লক্ষ লক্ষ উপভোক্তার কাছে খুশির খবর এসে পৌঁছেছে। বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে সেপ্টেম্বরের মাসের জন্য লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের (West Bengal Lakshmir Bhandar Scheme) টাকা পৌঁছে গিয়েছে মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এই প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি মাসের গোড়ার দিকে, অর্থাৎ ৪ থেকে ৬ তারিখের মধ্যে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হওয়ার কথা। তবে চলতি মাসে কিছুটা বিলম্ব হয়েছিল, যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল অনেকের মধ্যে।
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প
লক্ষ্মীর ভান্ডার শুরু হয়েছিল ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয়বারের মতো তৃণমূল কংগ্রেস সরকার গঠনের ঠিক আগে। ভোট প্রচারের সময় থেকেই এই প্রকল্পটি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। বিশেষ করে রাজ্যের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মহিলাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে চালু করা এই প্রকল্পটি রাজনীতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে টাকার পরিমান
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্য সরকার প্রত্যেক মহিলাকে প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করে থাকে। দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী মহিলারা এই প্রকল্পের প্রধান উপভোক্তা হলেও অন্যান্য শ্রেণির মহিলারাও এর সুবিধা পেয়ে থাকেন। এই অর্থ সহায়তা অনেক মহিলার দৈনন্দিন খরচ মেটাতে সাহায্য করে, যা তাদের আর্থিক স্বনির্ভরতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সাধারণত প্রতি মাসে ৪ থেকে ৬ তারিখের মধ্যে টাকা ক্রেডিট হয়ে যায়। তবে এমাসে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মহিলাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে কিছুটা দেরি হওয়ায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল তাদের মধ্যে। কিন্তু পুজোর আগে টাকা পৌঁছানোয় স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন তারা। তবে নতুন উপভোক্তাদের ক্ষেত্রে পুজোর পর থেকে টাকা প্রদান শুরু হবে বলে জানা গেছে।
এই বিলম্বের পেছনে নির্দিষ্ট কোনও কারণ প্রকাশ্যে আসেনি, তবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের গোলমাল বা প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এমনটা হতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে ৯ সেপ্টেম্বর থেকে টাকা ছাড়ার কাজ শুরু হয়েছে এবং বিভিন্ন অঞ্চলের মহিলারা টাকা পেতে শুরু করেছেন। কেশপুরের শিখা ঘোষ জানান, “দু’দিন আগে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পেয়েছি। সামনের মাসে পুজো, তাই টাকাটা পেয়ে নিশ্চিন্ত হলাম।”
যারা টাকা পাননি
সারা পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পের উপভোক্তার সংখ্যা কয়েক কোটি। শুরুতে জেলায় প্রায় ৭৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ৮০০ জন উপভোক্তা ছিলেন, পরে আরও লক্ষাধিক মহিলা এই প্রকল্পের আওতায় আসেন। জেলার প্রশাসনিক এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “অনেকেই টাকা পেয়ে গেছেন, যারা এখনও পাননি, তারা শিগগিরই পেয়ে যাবেন।” তিনি আরও জানান, যেসব উপভোক্তা এখনও টাকা পাননি, তাদের সমস্যা সাধারণত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের গোলমালের কারণে হয়ে থাকে। এ ধরনের সমস্যার সমাধানে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
Written by Nabadip Saha.