কেন্দ্র সরকারের আয়ুষ্মান ভারত আর পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য সাথী কার্ড, দুটিতেই বিনামুল্যে সরকারি স্বাস্থ্য বীমা মেলে। তবে Ayushman Bharat vs Swasthya Sathi অর্থাৎ কোন প্রকল্পের কি সুবিধা, কোনটি কিভাবে করতে হয়, সেই নিয়েই এই প্রতিবেদন।
Ayushman Bharat vs Swasthya Sathi Card
বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার আগেই চালু করেছে আয়ুষ্মান ভারত যোজনা। তবে সম্প্রতি এতে ৭০ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদেরও সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সভা, যা আগে নিয়ম ছিল না। এতে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ আরও প্রশস্ত হয়েছে। যাই হোক, আবার এদিকে যারা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা তাদের জন্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা দেওয়ার জন্য স্বাস্থসাথী প্রকল্পও চালু রয়েছে।
তবে, এই দুটি প্রকল্পের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য তথা Ayushman Bharat vs Swasthya Sathi রয়েছে, যা সুবিধা গ্রহণকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। অনেকেই মনে করেন আয়ুষ্মান প্রকল্পে সুবিধা বেশি, এটি সহজে পাওয়া যায়, আবার পশ্চিমবঙ্গের বহু মানুষের মতে স্বাস্থ্য সাথীতে সুবিধা বেশি এবং এটি নাকি তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়। আদৌ কোনটি ঠিক? সেটাই আজকের আলোচ্য বিষয়।
আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প
মোদী সরকারের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প, যা প্রাধানমন্ত্রী জন আয়োগ্য যোজনা (Pradhan Mantri Jan Arogya Yojana) নামেও পরিচিত, ২০১৮ সালে চালু হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ৭০ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রবীণ নাগরিকরা এখন থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা পাবেন। প্রকল্পটি দেশের যে কোনও হাসপাতালে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা একে ব্যাপকভাবে সুলভ করে তোলে।
আয়ুষ্মান ভারত কার্ডের সুবিধা
- ক্যাশলেস সেবা: হাসপাতাল ভর্তি হওয়ার তিন দিন আগে ও হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার ১৫ দিন পর্যন্ত যাবতীয় মেডিক্যাল ওষুধের খরচ আয়ুষ্মান ভারত কার্ড দিয়ে কভার করা যাবে।
- জাতীয় বিস্তার: এই কার্ড দেশের যেকোনো হাসপাতালে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই, যদি আপনি অন্য রাজ্যে বা বাইরে ভ্রমণকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন, আয়ুষ্মান ভারত কার্ড দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প ও স্বাস্থ্য সাথী কার্ড
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ২০১৬ সালে চালু করা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প রাজ্যবাসীকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা প্রদান করে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য রাজ্য সরকারী হাসপাতালগুলিতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা।
আরও পড়ুন, ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম একাউন্ট খোলা যাবে না। বন্ধ হবে প্রচুর একাউন্ট
স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা
- রাজ্য ভিত্তিক কভারেজ: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালগুলিতে কার্যকর। তবে, এটি সম্পূর্ণ ক্যাশলেস সেবা প্রদান করে।
- বয়স ও পরিবারের পরিসীমা: স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বয়স বা পরিবারের সদস্য সংখ্যা নিয়ে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। প্রবীণ নাগরিকরা এবং বিশেষভাবে সক্ষম সদস্যরাও সেবা পাবেন।
আয়ুষ্মান ভারত ও স্বাস্থ্য সাথী এর মূল পার্থক্য
আয়ুষ্মান ভারত:
জাতীয় স্তরে বিস্তৃত, যেকোনো রাজ্যে ব্যবহারযোগ্য এবং দেশব্যাপী হাসপাতাল ভর্তির সুবিধা প্রদান করে।
স্বাস্থ্যসাথী:
অপরদিকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গের নির্দিষ্ট হাসপাতালগুলিতে বিনামুল্যে চিকিতসা পরিষেবা দেওয়া হয়।এবং রাজ্য সরকারের দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী পরিষেবা প্রদান করে।
তবে এই দুই প্রকল্পের মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট পার্থক্য থাকলেও, এগুলো উভয়েই প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে চালু করা হয়েছে।।
আরও পড়ুন, নিয়ম না মানায় 2 টি জনপ্রিয় ব্যাংককে শাস্তি দিলো ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। গ্রাহকের টাকার কি হবে?
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের রাজ্য ভিত্তিক প্রক্রিয়া এবং আয়ুষ্মান ভারতের জাতীয় বিস্তৃতি, উভয় প্রকল্পকেই তাদের নিজ নিজ স্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা করেছে। এবার স্থান কাল পাত্র ভেদে গ্রাহক ঠিক করবেন, তিনি কোন প্রকল্পের সুবিধা বেছে নেবেন।
Written by Nabadip Saha.