Government Employees: পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ডিএ মামলার রায়দান কবে? ১ জানুয়ারি থেকে সপ্তম বেতন কমিশন গঠিত হচ্ছে?

বহু অপেক্ষার পর অবশেষে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী কর্মী (Government Employees) এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (Government of West Bengal) বকেয়া ডিএ মামলা (Dearness Allowance) এর শুনানি শেষ হয়েছে। এবার রায় দানের পালা। আর এতো সময় এবং অর্থ ব্যয়ের পর, বকেয়া মহার্ঘ ভাতা নিয়ে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India) কি রায় দেয়, সেই দিকে তাকিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী কর্মচারী থেকে শুরু করে অন্যান্য রাজ্যের কর্মীরাও। কারণ শীর্ষ আদালত AICPI হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দিলে, সেটি অন্যান্য রাজ্য কে ও মানতে হবে। এদিকে আগামী ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে কেন্দ্রের ৮ম বেতন কমিশন চালু হচ্ছে। রাজ্যে ও কি ৭ম বেতন কমিশন চালু হবে? এই জোড়া আপডেট এই প্রতিবেদনে আলোচনা করা হলো।

DA Case Update for WB Government Employees

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী কর্মীরা (WB Government Employees) বর্তমানে ১৮% ডিএ পায়। এবং কেন্দ্র সরকারী কর্মীরা ৫৮% হারে ডিএ পাচ্ছেন। তাদের আবার ১ জানুয়ারি থেকে আবার মহার্ঘ ভাতা ঘোষণার কথা জানা যাচ্ছে। বর্তমানে কেন্দ্র ও রাজ্যের বেতন কাঠামোয় পার্থক্য হলো, একটি পে কমিশন ও ৪০% ডিএ। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ সরকারী কর্মীরা পে কমিশনে একটি জেনারেশন তো পিছিয়ে আছেন ই, তার সাথে ৪০% ডিএ তে ও পিছিয়ে। আর এটাই ডিএ মামলার মূল কারণ। তবে ২০১৬ সাল থেকে দীর্ঘ শুনানি, রায়দান, আবার শুনানি শেষ হয়েছে। এবার রায়দানের পালা।

ডিএ মামলার রায়দান কবে?

ডিএ মামলার শেষ শুনানির দিন আদালত ঘোষণা করেন যে, এই মামলার শুনানি শেষ। এবার উভয় পক্ষ তাদের সমাপনী বক্তব্য লিখিত আকারে ২ সপ্তাহের মধ্যে পেশ করবে। আর ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার লিখিত নথি জমা দিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, বিজেপি শাসিত ১২টি রাজ্যই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেয় না। এবং দেশের প্রায় অর্ধেক রাজ্যই AICPI হারে ডিএ দেয় না। এবং কেন্দ্র বা রাজ্যের কোনও সার্ভিস রুলে লেখা নেই যে, কেন্দ্রের নিয়মে বা AICPI হারে, সমস্ত রাজ্যকে ডিএ দিতে হবে। আর সাংবিধানিক অধিকার, প্রতিটি রাজ্যকে তার কর্মীদের বেতন দেবার ঠিক করার অধিকার দিয়েছে। তাই কোনও রাজ্য তার কর্মীদের কোন হারে ডিএ দেবে, সেটা রাজ্যের ঠিক করার অধিকার।

রাজ্যের এই বক্তব্য সঠিক এবং আদালতের মনপুত হলে, এর উত্তর দেওয়া কর্মীদের পক্ষেও সহজ হবে না। যদিও ইউনিটি ফোরাম এর দেবপ্রসাদ হালদার, রাজ্য সরকারের (Government of West Bengal) এর এই দাবি নস্যাৎ করে জানিয়েছেন, “রাজ্য যে ১২টি রাজ্যের নাম করেছে, তার মধ্যে অন্তত ৮টি রাজ্যই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেয়। রাজ্যের দেওয়া তথ্য, ভুল প্রমাণিত  হবে।” রাজ্যের নথি পেশ করা হয়েছে। এবার সরকারী কর্মী সংগঠন তাদের সমাপনী বক্তব্য পেশের পর সুপ্রিম কোর্ট ডিএ মামলার রায় ঘোষণা করবে। সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে পুজোর ছুটির পর রায়দান হতে পারে।

