। এটি শ্রমিকদের জন্য একটি নতুন আশা। শ্রমশ্রী অ্যাপের মাধ্যমে আপনার অধিকার রক্ষা করুন এবং সুবিধা গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন এটি শুধু একটি অ্যাপ নয়, বরং শ্রমিকদের স্বপ্নের সাথী।

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!