পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি কর্মীদের ৩৮০০০ টাকা পর্যন্ত বেতন বাড়ছে। কাদের কতটা বেতন বৃদ্ধি তালিকা দেখুন

ফেব্রুয়ারির রাজ্য বাজেটেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ঘোষণা করেছে সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মীদের ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) বাড়ানোর। এবার নতুন অর্থবর্ষ শুরু হওয়ার আগেই বেতন বৃদ্ধি নিয়ে সুখবর দিল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন ৩৮,০০০ টাকা পর্যন্ত বাড়বে বলে জানানো হয়েছে। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর করা হবে। তবে সকলের জন্য নয়, এই বেতন বৃদ্ধি ঘটছে কেবল বিশেষ এক শ্রেণির কর্মীদের জন্য। কারা পাবেন সুবিধা, জেনে নিন বিস্তারিত।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি

এই নতুন ঘোষণার আওতায় মূলত চুক্তিভিত্তিক ড্রাইভাররা উপকৃত হবেন। এতদিন পর্যন্ত পুরসভা, পর্ষদ বা অন্যান্য সরকারি দফতরে চুক্তিভিত্তিকভাবে নিযুক্ত ড্রাইভাররা প্রতি মাসে ১৩,৫০০ টাকা বেতন পেতেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এবার থেকে এই বেতন একধাপে বেড়ে ১৬,০০০ টাকা হবে। নতুনভাবে নিযুক্ত কর্মীদের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

কিভাবে বাড়বে বেতন?

নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, কাজের অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে ড্রাইভারদের বেতনও বাড়বে।
১. প্রথম পাঁচ বছর পর্যন্ত বেতন অপরিবর্তিত থাকবে অর্থাৎ ১৬০০০ টাকা। এরপর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ধাপে ধাপে বেতন বাড়ানো হবে।
২. ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে বেতন হবে ২০,০০০ টাকা
৩. ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে বেতন হবে ২৫,০০০ টাকা

৪. ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে বেতন হবে ৩১,০০০ টাকা
৫. ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে সর্বোচ্চ ৩৮,০০০ টাকা বেতন নির্ধারিত হয়েছে
তবে, সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, এই কর্মীদের অবসরের পর কোনো পেনশন সুবিধা দেওয়া হবে না।

চুক্তিভিত্তিক সরকারি কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস

এই ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের চুক্তিভিত্তিক ড্রাইভারদের মধ্যে আনন্দের হাওয়া বইছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা স্থায়ী সরকারি কর্মীদের তুলনায় অনেক কম বেতন পেয়ে আসছিলেন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন। এবার সেই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা প্রতাপ নায়েক বলেছেন, “এটা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। সরকার সেই দাবি মেনে নিয়েছে। তবে, আমরা চাই এই কর্মীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়া হোক।”

আরও পড়ুন, স্টেট ব্যাংকে সোনা রাখলেই টাকা পাবেন গ্রাহকেরা। কিভাবে আবেদন করবেন?

রাজনৈতিক প্রভাব

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, এটি ভোটের আগে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের খুশি করার একটি পরিকল্পনা মাত্র।
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “সরকার যদি সত্যিই এই কর্মীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবত, তাহলে তাদের স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করত। এটা শুধুই ভোটের আগে দেওয়া চমক।”

চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ভবিষ্যৎ কী

এই নতুন বেতন কাঠামো কিছুটা স্বস্তি দিলেও, দীর্ঘমেয়াদে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। বিশেষ করে, অবসরের পর পেনশন না থাকায় অনেকেই চিন্তিত। তবে আপাতত এই ঘোষণার ফলে ড্রাইভারদের মুখে হাসি ফুটেছে, এবং তারা আশাবাদী যে ভবিষ্যতে আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়বে।

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!