ফের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া, আদালতে ফের মামলা হওয়ায় থেমকে গেল। WB TET SSC এর নিয়োগ প্রক্রিয়া আবার স্টে অর্ডার দিলো কোলকাতা হাইকোর্ট। যার জেরে এবার উল্টে চটে বসেছেন সফল চাকরীপ্রার্থীরা!
অতি চালাকি করতে গিয়ে বিপাকে বামপন্থী নেতা এবং আইনজীবীরা। বাম নেতা এবং আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের উপর ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এতটাই ক্ষোভ সিপিআইএম দল ও বাম নেতা এবং আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের উপর তৈরি হয়েছে যে, সিপিআইএমের সদর দপ্তর আলিমুদ্দিন স্ট্রিট বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন WB TET SSC SLST চাকরিপ্রার্থীরা।
শিক্ষক নিয়োগে চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে আদালতে মামলা লড়ছিলেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এবং আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। এই বামপন্থী নেতা এবং আইনজীবীরা চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে মামলা লড়তে গিয়ে এবার তাদেরই ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। WB TET SSC SLST চাকরিপ্রার্থীদের বক্তব্য, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম সহ আইনজীবীরা শিক্ষক নিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। একের পর এক মামলা করে রাজ্য সরকারের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
WB TET SSC SLST
প্রসঙ্গত, চাকরিহারাদের চাকরি দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি করার ঘোষণা করেন। এই সুপার নিউমেরিক পোস্টের মাধ্যমে চাকরিহারাদের চাকরি দেওয়ার বন্দোবস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরেই বাম নেতা এবং আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিমসহ বামপন্থীদের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের এই সুপার নিউমেরিক পোস্ট তৈরি করার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জানিয়ে বলা হয়, এই পোস্ট তৈরি বেআইনি।
এইভাবে রাজ্য সরকার পদ তৈরি করে চাকরি দিতে পারে না। আর এখানেই তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন শিক্ষকের পদের জন্য চাকরিপ্রার্থীরা। তারা আলিমুদ্দিন স্ট্রিট বন্ধের হুশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্ট ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল সার্ভিস কমিশনকে কোনো নিয়োগের জন্য প্রক্রিয়া চালাতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। স্কুলের কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষার শিক্ষক (WB TET) নিয়োগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হলো কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে।
ইতিমধ্যে কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষার জন্য যারা সুপারিশপত্র পেয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট তাদের নিয়োগপত্র দিতে নিষেধ করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের অবস্থান জানতে চেয়ে হলফনামা জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী শুনানি হবে ৩০ নভেম্বর। আর তার আগে পর্যন্ত নমস্ত নিয়োগ স্থগিত (WB TET SSC SLST) থাকবে।
স্কুল সার্ভিস কমিশন এর পক্ষ থেকে আদালতে চারটি হলফনামা দাখিল করা হয়। সেখানে যে সমস্ত চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি বাতিল হয়েছে, রাজ্যের তৈরি করা অতিরিক্ত শূন্য পদে তাদের নিয়োগের অনুমোদন দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়। কিন্তু রাজ্য কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে গিয়ে জানায় সরকার অযোগ্যদের নিয়োগের পক্ষে নয়। কমিশন এবং রাজ্যের মধ্যে এই দ্বিমত নিয়ে বিচারপতি বলেন, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও রাজ্য যদি এক না হয় তাহলে কমিশন ভেঙে দেওয়া হোক। কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা জানাতে হবে শুক্রবার।
হাইকোর্টের অসন্তোষ এর পর কমিশনের আইনজীবী আদালতে জানায়, বরখাস্ত হওয়ার শিক্ষকদের জন্য সওয়াল করবে না কমিশন। তারা অতিরিক্ত শূন্য পদে প্রার্থীদের নিয়োগের আবেদন প্রত্যাহার করবে।
এসএসসি ২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। ২০১৭ সালের জুন মাসে কর্মশিক্ষার পরীক্ষা নেওয়া হয়। ২০১৮ সালের মার্চের ইন্টারভিউ হয়। এরপর চলতি বছরে কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষায় অতিরিক্ত পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি (WB TET) দেয় এসএসসি। তারপরেই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়।
মাধ্যমিক পাশ করলেই কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি, একসাথে প্রচুর নিয়োগ, আবেদন করতে ক্লিক করুন।
সোমা রায় নামে এক চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ, কর্মশিক্ষা বিষয়ে যে ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশ হয়েছে তাতে তার নাম নেই। তিনি পরীক্ষায় ৭২ নম্বর পেয়েছেন। অ্যাকাডেমিক স্কোরে ২২ পাওয়ার পরে প্রাপ্ত নম্বর ৭৬ হওয়ার কথা। কিন্তু তাকে ৭২ নম্বর দেওয়া হয়েছে।
সিপিআইএম নেতা এবং আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে দাবি করে জানান, রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি করার অধিকার নেই। অ্যাডভোকেট জেনারেল পাল্টা জানিয়ে দেন, রাজ্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করতে পারে।
বিচারপতি বলেন, যা ইচ্ছা করুন ছাত্রদের শিক্ষা নিয়েই আমি চিন্তিত। এরপরেই অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্যে অন্যান্য রাজনৈতিক আমলে শিক্ষার অবক্ষয়ের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। একটা সরকার ইংরেজি বন্ধ করে দিয়েছিল। এটা বড় ভুল ছিল বলে জানানো হয়। তার সেই মন্তব্যে সহমত জানিয়ে বিচারপতি বলেন, হ্যাঁ, এটা বড় ভুল।
বিচারপতি কমিশনের (WB TET) কাছে জানতে চান সুপারিশ পত্র সবাইকে দেওয়া হয়েছে কিনা। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয় সবাইকেই সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে।
একাধিক ব্যাংকে একাউন্ট থাকলে RBI এর এই নিয়ম মানুন, নইলে সব টাকা জলে যাবে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিয়োগপত্র দিয়েছে কিনা সেটাও জানতে চান বিচারপতি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী জানান, আপনি মৌখিক নির্দেশে নিয়োগপত্র দিতে বারণ করেছিলেন। তাই এখনো কোনো নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়নি। এরপরেই যারা সুপারিশপত্র পেয়েছেন তাদের নিয়োগপত্র দিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নিষেধ করেছে হাইকোর্ট। পরবর্তী শুনানি হবে ৩০ নভেম্বর।
Written by Rajib Ghosh.