এবার থেকে স্মার্টফোন বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করার জন্য বয়সসীমা বেঁধে দেওয়া হল। ১৮ বছরের নিচে কেউ আর মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। ফলে এই নির্দেশ নিয়ে দেশজুড়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কি নির্দেশ এলো জেনে নিন। এবং সারা দেশে এই নিয়ম হলে কতটা প্রভাব পড়বে, কি বলছেন বিশেষজ্ঞেরা?
মোবাইল ফোনের ব্যাবহার
বর্তমান সময়ে প্রায় সকলেই টেকস্যাভি হয়ে উঠছেন। মোবাইল ফোন এখন আর শুধু ফোনের মাধ্যমে কথা বলার জন্য নয়। বহু প্রয়োজনীয় কাজ একটি স্মার্টফোনের মাধ্যমে ঘরে বসেই করে নেওয়া সম্ভব। আর অল্পবয়সিরা এখন খেলার মাঠ ভুলে ভার্চুয়াল দুনিয়ার ব্যাটেল ফিল্ডে গেমিং এক্সপার্ট হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, স্মার্টফোনের দাম থেকে শুরু করে অনলাইনে কেনাকাটা থেকে শুরু করে জরুরী ওষুধ পত্রের অর্ডার দেওয়া সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ হাতের মুঠোফোনেই করে নেওয়া যাচ্ছে।
বিগত দুই বছরে মহামারীর কারণে সারা দেশ জুড়ে যখন লকডাউন চলছিল, তখন পড়ুয়াদের এই স্মার্টফোনের মাধ্যমেই অনলাইনে পড়াশোনা চালাতে হচ্ছিল। আর পড়ুয়ারা সেই তখন থেকেই স্মার্টফোনের প্রতি আরো বেশি পরিমাণে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। সম্প্রতি স্কুলের পঠন-পাঠন অফলাইনে শুরু হলেও প্রাইভেট টিউশন থেকে শুরু করে পড়াশোনার যাবতীয় কাজ এখন অনলাইনেই করা হচ্ছে। আর তাই স্মার্টফোন এই মুহূর্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ জরুরি ইলেকট্রনিক ডিভাইস।
আর পড়ুয়াদের হাতে মুঠোফোন উঠতেই শুরু হয়ে গেল এক অন্য সমস্যা।
তার কারণ অনলাইনে পড়াশোনা করার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীরা মজার ভিডিও থেকে শুরু করে বন্ধুদের সাথে চ্যাটিং গ্রুপ তৈরি করা, অনলাইন গেমস এর প্রতি আগ্রহী হওয়া, এমনকি অ্যাডাল্ট গেমিং সাইটেও বহু পড়ুয়া নিয়মিত সময় কাটাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ধরনের ওয়েব সিরিজ এর নিয়মিত দর্শক হয়ে উঠছে তারা। যা পরবর্তীতে অপরাধ প্রবনতাকে বাড়িয়ে তুলছে।
স্মার্টফোন নিয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত
আর এই কারণেই স্মার্টফোন আসক্তি বেড়ে উঠছে পড়ুয়াদের। তাই এবার মহারাষ্ট্রে এই অভিনব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অল্প বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করতে এবং স্মার্টফোনের আসক্তি কমানোর জন্য ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের মোবাইল ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের তরফে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যা ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। সর্বভারতীয় এক রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, মহারাষ্ট্রের পশ্চিম অংশের এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কিশোর কিশোরীরা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে উঠছে।
কি নির্দেশ এলো?
তাই সেই মোবাইল আসক্তি কমাতে গ্রামের ১৮ বছরের কম বয়সী কিশোর কিশোরীরা কোনোভাবেই স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। এই বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রামের বাসিন্দারা একাধিকবার অভিযোগ করে জানান, কিশোর কিশোরীরা ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল ফোনেই ব্যস্ত থাকে। তাই তাদের পড়াশুনা প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। ভিডিও, গান থেকে শুরু করে সিনেমা দেখা, ভিডিও গেমস খেলা, সমস্ত কিছুর মধ্যেই তারা বেশি সময় কাটাচ্ছে। এই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জনপ্রিয় এয়ারটেল নিয়ে এল গ্রাহকদের জন্য 4 টি নতুন রিচার্জ! কি সুবিধা পাবেন?
প্রশাসনের জানানো হয়েছে, পড়ুয়াদের ভার্চুয়াল দুনিয়ার নেশা কাটিয়ে মানুষ সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে, ব্যটেল ফিল্ড ছেড়ে যাতে তারা খেলার মাঠে ফিরতে পারে, তার জন্যই এই ব্যবস্থা। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মোবাইলের নেশায় কিশোর কিশোরীরা সারাদিন ডুবে রয়েছে। কোনোভাবেই বাবা-মায়ের কথা শুনছে না। এমনকি অ্যাডাল্ট গেমিং সাইট থেকে শুরু করে নিষিদ্ধ সমস্ত সাইটে তাদের অবাধ বিস্তার রয়েছে।
সারা দেশে কি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত?
এই সমস্ত বন্ধ করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এর পাশাপাশি অভিভাবকদের তরফেও জানানো হয়েছে, কিশোর কিশোরীরা যাতে এই নিয়ম মেনে চলে অভিভাবকেরাও যেন তাদের দিকে নজর রাখেন। ১৮ বছরের কম বয়সীদের মোবাইল ব্যবহার ও স্মার্টফোনের বৈশিষ্ট্য করা চলবে না। সমস্ত বাসিন্দাদের অনুমোদন নিয়েই এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করা হয়েছে। ফলে এই মুহূর্তে এই সিদ্ধান্তের জন্য দেশের মানুষের মধ্যে আলোচনার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনার কি মনে হয়, এই সিদ্ধান্ত কি সারা দেশে নেওয়া উচিত? নিচে কমেন্ট করবেন।
Written by Rajib Ghosh.