দীপাবলির আগে ভারতের কৃষক বন্ধুদের (Indian Farmers) দের জন্য সুখবর নিয়ে এল কেন্দ্রীয় সরকার। PM Kisan Yojana প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) সম্প্রতি কৃষি ও সম্পর্কিত ক্ষেত্রে ৩৫,৪৪০ কোটি টাকার দুটি বড় প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এই প্রকল্পগুলো কৃষকদের আর্থিক স্বচ্ছলতা এবং দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর মধ্যে রয়েছে “ডাল আত্মনির্ভরতা মিশন” এবং “প্রধানমন্ত্রী ধন ধান্য কৃষি যোজনা”।
PM Kisan Yojana Extention for Indian Farmers
প্রধানমন্ত্রী কিষান যোজনায় সারা দেশের কৃষকদের জন্য এই উদ্যোগগুলো কৃষি ও খাদ্যশস্যের ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি, পশুপালন, মৎস্য চাষ এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। এই প্রকল্পগুলো সমাজতান্ত্রিক নেতা জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুরু হয়েছে। আর এই বিষয়ে কৃষকেরা কিভাবে উপকৃত হবেন এবং সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জেনে নিন।
ডাল আত্মনির্ভরতা মিশন : Aatmanirbharta in pulses
“ডাল আত্মনির্ভরতা মিশন” তথা Aatmanirbharta in pulses প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ডাল উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানির উপর নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবে। এই প্রকল্পে মোট ১১,৪৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। এর উদ্দেশ্য হলো ২০৩০-৩১ ফসল বর্ষের মধ্যে ডাল উৎপাদন ২৫২.৩৮ লক্ষ টন থেকে ৩৫০ লক্ষ টনে উন্নীত করা। এটি কৃষকদের আয় বাড়াতে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। প্রকল্পটি আসন্ন রবি মরশুম থেকে শুরু হয়ে ২০৩০-৩১ পর্যন্ত চলবে। এটি ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেয়েছে।
কৃষকেরা কিভাবে উপকৃত হবেন?
ডাল আত্মনির্ভরতা মিশনের মাধ্যমে কৃষকরা উন্নত বীজ, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি এবং বাজার সুবিধা পাবেন। ডাল চাষে নিয়োজিত কৃষকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এটি কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমাতে এবং ফলন বাড়াতে সহায়তা করবে। সরকারি সহায়তায় কৃষকরা ডাল চাষে আরও উৎসাহ পাবেন। এই প্রকল্প দেশের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলকে শক্তিশালী করবে। কৃষকদের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করাও এর লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী ধন ধান্য কৃষি যোজনা : Dhana Dhanya Krishi Yojana
“প্রধানমন্ত্রী ধন ধান্য কৃষি যোজনা” ২৪,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগে ১০০টি নিম্ন ফলনশীল কৃষি জেলার উন্নয়নের জন্য কাজ করবে। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো এবং ফসলের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি করা। এটি সেচ ব্যবস্থার উন্নতি এবং সংরক্ষণ সুবিধার উন্নয়নে জোর দেবে। নির্বাচিত জেলাগুলোতে কৃষকদের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রকল্পটি ২০৩০-৩১ পর্যন্ত কৃষকদের সহায়তা করবে। এটি কৃষি অর্থনীতিকে নতুন গতি দেবে।
আরও পড়ুন, পাকা বাড়ি বানানোর টাকা দিচ্ছে সরকার। কিভাবে টাকা পাবেন দেখুন।
পশুপালন ও কৃত্রিম প্রজনন
প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে আরও ৫,৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে বেঙ্গালুরু ও জম্মু-কাশ্মীরে কৃত্রিম প্রজনন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। আমরেলি ও বানাসে উৎকর্ষ কেন্দ্র এবং আসামে একটি আইভিএফ ল্যাবরেটরি স্থাপিত হয়েছে। মেহসানা, ইন্দোর এবং ভিলওয়ারায় দুধের গুঁড়ো কারখানা চালু হয়েছে। তেজপুরে মাছের খাবার কারখানাও এই উদ্যোগের অংশ। এই প্রকল্পগুলো কৃষি ও সম্পর্কিত খাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
আরও পড়ুন, এই প্রকল্পে টাকা দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার, কিভাবে আবেদন করবেন?
কৃষকদের স্বীকৃতি ও কৃষি সমবায় ঋণ
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় প্রাকৃতিক কৃষি মিশনের অধীনে সার্টিফায়েড কৃষকদের শংসাপত্র প্রদান করেছেন। মৈত্রী টেকনিশিয়ান এবং প্রাথমিক কৃষি সমবায় ঋণ সমিতির সদস্যরাও সম্মানিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সমৃদ্ধি কেন্দ্রের সদস্যদেরও শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগে ১০,০০০ কৃষক উৎপাদক সংগঠনে ৫০ লক্ষ কৃষক সদস্য যুক্ত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ডাল চাষী কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এই অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান সহ অন্যান্য মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন, ঘরে বসে এই কাজ করে প্রতি মাসে প্রচুর টাকা রোজগার করুন। সম্পূর্ণ পদ্ধতি দেখে নিন
উপসংহার
প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্পগুলো ভারতের কৃষি খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। কৃষকদের জন্য এই উদ্যোগগুলো আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির সুযোগ করে দেবে। ডাল আত্মনির্ভরতা মিশন দেশকে আমদানি নির্ভরতা থেকে মুক্ত করবে। ধন ধান্য কৃষি যোজনা সাধারণ কৃষক ও দেশের কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই প্রকল্পগুলো কৃষকদের জীবনে সমৃদ্ধি আনবে। দীপাবলির আগে এই উপহার কৃষকদের জন্য নতুন আশার আলো জ্বালাবে।