যত দিন যাচ্ছে, একের পর টেট মামলায় শিক্ষক নিয়োগের এক পর্দা ফাঁস হচ্ছে। দুর্নীতির শিকড় যে অনেকটা গভীরে সেটা বোঝা যাচ্ছে। প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত যতই এগোচ্ছে, ততই নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে।
টেট মামলায় শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির নয়া পর্দা ফাঁস, কিভাবে টাকা তোলা হতো, জানাল ইডি।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। ED সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের নির্দেশে রাতারাতি অযোগ্য প্রার্থীদের রেজিস্ট্রেশন এবং অ্যাডমিট কার্ড তৈরি করা হয়। শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়, টেট মামলার গভীরতা ক্রমশ প্রকাশ্য।
Enforcement Directorate এর তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, রীতিমত সরকারি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ৫৫০ টি বেসরকারি বিএড কলেজকে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার জন্য পরীক্ষা নিতে বলা হয়েছিল। তবে জানা গিয়েছে, শেষ পর্যন্ত ওই সমস্ত বেসরকারি বিএড কলেজগুলো প্রার্থীদের পরীক্ষা নেয়নি। যেহেতু সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়নি। নির্দিষ্ট করে কোনো কিছু জানানো হয়নি।
তাই টাকার বিনিময়ে ওই চাকরিপ্রার্থীদের সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, ইডি সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, পর্ষদ সভাপতি এবং তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের নির্দেশে তার মিডলম্যানরা রাজ্যজুড়ে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের জন্য টাকা তুলেছিলেন। হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মাথাপিছু দেড় লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল।
২০২২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয় ২০১৭-১৯ এবং ২০১৮-২০ বর্ষে ভর্তি হওয়া সমস্ত পড়ুয়াদের সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য বেসরকারি ডিএলএড কলেজগুলিকে পরীক্ষার বন্দোবস্ত করতে হবে। অভিযোগ, মানিকের নির্দেশে রাতারাতি পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন এবং অ্যাডমিট কার্ড প্রস্তুত করে পর্ষদ।
টেট মামলায় ইডির তদন্তকারী অফিসারদের দাবি অনুযায়ী, অযোগ্য প্রার্থীরা যাতে চাকরি পান তাই মানিক ভট্টাচার্য দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজগুলিকে টেট প্রবেশিকা পরীক্ষার সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করেছিলেন। একাধিক সার্টিফিকেট পাওয়া প্রার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং মানিক ভট্টাচার্যকে জেরা করে এই তথ্য জানতে পেরেছে ED.
অতি সুকৌশলে মানিক এবং তার মিডলম্যানরা অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার জন্য টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট দেওয়ার বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে টেট মামলা নিয়ে এত জল ঘোলার পরও নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (WBBPE).
বিরোধীদের দাবি, টেট মামলা কে ধামচাপা দিতে নতুন করে নিয়োগের বাহানা। অন্যদিকে মামলাকারী আইনজীবী চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন, একজন দোষী ও ছাড় পাবেন না। আবার কয়েকদিন আগে টিভি চ্যানেলে মাননীয় বিচারক জানিয়েছেন, প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে শীঘ্রই যোগ্যদের চাকরীর ব্যাবস্থার নির্দেশ দেওয়া হবে। আপডেট আসছে।
Written by Rajib Ghosh.