এবার বেকায়দায় পড়ল রাজ্যের স্কুলগুলি। শিক্ষা দপ্তরের (School Education Department School Land information) তরফ থেকে আসা চিঠিকে ঘিরে ক্রমেই আতঙ্ক বাড়ছে সকলের। কি জানানো হয়েছে চিঠিতে? রাজ্যের সমস্ত স্কুলগুলোর জমির দলিল দস্তাবেজ খতিয়ে দেখতে চেয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতোই নির্দেশ গেছে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছে। আর সেখান থেকেই স্কুলগুলিতে পৌছে গেছে এবিষয়ে চিঠি।
নির্দেশিকায় এও জানানো হয়েছে যদি কোনো স্কুল নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে তার সম্পত্তির প্রমাণ পেশ করতে ব্যর্থ হয়, তখন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার। যেটি আরো বেশি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষদের কাছে। কিন্তু হঠাৎ কেন এমন নির্দেশ? কত তারিখের মধ্যেই বা জমা করতে হবে এই প্রমাণ? বিস্তারিত জেনে নিন নীচে।
গত কয়েকদিন আগেই নবান্নের সভাঘরে এক প্রশাসনিক বৈঠকে এই নির্দেশ উঠে আসে। দ্রুত সরকার এবং সরকার পোষিত বিভিন্ন স্কুলের জমি সংক্রান্ত (School Land information) তথ্য সংগ্ৰহ করা হবে বলে জানানো হয় ওই বৈঠকে। সেই মতো অবিলম্বে স্কুলগুলিকে এবিষয়ে অবগত করেও দেওয়া হয়। কিন্তু এমন নোটিশ পেয়ে হতভম্ব হয়ে গিয়েছে স্কুলগুলি। অনেকেই বুঝতে পারছেন না এর কারণ কি? সরকার হঠাৎ করে কেনইবা তাদের সম্পত্তির প্রমাণ দেখতে চাইছে?
তবে কি উদ্বৃত্ত সম্পদ সরকার নিয়ে নেবে এবার? এই আশঙ্কা করছেন অনেকে। কারণ ইতিমধ্যেই এই ঘটনার জেরে নাকি বেশ কয়েকটি স্কুল বন্ধও হয়ে গেছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে কি বাকি গুলোর পালা এবার?
এই নির্দেশ পাওয়ার পর কার্যতই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে স্কুলগুলিতে। যদিও কিছু কিছু স্কুলের কাছে ইতিমধ্যেই তাদের জমির প্রমাণ পত্র প্রস্তত আছে বলে জানা গেছে। তাই সরকার যেদিন চাইবে সেদিনই তা দিতে রাজি তারা। কিন্তু এমনও অনেক স্কুল রয়েছে যেগুলো বহু প্রাচীন, শতবর্ষ পুরোনো।
এই পরিস্থিতিতে সেই সব স্কুলের জমির প্রমাণ তড়িঘড়ি বের সম্ভব নয়। অনেক স্কুলের ক্ষেত্রে আবার তা হারিয়েও গেছে। তাই নতুন করে বের করতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যাবে বলে জানিয়েছেন সেইসব স্কুলের কর্তৃপক্ষ। এদিকে শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে যে নোটিশ স্কুলগুলিতে এসেছে সেখানে খুব বেশি সময়ও দেওয়া হয় নি স্কুলগুলিকে এই কাজের জন্য। তাই এই মুহূর্তে কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তারা।
আরও পড়ুন, এই রাজ্যে চালু হচ্ছে ৭ম বেতন কমিশন। এক ধাক্কায় ১০ হাজার টাকা বেতন বাড়বে
নারায়ণ দাস বাঙ্গুর মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “আমাদের কাছে তথ্য আছে আমরা সরকারকে জানিয়ে দেব, কিন্তু বহু স্কুলের কাছে তথ্য নেই, এ ক্ষেত্রে তারা সমস্যায় পড়বে। আর কেনই বা হঠাৎ করে চাইছে তা এখনও স্পষ্ট করেনি সরকার।” এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেন, “শুধু স্কুল গুলোই নয়, রাজ্যের অন্যান্য সরকারি দপ্তর গুলির কোনটার আওতায় কতটা জমি রয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।
এমনটাই নির্দেশ এসেছে নবান্নের সেই প্রশাসনিক বৈঠক শেষে। আর সেই মতেই কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে স্কুলগুলিও সেই নির্দেশ লাভ করেছে শিক্ষা দপ্তরের কাছ থেকে। খুব শীঘ্রই কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কেও এই নোটিশ পাঠানো হবে। তবে স্কুলগুলোকে সম্পত্তির প্রমাণ দেখানো নিয়ে জোর করা গেলেও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির এক্ষেত্রে স্ব অধিকার রয়েছে। তারা যখন চাইবেন তখনই দেখাতে পারেন সেই প্রমাণ।”
Written by Nabadip Saha.