Dearness Allowance: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মামলায় জয়ের ৩টি x factor. চূড়ান্ত রায় ঘোষণা কবে?

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ তথা Dearness Allowance নিয়ে দীর্ঘ এক মহাকাব্যের অবসান ঘটলো। সেই ২০১৬ সাল থেকে মহার্ঘ ভাতা বঞ্চনার অভিযোগে শুরু হয় ডিএ মামলা। তারপর কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) থেকে স্যাট (SAT) সমস্ত জায়গায় জয় পেলেও মেলেনি কেন্দ্রীয় হারে ডিএ। মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court). আর তার ২ বছর অপেক্ষার পর হটাত যেন T-20 এর মত দ্রুত শুনানি শুরু হয়। পুরো মামলায় হটাত পরিবর্তন! কি সেই x factor, যার কারণে ডিএ মামলা হটাত গতি পায়, এবং এই মামলার সম্ভাব্য রায় কোন দিকে যেতে পারে, সেই বিষয়ে আলোচনা করা হলো।

West Bengal Dearness Allowance Case

আইনি বিষয় নিয়ে অনেকেরই মতের অমিল থাকতে পারে, আর একটি বিষয়ের অনেক দৃষ্টিকোণ থাকতে পারে, তাই আপনার মতামত ও কমেন্টে জানাতে পারেন। তবে এই মামলায় রাজ্য সরকার ও মামলাকারী সরকারি কর্মীদের মূলত দুটি অভিযোগ ও যুক্তি ছিলো। কর্মীদের যুক্তি বা অভিযোগ ছিলো,

  • অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের কর্মীরা ডিএ কম পান, রাজ্য সরকার AICPI মেনে ডিএ দিচ্ছে না
  • পশ্চিমবঙ্গের যেসমস্ত কর্মী বাইরে কাজ করেন তারা AICPI হারেই DA পায়, এটা দ্বিচারিতা

অন্যদিকে, বকেয়া ডিএ না দেওয়া, বা এই মামলার বিপক্ষে পাল্টা যুক্তি হিসাবে রাজ্য সরকারের (Government of West Bengal) ও মূলত ২টি যুক্তি রয়েছে।

  • কেন্দ্রীয় হারে DA দিতে বাধ্য নয় রাজ্য, কোথাও বলা ও নেই, দেশের বেশিরভাগ রাজ্য AICPI মেনে DA দেয় না
  • রাজ্য সরকার কর্মীদের প্রতি সহানুভূতিশীল, তবে রাজ্যের এর বেশি DA দেওয়ার আর্থিক সামর্থ্য নেই।

এই অভিযোগ, যুক্তি ও পাল্টা যুক্তিতে সময় কেটে যায় ৯ বছর, যেটি রাজ্যের প্রধান কৌশল বলে মনে করেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। তবে মামলা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পর প্রথম দিকে তারিখ পে তারিখ নিয়ম মেনে চললেও, হটাত করেই মামলা গতি পায়, এবং দ্রুত মামলার শুনানি শেষ হয়। হটাত কেন এই পরিবর্তন, এই নিয়ে কর্মীদের কৌতূহলের অন্ত নেই।

ডিএ মামলার X factor

চলতি বছরেই মহামান্য বিচারপতি পরিবর্তন হয়। আর তার সাথে রাজ্য সরকারের পক্ষে মামলায় যুক্ত হন বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিব্বল ও আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। অন্যদিকে সরকারি কর্মীদের পক্ষেও বিকাশ বাবুর সঙ্গে যোগ দেন প্রাক্তন সলিসিটর গোপাল সুব্রহ্মণ্যম। যার ফলে এই মামলাটি হেভিওয়েট থেকে হাইপ্রায়োরিটি হয়ে যায়, এবং ডিএ মামলাটি পার্ট হার্ড হিসাবে চিহ্নিত হয়। মহার্ঘ ভাতা মামলায় যুক্ত হয় পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম অরাজনৈতিক সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ।

রাজ্য সরকারের সময় নষ্টের কৌশল ও অন্যান্য রাজ্য কে পার্টি করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন মহামান্য বিচারপতিগন। আর এই মামলার শুনানি শেষ করে আর কারো কিছু বলার থাকলে ৩ সপ্তাহের মধ্যে লিখিত নথি জমা দিতে বলেন। সহজ কথায়, অনেক টাইম দেওয়া হয়েছে, এবার রায় দানের পালা!

আরও পড়ুন, ডিএ না পেলেও, ১ লাখ টাকা পাবেন, নিশ্চিত। দেখুন কিভাবে?

ফলাফলঃ কার দিকে পাল্লা ভারি?

কর্মীদের হিসাব মতো এই মামলায় প্রায় ৪২০০০ কোটি টাকা বকেয়া বলে দাবি। যা সত্যিকারে দিতে হলে রাজ্য সরকারের পক্ষে তা দুষ্কর। অন্যদিকে প্রতিমাসে হাজার হাজার টাকা বঞ্চিত হচ্ছেন রাজ্যের কর্মীরা, যা সম কাজে সম বেতনের নীতিকে উলঙ্ঘন করে। আর সমাপনী বক্তব্য বা দুই পক্ষের Conclusion Note এ কোন পক্ষ কিভাবে তাদের শেষ যুক্তি উপস্থাপন করবে, সেটাও এই মামলার রায়ে যথেষ্ট প্রভাব পড়বে।

তবে এই রায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের পক্ষে যাবে বলে আশাবাদী সরকারি কর্মী থেকে আইনজীবীরা। দেশের শীর্ষ আদালত উভয় পক্ষের কথা ভেবেই আইনি সিদ্ধান্ত জানাবে, এটাই সকলের আশা। তবে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ (Dearness Allowance) দেওয়ার নির্দেশ দিলে কর্মীদের প্রচুর টাকার বঞ্চনা মিটবে বলে মনে করছেন সরকারি কর্মীরা।

আরও পড়ুন, জীবন বিমায় GST মকুবের পর ভারতের সেরা ৫টি LIC Policy কি কি? দেখুন তালিকা

ডিএ মামলার রায় ঘোষণা কবে?

এবার প্রশ্ন হচ্ছে, এই ডিএ মামলার রায় ঘোষণা (DA Case Judgement) কবে হবে। সমাপনী বক্তব্য জানানোর জন্য সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু ৩ সপ্তাহের সময় দিয়েছেন উভয় পক্ষকে। তাই আপাতত ৩ সপ্তাহের আগে কিছু হচ্ছে না। আর তারপরই পুজোর ছুটি পড়ে যাচ্ছে। আদালত খুলবে সেই ৮ অক্টোবর। ফলে অক্টোবরের মাঝা মাঝি এই মামলার রায়দান হতে পারে। তবে উপয় পক্ষের যুক্তি প্রদানের পর, আদালত এবার কতটা সময় নেয়, সেটাই এবার দেখার।

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!