ডিএ মামলার রায়দানের সম্ভাব্য সময়

পুজোর ছুটির আগেই সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) মহামান্য বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি প্রশান্ত কুমার মিশ্রের বিশেষ বেঞ্চে শেষ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মামলার শুনানি (DA Case Hearing). আর বর্তমানে এই মামলার স্ট্যাটাস “Heard and Reserved”, অর্থাৎ মামলার শুনানি সমাপ্ত, এখন রায়দানের পালা বা স্থগিত। তবে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে দীর্ঘকালীন পূজা অবকাশ চলছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর পর্যন্ত আদালত বন্ধ ছিল।

আবার কালি পুজোর জন্য জন্য ২০ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত আদালত বন্ধ থাকছে। যার জেরে এই সময়ের মধ্যে মামলার রায়দান নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এদিকে ২২ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত আবার বড় দিন ও নিউ ইয়ারের জন্য আদালত বন্ধ থাকবে। তাই নভেম্বরে এই মামলার রায়দান না হলে, ২০২৫ এর মধ্যে এই মামলার রায় বেরোনো চাপ রয়েছে। তাই এই প্রসঙ্গে মামলাকারী আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, কালীপুজোর আগে সেই মামলার রায়দান হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। ২০২৫ এর মধ্যেই রায়দান হলে সন্তুষ্ট থাকব”।

আরও পড়ুন, Jio গ্রাহকদের সিম চালু থাকলেই বিরাট সুখবর। একাউন্টে ঢুকবে ৫০০০০ টাকা।

পশ্চিমবঙ্গে নতুন বেতন কমিশন

পশ্চিমবঙ্গে ৫ম বেতন কমিশন ২০০৯ সালে হয়েছিলো। ২০১৬ সালে ৬ষ্ঠ বেতন কমিশন গঠেনের ৩ বছর পর ২০১৯ সালে তা প্রকাশ পায়। কার্যকর হয় ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে। এদিকে কেন্দ্র সরকার ২০০৬ সালে ষষ্ঠ বেতন কমিশনে গঠন করে রিপোর্ট ২০০৮ সালে জমা করে। সপ্তম বেতম কমিশন ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গঠিত হয়ে ২০১৫ সালের নভেম্বরে কমিশন রিপোর্ট জমা দেয়। চালু হয় ২০১৬ সালের জুন মাসে। এদিকে ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে ৮ম বেতন কমিশন বসছে। কর্মীদের ধারণা, ২০২৮ সাল থেকে ৮ম বেতন কমিশন লাঘু হবে।

এই হিসাবে এবং পশ্চিমবঙ্গের গত ২ পে কমিশনের পরিসংখ্যান হিসাবে ধরলে ২০২৬ সালে ৭ম পে কমিশন বসতে পারে। তবে ২০২৮ বা ২০২৯ সালের আগে চালু হবার সম্ভাবনা কম। যদিও ১ জানুয়ারি থেকে কেন্দ্রের পে কমিশন বসলে, স্বভাবত প্রশ্ন উঠবেই, যে বাংলায় পে কমিশন কি ১ জানুয়ারি থেকে বসবে? এদিকে মামলার গেরোয় পে কমিশন বসলেও স্লথ গতি হয়ে যেতে পারে। কর্মীদের আশংকা ৫ম বেতন কমিশনের মামলা না মিটলে নতুন বেতন কমিশনের অনুমোদন না ও মিলতে পারে।

আরও পড়ুন, প্রকাশিত হলো সমস্ত ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার। বিভিন্ন ব্যাংকের সমস্ত স্কিমের সুদের হার জেনে নিন

উপসংহার

পশ্চিমবঙ্গের একদিকে ডিএ মামলার রায় দান, এবং পে কমিশন, দুটি ঘোষণাই সরকারী কর্মীদের জন্য জোড়া সুখবর বয়ে আনতে পারে। তবে মামলার গেরো এবং রাজ্য সরকারের ঘোষণা করার ইচ্ছে, এই দুটি কারণ ও সমস্ত কিছুকে প্রভাবিত করবে।

 

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!