উত্তরবঙ্গের সমস্ত কৃষক বন্ধুদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বড় ঘোষণা। বন্যার কারণে এই সমস্ত সুবিধা ও ক্ষতিপূরণ পাবেন

উত্তরবঙ্গের কৃষক বন্ধুদের দুর্দশার কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Government of West Bengal) একটি বিশেষ শিবিরের আয়োজন করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাহায্য করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলা শস্য বিমা (Bangla Shasya Bima Crop Insurance) প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের নাম নথিভুক্ত (Krishak bandhu list) করার জন্য এই শিবির চালু করা হয়েছে। কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা কৃষকদের (PM Kisan Yojana) সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাঁদের সমস্যা বুঝছেন। তাঁদের লক্ষ্য হলো উত্তরবঙ্গের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দ্রুত বিমার সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। এই উদ্যোগ কৃষকদের আর্থিক সুরক্ষা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বন্যা পীড়িত কৃষক বন্ধুদের বাংলা শস্য বিমায় ক্ষতিপূরণ

উত্তরবঙ্গের চারটি জেলায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রাথমিক জরিপে জানা গেছে, শাকসবজি ও ধানের ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ভুট্টাচাষও এই দুর্যোগের কবলে পড়েছে। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৮,৪৫২ হেক্টর কৃষিজমি জলের তলায় তলিয়ে গেছে। জলপাইগুড়ি জেলায় ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, যেখানে ১৩,৯৫৩ হেক্টর জমি প্লাবিত হয়েছে। এই দুর্যোগে কৃষক বন্ধুদের জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলাভিত্তিক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র

জলপাইগুড়ি ছাড়াও অন্যান্য জেলাগুলিতেও কৃষিজমির ক্ষতি হয়েছে। আলিপুরদুয়ারে ৩,৪৯৫ হেক্টর জমি জলমগ্ন হয়েছে। দার্জিলিংয়ে ৫৮২ হেক্টর এবং কোচবিহারে ৪২২ হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই জলাবদ্ধতার কারণে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। কৃষি দপ্তর এখনও ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারেনি। তবে, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, কৃষকরা বড় ধরনের আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৎপর প্রশাসন

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশে পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার উত্তরবঙ্গে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করে কৃষকদের (Farmers) সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবেন বলে জানা গেছে। এই রিপোর্টের ভিত্তিতে কৃষক বন্ধুদের জন্য আরও সহায়তার পরিকল্পনা করা হবে। সরকারের এই তৎপরতা কৃষকদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।

আরও পড়ুন, ভারতীয় জনতার নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হবে না রেশন, আধার, ভোটার কার্ড। জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট

সুফল বাংলার বিশেষ উদ্যোগ

কৃষকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্যও সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। কৃষি বিপণন দপ্তর ২৯টি নতুন সুফল বাংলা স্টল চালু করেছে। এই স্টলগুলির মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে শাকসবজি ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। দুর্গত এলাকার ত্রাণশিবিরগুলিতে ১৫০ কুইন্টাল আলু-সহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য পাঠানো হয়েছে। এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষের জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করছে। সুফল বাংলার এই পদক্ষেপ জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও কৃষকদের প্রতি সমর্থন

রাজ্য সরকার কৃষকদের (Krishak Bandhu Scheme) দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার জন্য কাজ করে চলেছে। বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পের (Bangla Shasya Bima Corp Insurance) মাধ্যমে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য হলো কৃষকরা যেন দ্রুত ক্ষতিপূরণ পান। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এই সব পদক্ষেপ কৃষকদের জীবনে নতুন আশা জাগাচ্ছে।

আরও পড়ুন, বিনামূল্যে রেশনের সাথে ১০০০ টাকা করে দিচ্ছে? কাদের জন্য এই ঘোষণা? সঠিক জেনে নিন

কি কি সুবিধা পাবেন?

বন্যার কারণে ইতিমধ্যে সরকার ত্রান সামগ্রী পাঠাচ্ছে। যে সমস্ত কৃষকদের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের বাংলা শস্য বিমা (Bangla Sashya Bima Crop Insurance) এর মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এছাড়া সুফল বাংলা স্টলে কমদামে খাদ্য দ্রব্য ও অন্যান্য জিনিস পাওয়া যাবে।

click here red button

উপসংহার: কৃষকদের পাশে রাজ্য সরকার

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of west Bengal) এই উদ্যোগ উত্তরবঙ্গের কৃষকদের জন্য একটি বড় সহায়ক পদক্ষেপ। বিশেষ শিবির, সুফল বাংলা স্টল, এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে সরকার কৃষক ও সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) সরাসরি তত্ত্বাবধানে এই কাজগুলি দ্রুত এগিয়ে চলেছে। কৃষকদের আর্থিক ও জীবিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই উদ্যোগগুলি সফল হলে কৃষকদের জীবনে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। উত্তরবঙ্গের কৃষক সমাজ এখন সরকারের এই সহায়তার উপর ভরসা রাখছে।

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!