পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনী (SIR Special Intensive Revision) এর কাজ চলছে। এই কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ভাতা তথা BLO Remuneration Increase এর দাবি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বুথ লেভেল অফিসাররা (Booth Level Officer). পুজোর আগে থেকে ম্যাপিং শুরু হয়েছে, দুবার ট্রেনিং হয়েছে, ৩ বার করে ১০০০ বাড়িতে যেতে হবে, প্রতিদিন সমস্ত কাজের রিপোর্ট অনলাইনে সাথে সাথে App এ আপডেট করতে হবে। আরও অনেক কাজ। এছাড়া তাঁদের মোবাইল ডেটা খরচ এবং স্মার্টফোন কেনার ব্যয় নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। তাই এবার নির্বাচন কমিশন এখন সেই সমস্যার সমাধান করতে চলেছে। ECI CEO দফতর থেকে রাজ্য সরকারের (Government of West Bengal) কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এতে বিএলওদের জন্য BLO Remuneration তথা আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
BLO Remuneration Increase News
বুথ লেভেল অফিসার তথা BLO রা চাকরির পাশাপাশি SIR এর কাজ করছেন। ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করতে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে হয়। অনেকের কাছে আগে থেকে স্মার্টফোন ছিল না। তাই নতুন ফোন কিনতে গিয়ে খরচ বেড়েছে। ডেটা প্যাক কেনার জন্যও অতিরিক্ত টাকা লাগছে। সরকারি কাজে হটাত করে দামি স্মার্টফোন দেওয়ার দাবিও ওঠে। এসব নিয়ে কলকাতায় একাধিক প্রশিক্ষণ শিবিরেও বিক্ষোভ হয়েছে। যার ফলে নয়া সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের।
উৎসাহ ভাতার পরিমাণ নির্ধারণ
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে বুথ লেভেল অফিসারদের BLO Remuneration হিসাবে আরও ছয় হাজার টাকা ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। এর মধ্যে এক হাজার টাকা মোবাইল খরচের জন্য আলাদা রাখা হয়েছে। আগে বার্ষিক সাম্মানিক ছিল ছয় হাজার টাকা মাত্র। এখন তা দ্বিগুণ করে বারো হাজার করা হয়েছে। বিহারে একই ধরনের কাজে এই ভাতা দেওয়া হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গেও সেই মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে বছরে প্রায় ২০০০০ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন।
বিএলও কর্মীদের ভাতা বৃদ্ধির হিসাব
প্রতি বছর ভোটার তালিকা পর্যালোচনায় বিএলওরা কাজ করেন। সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে এই প্রক্রিয়া। আগে দু’মাসের জন্য পাঁচশো টাকা খরচ দেওয়া হত। এবার এসআইআরে তা বাড়িয়ে এক হাজার করা হয়েছে। এর সঙ্গে পাঁচ হাজার যোগ করে মোট ছয় হাজার হবে। এতে বিএলওদের উৎসাহ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের ২০০২ সালের ভোটার লিস্ট ডাউনলোড করুন। তালিকায় নাম না থাকলে কি করবেন?
প্রশাসনিক পদক্ষেপ
নবান্ন থেকে অর্থ দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনের অফিস এই বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। রাজ্য সরকারের অনুমোদন পেলে টাকা ছাড় হবে। বিএলওরা এই সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অনেকে বলছেন এতে কাজের গতি বাড়বে। ভোটার তালিকা সংশোধনে নিয়োজিত কর্মীরা এতে উপকৃত হবেন।
আরও পড়ুন, SIR ভোটার তালিকা সংশোধনে বাড়িতে BLO এলে কি কি জমা দেবেন? কাদের কিছু লাগবে না?
এসআইআর প্রক্রিয়ার গুরুত্ব
ভোটার তালিকা সংশোধন বা বিশেষ নিবিড় সংশোধন ভোটার লিস্ট 2025 কে আপডেট রাখে। এতে মৃত ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়ার পাশাপাশি একজনের একাধিক ভোট থাকলেও সেটি বাতিল হতে পারে। এতে নতুন ভোটারদের তথ্য ও সহজে ম্যাপিং করা যায়। বিএলওরা প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার লিস্ট যাচাই করেন। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য আপলোড করতে হয়। তাই BLO দের স্মার্টফোন ও ডেটা খরচ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। যার জেরে ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
SIR প্রক্রিয়ায় বিএলওদের ভূমিকা বৃদ্ধি
বুথ লেভেল অফিসাররা নির্বাচন তালিকা সংশোধনের মূল স্তম্ভ। তাঁরাই কেবলমাত্র প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরজমিনে ভোটারের বর্তমান অবস্থা যাচাই করতে পারবেন। এবং ভোটের আগে ভোটকেন্দ্র ও পরিচালনা করেন প্রতি নির্বাচনে। আর এবার এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় তাঁদের দায়িত্ব আরও বেড়েছে। আর্থিক সহায়তা তাঁদের কাজে প্রেরণা যোগাবে।
আরও পড়ুন, ২০২৫ সালের ভোটার লিস্ট ডাউনলোড করুন।
উপসংহার
পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর এর কাজ সুষ্ঠুভাবে চলছে। বিএলওদের পরিশ্রমের কথা ভেবে জন্য উৎসাহ ভাতা তথা BLO Remuneration Increase একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। যেখানে ছয় হাজার টাকার মধ্যে মোবাইল খরচ আলাদা ধরা হয়েছে। এতে কর্মীদের ডেটা এবং ফোনের সমস্যা মিটবে। নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।