পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের টেট পাশ বাধ্যতামূলক তথা Compulsory TET for teachers নিয়ে সাম্প্রতিক সুপ্রিম কোর্টের রায় (Supreme Court of India) দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে এক বড় আলোড়ন তৈরি করেছে। এই রায়ের ফলে অনেক শিক্ষকের চাকরির ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে, যা পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে। সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত TET যোগ্যতা থেকে ছাড় দিয়েছিল, কিন্তু সেই সুবিধার সঠিক ব্যবহার না হওয়ায় আজ এই পরিস্থিতি। এই প্রতিবেদনে আমরা শিক্ষক TET যোগ্যতা সংকটের পটভূমি, কারণ এবং সম্ভাব্য সমাধান এবং কাদের টেট পরীক্ষা দিতে হবে, কাদের দিতে হবে না, এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
Compulsory TET for Teachers
শিক্ষকদের টেট ও প্রশিক্ষণ নিয়ে RTE এর নির্দেশিকা ভুলে গেলে চলবে না। যে বার বার RTE আইন এবং NCTE নিয়মাবলী নিয়ে প্রত্যেক রাজ্যকে নোটিশ (Compulsory TET) দেওয়া হয়েছে। এবং রাজ্য সরকার সেই নিয়ম মেনে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও করিয়েছে। তবে ২০ বছর চাকরির পর যে যোগ্যতার জন্য পরীক্ষা দিতে হবে (TET Mandotory), এটা অকল্পনীয়।
শিক্ষক TET যোগ্যতার পটভূমি
২০১০ সালে শিক্ষার অধিকার আইন (RTE 2009) চালু হওয়ার পর NCTE শিক্ষকদের ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করে, যার মধ্যে TET পাস করা ছিল অন্যতম শর্ত। এই নিয়মের লক্ষ্য ছিল শিক্ষার মান উন্নয়ন, কিন্তু অনেক রাজ্যে অবকাঠামোর অভাবে তা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকার তাই রাজ্যগুলিকে কিছু সময়ের জন্য ছাড় প্রদান করে, যাতে তারা প্রস্তুতি নিতে পারে। পশ্চিমবঙ্গও এই ছাড়ের সুবিধা নেয়, কিন্তু সময়মতো ব্যবস্থা না নেওয়ায় সমস্যা বেড়েছে। RTE আইন অনুসারে শিক্ষক TET যোগ্যতা নিশ্চিত করা (Compulsory TET) ছিল জরুরি, যা ছাত্রদের শিক্ষা অধিকার রক্ষা করে। এই পটভূমিতে সুপ্রিম কোর্ট TET রায় একটি টার্নিং পয়েন্ট হয়ে উঠেছে, যা পুরো ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড় এবং তার শর্তসমূহ
পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রের কাছে TET ছাড়ের আবেদন করে, যা প্রথমে ২০১৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে রাজ্যের অনুরোধে এই সময়সীমা ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়, যাতে তারা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারে। এই ছাড়ের সাথে কয়েকটি কড়া শর্ত যুক্ত ছিল, যেমন রাজ্যে TET পরীক্ষা আয়োজন করা। নিয়োগ নিয়মাবলী পরিবর্তন করে TET কে বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং সংবাদপত্রে তা প্রচার করতে হবে। ছাড়ের সময়কালে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের NCTE নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এই শর্তগুলি পালন না করায় পশ্চিমবঙ্গ TET সংকট আরও জটিল হয়ে উঠেছে, যা শিক্ষক নিয়োগ অনিয়মের দিকে ইঙ্গিত করে।
আরও পড়ুন, কাদের পরীক্ষায় বস্তে হবে দেখুন।
সংকটের মূল কারণসমূহ
TET Mandatory নিয়ে কেন্দ্রের ছাড় থেকে স্পষ্ট যে ২০১৬ সালের পর নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের টেট পাশ বাধ্যতামূলক বা অপরিহার্য ছিল। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে যে এই সময়সীমা অতিক্রম করেও TET ছাড়া অনেককে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের অনিয়ম শিক্ষক TET যোগ্যতা সংকটের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় এই অনিয়মগুলিকে উন্মোচিত করেছে, যার ফলে অনেক শিক্ষকের চাকরি ঝুঁকির মুখে। RTE আইন NCTE নিয়ম লঙ্ঘন হওয়ায় শিক্ষা ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এই সংকট থেকে বোঝা যায় যে রাজ্য সরকারের তরফে সঠিক পরিকল্পনার অভাব ছিল, যা আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
আরও পড়ুন, এবার রান্নার গ্যাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর যুগান্তকারী পদক্ষেপ। উজ্জ্বলা যোজনায় ৩০ বছরের দাবি পূরণ
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ এবং রিভিউ পিটিশন
সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষকদের টেট পাশ বাধ্যতামূলক (Compulsory TET) করে, যা অনেক শিক্ষকের চাকরিকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হয়েছে, যাতে নতুন যুক্তি উপস্থাপনের চেষ্টা চলছে। আইনজীবীরা এই পিটিশনে শিক্ষকদের পক্ষে শক্তিশালী দাবি তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। পশ্চিমবঙ্গ TET সংকট এখন কোর্টের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে, যা শিক্ষা ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে। RTE আইনের আলোকে এই রায় শিক্ষক যোগ্যতা TET কে আরও কড়াকড়ি করে তুলেছে। এখন দেখার যে রিভিউ পিটিশনগুলি কতটা সফল হয়, যা সংকটের সমাধানের চাবিকাঠি হতে পারে।
আরও পড়ুন, দেশজুড়ে কমতে চলেছে সোনার দাম? সাধারণ মানুষের স্বার্থে মোদী সরকারের জরুরী সিদ্ধান্ত
ভবিষ্যতের সম্ভাবনা এবং সমাধানের পথ
এই শিক্ষক TET যোগ্যতা সংকট পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এক বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। শিক্ষকদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পাশাপাশি ছাত্রদের পড়াশোনাও প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাজ্য সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে TET পরীক্ষা আয়োজন এবং নিয়োগ নিয়ম সংশোধন করতে হবে। NCTE নিয়মাবলী পালন করে শিক্ষক নিয়োগ অনিয়ম রোধ করা জরুরি। সুপ্রিম কোর্ট TET রায়ের পর রিভিউ পিটিশনের ফলাফল (Supreme Court) দেখে নতুন কৌশল গ্রহণ করা যেতে পারে। শিক্ষা দপ্তরের সক্রিয়তা এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ দেখাতে পারে, যা শিক্ষার মান উন্নয়নে সাহায্য করবে।