সাধারণ মধ্যবিত্তরা জমানো টাকা সাধারনত FD অথবা PPF এ বিনিয়োগ করেন। আর PPF vs FD বা ফিক্সড ডিপোজিট না কি প্রভিডেন্ট ফান্ড কোন প্রকল্পে টাকা রাখলে বেশি সুদ পাওয়া যায় বা বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়, এই নিয়ে অনেকেই হিসাব করেন। আর বিনিয়োগের আগে গ্রাহকের সামর্থ্য ও চাহিদা অনুযায়ী কোন স্কীম বেশি উপযোগী সেটা জেনে বিনিয়োগ করলে লাভ বেশি হতে পারে।
PPF vs FD interest rate calculator
বিনিয়োগ তো আমরা সকলেই করি। কেউ কম বা কেউ বেশি। কিন্তু আমাদের বিনিয়োগের লক্ষ্য থাকে একটাই, ভালো রিটার্ন পাওয়া। এব্যাপারে একাধিক স্কিম বাজারে ছেয়ে রয়েছে বিনিয়োগ করার জন্য। কিন্তু অর্থের নিরাপত্তা ও লাভ এই দুই দেখেই সবসময় যেকোনো স্কিম বিনিয়োগের জন্য বাছা উচিত। আজ আমরা এরকমই দুটি বিশেষ স্কিম নিয়ে আলোচনা করব। এই দুটি স্কিমেই বিনিয়োগের উপর যথেষ্ট লাভ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে PPF vs FD এর কোনটিতে লাভ বেশি এবং সেই সঙ্গে টাকার নিরাপত্তাও রয়েছে, সেটি জেনে নেব এখান থেকে।
PPF vs FD calculator
১. ব্যাংকের বিভিন্ন বিনিয়োগ স্কিমগুলির মধ্যে ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposit) অন্যতম। যে কেউ যেকোনো সময়ে এখানে বিনিয়োগ করতে ও টাকার লাভ ওঠাতে পারেন। স্বল্প থেকে দীর্ঘ যেকোনো মেয়াদে বিনিয়োগ করা যায়।
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড একটি সরকার সমর্থিত বিনিয়োগের স্কিম। প্রধানত অবসরের পর সুবিধা দেওয়ার জন্য এটি তৈরি করা হয়েছে। কেবল দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগই সম্ভব।
২. ফিক্সড ডিপোজিটে (Fixed Deposit) বিনিয়োগ একসঙ্গে করতে হয়। কোনো কিস্তি মারফত বারেবারে তা করা যায় না।
কিন্তু পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (Public Provident Fund) বিনিয়োগকারীকে বার্ষিক বা ১২ টি কিস্তিতে একসঙ্গে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের সুযোগ দেয়।
৩. ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার একরকম নয়। বিভিন্ন ব্যাংকে সময় সাপেক্ষে এই হার পরিবর্তন হতে থাকে। সাধারণত ৩.৫০ থেকে ৯ শতাংশ পর্যন্ত সুদ অফার করা হয় ফিক্সড ডিপোজিট এর উপর।
পিপিএফ সরকার সমর্থিত হওয়ায় সকল স্থানেই একই রকম সুদ পান বিনিয়োগকারীরা। প্রতি তিন মাস অন্তর সুদের হার নির্ধারণ করে সরকার। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে বার্ষিক সুদের হার ৭.১ শতাংশ।
৪. ফিক্সড ডিপোজিটের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে টাকা প্রত্যাহারের অনুমতি দেওয়া হয় না। তবুও যদি কোন গ্রাহক তা করেন তার থেকে জরিমানা নেয় ব্যাংক।
পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে লকইন পিরিয়ড থাকে ১৫ বছর পর্যন্ত। যার পর সম্পূর্ণ টাকা প্রত্যাহার করা যায়। তবে পাঁচ বছর পেরোলেই এখানে আংশিক অর্থ প্রত্যাহারের অনুমতি দেওয়া হয়। এজন্য কোন ফাইন দিতে হয় না।
৫. ফিক্সড ডিপোজিট এবং পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড উভয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রেই কর ছাড়ের সুবিধা মেলে। আয়কর আইনের 80TTB এর আওতায় প্রবীণ নাগরিকরা FD তে বেশি সুদ এবং ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত করছাড় পান। পিপিএফে প্রাপ্ত সুদ (PPF interest Rate) এবং রিটার্ন সকলের জন্য সম্পূর্ণ করমুক্ত (Tax Free).
৬. যেহেতু পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে সরকারের হাত থাকে তাই স্বাভাবিকভাবে এটি বেশি নিরাপদ।
তবে ফিক্সড ডিপোজিট এর ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট ব্যাংক আমানতের উপর ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনসিওরেন্স দিয়ে থাকে। যার ফলে আমানতের কোন ক্ষতি হলে ব্যাংক তখন দায় নিতে বাধ্য থাকে।
আরও পড়ুন, বেকার ছেলে মেয়েদের টাকা দিচ্ছে সরকার। PMEGP প্রকল্পে আবেদন করলেই টাকা পাবেন।
৭. ফিক্সড ডিপোজিটের ক্ষেত্রে টাকা রাখলে লাভ কম। কারণ এখানে সরল সুদের মাধ্যমে রিটার্ন দেওয়া হয় বিনিয়োগকারীদের।
অন্যদিকে পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড চক্রবৃদ্ধি সুদের হারে গ্রাহকের একাউন্টে টাকা জমা করে। যার ফলে এখানে টাকার রিটার্ন বেশি পাওয়া যায়।
PPF vs FD benefits
ফিক্সড ডিপোজিট নাকি পিপিএফ (PPF vs FD), কোনটিতে বিনিয়োগ করলে আপনার লাভ বেশি তা ভাবতে হবে আপনাকেই। আপনার কাছে যে স্কিমটি সুবিধা জনক বেশি সেখানেই বিনিয়োগ করা ভালো। তবে বিনিয়োগ যেখানেই করুন না কেন আগে খুঁটিনাটি জেনে নিয়ে তবে এগোবেন। এ বিষয়ে প্রয়োজন হলে একজন উপদেষ্টার পরামর্শ নিতে পারেন। তিনি আপনাকে মার্কেট প্রফিট এবং টাকার নিরাপত্তা সম্পর্কে সবকিছু জানাতে পারবেন।
Written by Nabadip Saha.