৪ই আগস্টেই পশ্চিমবঙ্গের ডিএ মামলায় বড় নির্দেশ! পুজোর আগেই ৫০% বকেয়া পাবেন? আগাম নোটিশ এলো

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) এবং সেই দাবিতে চলা ডিএ মামলা (DA Case Update), অবশেষে নাটকীয় মোড় নিতে চলেছে। যার ফলে দীর্ঘ দিন ধরে চলা আইনি লড়াই ও আন্দোলনের সুফল পেতে পারেন খুব সিঘরই। রাজ্য সরকার কে বকেয়া এর অন্তত ২৫% মেটানোর ইরদেস দিলেও রাজ্য তা করেনি। তবে আগামী ৪ই আগস্ট রাজ্য সরকারি কর্মীরা বড় খবর পেতে চলেছেন। বিস্তারিত জেনে নিন।

পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ডিএ মামলা নিয়ে নাটকীয় মোড়

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক এবং পেনশনভোগীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে দীর্ঘদিনের লড়াই এবং ২০১৬ সাল থেকে চলা ডিএ মামলা এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। একদিকে কনফেডারেশন ও ইউনিটি ফোরাম আদালতে মামলা এবং অপরদিকে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ, রাজ্যের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে, গত তিন বছর ধরে এই দাবিতে অক্লান্ত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

রাস্তায় এবং আদালতে তাদের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে রাজ্য সরকার কিছুটা বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) প্রদানে বাধ্য হয়েছে। তবে দাবীর তুলনায়, তা অন্তি নগণ্য! বর্তমানে এই মামলা ভারতের সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। আগামী ৪ঠা আগস্ট, ২০২৫-এর শুনানি রাজ্যের কর্মীদের জন্য এক নির্ণায়ক দিন হতে চলেছে। এই দিনটি তাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আর তার আগেই সুখবর এলো রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য।

গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

৪ঠা আগস্টের শুনানিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষে সওয়াল করবেন দেশের প্রখ্যাত আইনজীবী এবং ভারতের প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল গোপাল সুব্রহ্মণ্যম। তাঁর অংশগ্রহণ কর্মচারীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। জটিল আইনি মামলায় তাঁর দক্ষতার জন্য পরিচিত, সুব্রহ্মণ্যমের যুক্তি মামলার ফলাফলের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। কর্মীরা তাঁর উপস্থিতিকে এই লড়াইয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ বিশ্বাস করে, তাঁর যুক্তিপূর্ণ সওয়াল ন্যায্য ডিএ প্রদানের দাবিকে আরও জোরালো করবে। এই ঘটনা লক্ষ লক্ষ কর্মচারী ও পেনশনভোগীর মনোবল বাড়িয়েছে।

সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অবিচল লড়াই

সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ জানিয়েছেন, তারা রাজ্যের বঞ্চিত কর্মীদের পাওনা মহার্ঘ ভাতা এবং অন্যান্য অধিকার আদায়ে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি গতিহীন হয়ে পড়লে, মঞ্চের সমর্থন মামলাকারী সংগঠনকে নতুন শক্তি জুগিয়েছে। তাদের প্রচেষ্টার ফলেই সুপ্রিম কোর্ট একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায় দিয়েছে। তবে, ভাস্কর ঘোষ স্বীকার করেন, বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থতার কারণে রাজ্য সরকার আদালতের নির্দেশ পুরোপুরি মানেনি। এই প্রেক্ষাপটে ৪ঠা আগস্টের শুনানি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কর্মীরা এই শুনানিকে তাদের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখছেন।

আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গে ফের নতুন ছুটির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ। বন্ধ থাকবে সরকারি অফিস, স্কুল কলেজ, পুর ও পঞ্চায়েত দপ্তর। কবে কবে ছুটি জেনে নিন

মামলার বর্তমান অবস্থা

গত ১৬ই মে, ২০২৫, সুপ্রিম কোর্ট এক অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে রাজ্য সরকারকে ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ ছয় সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিল। আর্থিক সংকটের অজুহাতে রাজ্য সরকার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই নির্দেশ পালন করতে ব্যর্থ হয়। তারা ছয় মাস সময় চেয়ে এবং অর্থ আদালতে জমা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে। এই গড়িমসির বিরুদ্ধে কর্মচারী সংগঠনগুলি আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছে। এই জটিল পরিস্থিতিতে সকলের দৃষ্টি এখন ৪ঠা আগস্টের শুনানির দিকে। গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের মতো একজন প্রখ্যাত আইনজীবীর উপস্থিতি জয়ের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করেছে। অন্যদিকে এই মামলার মূল সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভ এমপ্লয়ী এর মলয় মুখপাধ্যায় বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিলে পুজোর আগেই ৫০% বকেয়া ডিএ পেতে পারেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা।

আরও পড়ুন, বকেয়া ডিএ না দিতে পারলে, ক্ষমতা ছেড়ে দিন। অবশেষে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ পরিশোধ নিয়ে বড় খবর

আশা ও ঐক্যের জয়

সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ এবং রাজ্যের লক্ষ লক্ষ কর্মচারী ও পেনশনভোগী বিশ্বাস করেন, তাদের দীর্ঘদিনের লড়াই শীঘ্রই সফল হবে। গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের আইনি দক্ষতা এই মামলায় নতুন গতি সঞ্চার করেছে। কর্মীরা আশাবাদী যে এই শুনানি তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত করবে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এই লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা বিশ্বাস করে, শিক্ষক ও কর্মচারীদের ঐক্যের জয় অবশ্যম্ভাবী। আগামী শুনানি এই আন্দোলনের ইতিহাসে এক স্মরণীয় অধ্যায় হতে চলেছে। এদিকে দীর্ঘ ৯ বoচছর ধরে চলা এই মামলার ফলে সম্পুর্ন ডিএ মেটানোর আদেশ হলেও রাজ্য সরকার সেই নির্দেশ এর কার্যকর কতদিনে করে এটা নিয়েও যথেষ্ট সন্ধিহান রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ।

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!