স্কুল খোলার পর বিতর্ক যেন ছাড়ছেই না (WB School Reopen)। ক্লাস চালু হওয়ার পর দীর্ঘ সময় ধরে ক্লাসে আসা নিয়ে বিতর্ক তৈরী হয় একাংশ থেকে। সেই কথা চিন্তা করে রাজ্য স্কুল শিক্ষাদপ্তর একদিন পর একদিন ক্লাস চালু করে। এরপর আবার গুঞ্জন ওঠে সিলেবাস শেষ হবে না। আর এবার গুঞ্জন উঠছে একদিন পর একদিন ক্লাস হলে উপস্থিতি কমছে। মোটকথা যাই সিদ্ধান্ত হোক বিতর্ক থাকছেই। আর এবার আবার আগের মতো প্রতিদিন ক্লাস চালু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হলো। খোদ শিক্ষক দের পক্ষ থেকেই প্রতিদিন ক্লাস চালু হওয়ার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সুত্রে জানা গেছে, বিধি মেনে পঠনপাঠন চালাতে সুবিধা হবে ভেবেই নবম থেকে দ্বাদশ, এই চার শ্রেণির ক্লাসের দিন ভাগাভাগি করে দেওয়া হয়েছে (WB School Reopen)। কিন্তু তাতে সুবিধার তুলনায় অসুবিধা কিছু কম হচ্ছে না বলে শিক্ষক শিবিরের অভিমত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দু একটি ক্লাস নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে শিক্ষকদের। এই অবস্থায় শিক্ষক শিবিরের একাংশ চাইছেন, দিন বিভাজন তুলে দিয়ে পুরনো নিয়ম ফিরিয়ে আনা হোক। চার শ্রেণির সব পড়ুয়া রোজই স্কুলে আসুক। এখন ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির হার যা, তাতে একই দিনে ওই চার শ্রেণির পড়ুয়ারা এলেও করোনা বিধি মেনে ক্লাস করতে কোনও অসুবিধা হবে না।
১৬ নভেম্বর স্কুল খোলার পরে প্রথমে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সকলে রোজ স্কুল চালু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই স্কুল শুরুর সময় পরিবর্তন করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানায়, সোম, বুধ ও শুক্রবার স্কুলে আসবে দশম ও দ্বাদশের পড়ুয়ারা। মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার ক্লাস নবম ও একাদশ শ্রেণির। WB School Reopen
শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দিন ভাগ করে দেওয়ার পরে গরহাজিরার ছবি বিশেষ বদলায়নি। সব থেকে কম ছাত্রছাত্রী আসছে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। তার একটা কারণ হতে পারে এই যে, নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা কিছু দিনের মধ্যেই দশম শ্রেণিতে উঠে যাবে। তাই তাদের অনেকেই এখন আর স্কুলে আসতে চাইছে না। একাদশের যে-সব পড়ুয়ার ল্যাবরেটরি-নির্ভর বিষয় আছে, তারাই স্কুলে আসছে কিছু বেশি সংখ্যায়। WB School Reopen
পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্র জানান, তাঁদের স্কুলে ওই দু’দিন পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশেরও কম। রোজ সব ক্লাস হলে পাঠ্যক্রমটাও দ্রুত শেষ হত। তিনি বলেন, মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের জন্য নবম শ্রেণির কিছু পড়ুয়া স্কুলে আসছে। এই নথিভুক্তি হয়ে গেলে হাজিরা আরও কমবে
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, রোজ হাজিরা দিতে না-হলে অনেক সময় স্কুলে যাওয়ার ব্যাপারে অনীহা তৈরি হয়। এখন কোনও পড়ুয়া এক দিন স্কুল কামাই করলেই তার হাজিরার ব্যবধান অনেকটা বেড়ে যাচ্ছে। এতে পড়া বুঝতে অসুবিধা হয়। সমস্যা হচ্ছে শিক্ষক শিক্ষিকাদেরও।
শিক্ষকদের অন্য একটি অংশের প্রশ্ন, নবম থেকে দ্বাদশের সব পড়ুয়া রোজ স্কুলে এলে করোনা বিধি মেনে ক্লাস করতে অসুবিধা হবে না তো? যেসব স্কুলে একটি বিষয়ে শিক্ষক মাত্র এক জনই, সেখানে কী হবে?
আরও পড়ুন, শিক্ষিকাদের স্কুলে শুধুমাত্র শাড়ী পরে আসার নির্দেশ
তবে প্রধান শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, বেশির ভাগ স্কুলেই পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার এখন কম। তাই পড়ুয়ারা আপাতত রোজই আসুক। পরে পরিস্থিতি পাল্টালে না হয় নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। এবার তাহলে কি আবার চালু হবে প্রতিদিন ক্লাস, আপডেট আসছে। সংবাদসুত্র এবিপি গ্রুপ