এবার বাড়ি ভাড়া ভাতা বা House Rent Allowance নিয়ে শিক্ষকদের জন্য নতুন নিয়ম আনল স্কুল শিক্ষা দপ্তর। আগের মতো চাইলেই আর মিলবে না ভাতা। আগে House Rent Allowance পেতে তেমন কোনো নিয়ম মানতে হত না শিক্ষকদের। প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ ছাড়াই সেই টাকা তাদের দিত সরকার। কিন্তু এখন আর তা হবে না। সমস্ত দিক বিচার করে যদি আবেদনকারীকে উপযুক্ত মানা হয়, তবেই ভাতা দেওয়া হবে।।
এই নিয়ে সম্প্রতি স্কুল শিক্ষা দফতর বিশেষ নির্দেশিকাও জারি করেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন বাড়ি থেকে কর্মস্থলের দূরত্ব, বাড়ি ভাড়া নেওয়ার কারণ, এবং যাবতীয় প্রমাণ পত্র পেশ করতে হবে শিক্ষা দপ্তরের কাছে। এবিষয়ে মোট ১৩টি শর্ত এইচ আর এ পেতে শিক্ষকদের মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা দপ্তর। কোন কোন শর্ত, দেখে নেব।
West Bengal Govt Employees House Rent Allowance Rules
১. স্কুল থেকে বাসস্থানের দূরত্ব ন্যূনতম ৫০ কিলোমিটার হতে হবে।
২. সেখান থেকে যাতায়াতের সমস্যা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করতে হবে।
৩. শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী দম্পতি যদি চাকরি সূত্রে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় বাস করেন, তার প্রমাণপত্র দিতে হবে।
৪. বাড়ি ভাড়া করলে প্রমাণ হিসাবে সেই বাড়ি ভাড়ার রসিদ দেখাতে হবে।
৫. স্বামী-স্ত্রী উভয়েই যদি ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে একই স্কুলে কর্মরত থাকেন, তাহলে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা এইচআরএ পাবেন।
৬. যদি দু’জনেই আলাদা আলাদা স্কুলে কর্মরত থাকেন এবং কর্মস্থলের দূরত্ব বেশি হয়, তাহলে তাঁরা পৃথকভাবে ১২ হাজার টাকা করে বাড়ি ভাড়া ভাতা পাবেন।
৭. স্কুল থেকে বাসস্থানের দূরত্ব প্রমাণ করার জন্য যাতায়াতের মাধ্যম, যাতায়াতের সময়, খরচ ইত্যাদির বিবরণ সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
৮. ভুয়া ভাড়ার রসিদ দিয়ে এইচআরএ আদায়ের চেষ্টা করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৯. HRA আবেদনের জন্য অনলাইন পদ্ধতি চালু করা হবে।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ৩ বছরের বেশি এক অফিসে নয়। নিয়ম চালু হয়ে গেল। কাদের জন্য এই অর্ডার?
১০. আবেদনের ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।
১১. অনুমোদিত হওয়ার পর থেকে প্রতি তিন মাস অন্তর এইচআরএ বিল জমা দিতে হবে।
১২. এইচআরএ বিলের সাথে ভাড়ার রসিদ, যাতায়াতের খরচের প্রমাণপত্র (যদি থাকে) ইত্যাদি সংযুক্ত করতে হবে।
১৩. স্কুল কর্তৃপক্ষ ভুয়া বিল বা কাগজপত্র ধরা পড়লে আবেদনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার থাকবে।
HRA নিয়ে শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেছেন, “অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কর্মরত স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে একই সাথে থাকেন অথচ দুজনেই বাড়ি ভাড়া ভাতা নিয়ে থাকেন। তাই শর্তগুলো মানতে হবে। তবে রাজ্যের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম বাড়ি ভাড়া ভাতা (12%) পান।”
আরও পড়ুন, সরকারি কর্মীদের কাজে গাফিলতি করলেই বেতন কাটা হবে, যেতে পারে চাকরিও। নতুন নিয়ম চালু হলো
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “স্বামী-স্ত্রী উভয়েই স্কুল শিক্ষক হলে House Rent Allowance আবেদনপত্রের প্রক্রিয়া সরলীকরণ প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ১৫০ কিমি দূরত্বের স্কুলে চাকরি করলেও আলাদা থাকার প্রমাণপত্র চাওয়া হচ্ছে, যা অপ্রয়োজনীয়।”
Written by Nabadip Saha.