সরকারি কর্মী তথা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের (Government Employees) জন্য খারাপ খবর। এবার থেকে কর্মক্ষেত্রে আরও কড়া নিয়ম চাপতে চলেছে। বহুদিনের অভিযোগ, অনেক কর্মীরাই কাজে আসেন “আসি যাই, মাইনে পাই” এই মনোভাব নিয়ে। যার কারণে কাজের ওপর মনোযোগ থাকে না তাদের। সকাল ১১ টার আগে কোনও দপ্তর খোলেনা, দুপুরে ঘন্টার পর ঘন্টা নাকি টিফিন চলে। যদিও সমস্ত যায়গায় এই অলিখিত নিয়ম চলে কিনা, সেই ব্যাপারে কোনও তথ্য নেই, তবে এবার সরকারি কর্মীদের অফিসে ঢোকা, কাজ করা ও প্রস্থান করা নিয়ে কড়া নিয়ম জারি করলো।
সরকারি কর্মীদের লেট হলেই CL হবে
তবে এবার থেকে নতুন নিয়ম জারি করে প্রত্যেক কর্মীকে আরও তদারকির মধ্যে রাখবে কেন্দ্র। যাতে তাদের কাজের চাপ আরো বাড়বে। তবে যারা এই নিয়ম মানবেন না তাদের শাস্তিও দেবে সরকার। তখন তাদের সমস্ত ছুটি (Leave Rules) কেড়ে নেওয়া হবে। বছরে ৩৬৫ দিনই করতে হবে কাজ। এবিষয়ে নির্দেশিকা জারি করে স্পষ্টভাবে অবগত করা হয়েছে।
কী কী নতুন নিয়ম?
১. মোবাইল ফেস অথেনটিকেশনঃ
হাজিরার জন্য এখন থেকে সরকারি কর্মীদের মোবাইল ফোন-ভিত্তিক ফেস অথেনটিকেশন সিস্টেম ব্যবহার করতে হবে। এই ব্যবস্থায় কর্মীর অবস্থান এবং হাজিরার সময় জিও-ট্যাগিং সহ রেকর্ড করা হবে।
২. বিলম্বের জন্য শাস্তিঃ
সকাল ৯ টায় অফিসের নির্ধারিত সময় শুরু হলেও, ১৫ মিনিট ছাড় দেওয়া হবে। অর্থাৎ ৯টা ১৬ মিনিটের পরে অফিসে প্রবেশকারীদের লেট অথবা ‘অনুপস্থিত’ ধরা হবে। ২ টি লেট এর জন্য একটি পূর্ণদিবস ছুটি কাউন্ট হবে। অর্থাৎ এবার আর ইচ্ছে মতো অফিসে ঢোকা চলবে না।
৩. নিয়মিত পর্যালোচনাঃ
কর্মীদের হাজিরার তথ্য নিয়মিত হাজিরা পোর্টাল থেকে পর্যালোচনা করা হবে। মাসে দু’বারের বেশি দেরি করলে নিয়মিতভাবে আধা দিনের ক্যাজুয়াল লিভ কেটে নেওয়া হবে।
৪. বৈধ কারণঃ
যদি কোন কর্মী বৈধ কারণে দেরিতে অফিসে আসেন, তাহলে এক ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বকে ছাড় দেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন, ৫০০০ টাকা প্রতিমাসে বেতন বাড়ছে, বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন।
৫. আধার-ভিত্তিক হাজিরাঃ
আধার সংযুক্ত বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স সিস্টেমে হাজিরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে রেজিস্টারের হাজিরার সাথে কর্মীদের উপস্থিতির কোনও গরমিল থাকবে না।
৬. কড়া তদারকিঃ
সকল মন্ত্রক এবং দফতরের প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তাদের কর্মীরা যেন এই নতুন নিয়মগুলি মেনে চলেন। সেইসাথে দেরিতে আসা কর্মীদের চিহ্নিত করার জন্য এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নিয়মিত হাজিরার রিপোর্ট ডাউনলোড করার জন্য তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
না মানলে হবে এই শাস্তি
সরকার জানিয়েছে, এরপর থেকে যদি কোনো কর্মী এই সব নিয়মের অন্যথা করেন, তবে তাদের অর্ধেক দিনের ক্যাজুয়াল লিভ কেটে নেওয়া হবে। মাসে দু’বার দেরি করে আসার পরে ফের যদি দেরি হয়, তাহলে তখন থেকে এই সিএল কাটা শুরু হবে। এছাড়াও নিয়োগ, ডেপুটেশন, প্রশিক্ষণ, বদলি বা পদোন্নতির জন্য এবার থেকে এই সব বিষয় বিবেচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তাই রিপোর্ট খারাপ থাকলে এই সব সুযোগ সুবিধা পেতেও সমস্যায় পড়বেন কর্মচারীরা।
কেন এই পদক্ষেপ?
কেন্দ্রীয় সরকার মনে করে যে, দেরিতে অফিসে আসা এবং অফিসের নির্ধারিত সময়ের আগেই চলে যাওয়ার ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। নতুন নিয়মগুলি বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর্মীদের শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং দক্ষতার সাথে কাজ সম্পন্ন করা নিশ্চিত করার লক্ষ্য সরকারের। তবে এর মাধ্যমে কর্মীদের প্রতিক্রিয়া কেমন হয়, তারা কি আদৌ মেনে নেন এই কড়া নিয়ম, নাকি ঝামেলা শুরু করেন সেটাই দেখার পালা।।
Written by Nabadip Saha.