গত দশ বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার (Teacher Recruitment) যাবতীয় দুর্নীতি কে কেন্দ্র করে এখনো উত্তেজনা চলছে রাজ্যে। আদালতে জমে আছে বহু কেস (TET Case). এই সমস্ত মামলা গুলোর যতই গভীরে যাওয়া হচ্ছে, ততই উঠে আসছে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য। এরকমই একটি খবর পাওয়া গেল সম্প্রতি। যার ফলে ৫ বছর চাকরির পরও তাদের চাকরি কনফার্ম কিনা, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
West Bengal Teacher Recruitment Latest News
সংবাদ সুত্রে জানা গেছে, চাকরির নথিপত্র সরকারের তরফ থেকে কনফার্ম করা হয় নি, তবুও দিব্যি চাকরি করে চলেছেন, এমনটা অভিযোগ উঠেছে বর্তমানে অনেক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে। শোনা যাচ্ছে, এই সমস্ত ব্যক্তিরা পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালে নিয়োগ পেয়েছেন চাকরিতে। ৫ বছর ধরে স্কুলে পড়াচ্ছেন! এখন তাদের নথিপত্র ঘেটে দেখা হচ্ছে যে সেগুলি কনফরমেশনই পায়নি। তাহলে তখন কিভাবে চাকরিতে নিযুক্ত হলেন তারা?
বিষয়টি স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কানে যাওয়া মাত্রই শুরু হয়েছে পদক্ষেপ নেওয়া। এবার হয়তো এর জেরে চাকরি যেতে চলেছে বহু শিক্ষকের। যদিও এই নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ শিক্ষা দপ্তরের অধিকারিকরা। এমনিতেই শিক্ষক নিয়োগ তথা Teacher Recruitment দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে জেরবার, রাজ্য রাজনীতি। আর এর মধ্যে নতুন এই খবর ফের উস্কে দিলো বিরোধীদের।
কোন শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এই ঘটনা?
সংবাদ সুত্রে জানা গেছে, রাজ্যের কয়েকটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং স্পনসর্ড স্কুলের ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা যাচ্ছে। সাধারণত চাকরিতে জয়েন করার আগে যে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন হয়, সেখানে যোগ্য প্রার্থীদের নথিপত্র উপযুক্ত ভাবে যাচাই করেই তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৭ সাল ও তার পরে যোগদান করা নবনিযুক্ত বেশ কিছু শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীর ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয়নি, এমনটাই অভিযোগ।
যদিও স্কুল শিক্ষা দপ্তর মারফত ইতিমধ্যেই এই নিয়ে বিভিন্ন জেলার স্কুলগুলির ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টরকে (DPSC & DI) চিঠি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সেই সমস্ত শিক্ষকদের নথিপত্র ভেরিফিকেশন করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পাঠাতে হবে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছে। আর এই কাজের দায়ভার দেওয়া হয়েছে প্রতিটি জেলার ডিআই দেরই ওপর। আর এরপরই Teacher Recruitment এর আধিকারিকেরা নড়ে চড়ে বসেছেন।
আরও পড়ুন, সরকারী কর্মচারীদের DA ঘোষণা। মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধিতে কত টাকা বেতন বাড়লো?
প্রসঙ্গত এই ২০১৭ সালের শিক্ষকেরা সকলেই WBBPE Priamary TET Exam 2014 এর প্রার্থী। আর এই পুরো প্যানেল নিয়ে ইতিমধ্যেই আদালতে মামলা চলছে। জাস্টিস গাঙ্গুলীর এক রায়ে চাকরি বাতিল হয়ে গেছিলো। যদিও পরে সেই নির্দেশ আপাতত স্থগিত (Teacher Recruitment) রয়েছে। আর এর মধ্যেই ফের নথি যাচাই এবং ভেরিফিকেশন না করার অভিযোগ এলো এই প্যানেলের ই বেশ কিছু শিক্ষকদের। এবার এই শিক্ষকদের ডবল বিপদে চাকরি থাকবে কিনা নাকি বাতিল হবে সেতাই এখন দেখার। যদিও পুরো প্যানেল বাতিল না হলেও ইতিমধ্যেই বেশ কিছু শিক্ষকদের চাকরি বাতিল (Teacher Recruitment) হয়ে গেছে। তবে কি এবার সেই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে আরও কিছু নাম?
কিভাবে এই নথি যাচাই প্রক্রিয়া করতে হবে?
নিয়োগ পাওয়া প্রতিটি শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীকে তাদের নিজস্ব জেলার হাসপাতালে গিয়ে ব্লাড টেস্ট, ইসিজি, চেস্ট এক্স-রে, ইউরিন টেস্ট, আই টেস্ট ইত্যাদি মেডিকেল টেস্টগুলি সম্পন্ন করতে হবে। তারপর সেগুলির রিপোর্ট নিয়ে যত্ন করে রেখে দিতে হবে নিজের কাছে। এই সমস্ত মেডিকেল টেস্টগুলি করানোর জন্য নির্দিষ্ট চার্জ প্রদান করতে হবে প্রার্থীদেরই।
এই পর্যায় শেষ হলে তাদেরকে সেই সমস্ত ডকুমেন্ট যেগুলি চাকরির আগে বা পরে, দরকার পড়েছে সেগুলি দিতে হবে। এক্ষেত্রে লাগবে প্রার্থী নিজস্ব ফটো আইডেন্টিটির জেরক্স, বয়সের প্রমাণপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র, দু কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং অন্যান্য নির্দিষ্ট ডকুমেন্টস। এগুলি এবং মেডিকেল টেস্টের রিপোর্টগুলি একত্রিত করে সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে সেগুলির পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করতে হবে।
আরও পড়ুন, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া DA দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। কবে থেকে পাওয়া যাবে?
সবকিছু হয়ে গেলে প্রার্থীরা যে স্কুলে চাকরি করেন সেখানকার হেড টিচার এর কাছে যেতে হবে। সঙ্গে উপরোক্ত ডকুমেন্ট গুলি অবশ্যই রাখতে হবে। এছাড়াও দরকার পড়বে অন্যান্য কিছু ডকুমেন্ট যেমন, এপয়েন্টমেন্ট লেটার, জয়নিং লেটার, ২ বছর অন্তত সার্ভিস দেওয়ার রিজলিউশন কপি, No Litigation Certificate , MC Validity Certificate প্রার্থীর একটি সেল্ফ ডিক্লেরেশন। এই সমস্ত নথিপত্র জমা করতে হবে হেড অফ দা ইনস্টিটিউশন এর কাছে। সেখান থেকে সরাসরি এগুলি যাবে ডিআই দের কাছে। Teacher Recruitment এর আপডেট পেতে EK24 News ফলো করুন।