সারা দেশের কৃষক বন্ধুদের সুবিধা জন্য চালু হল নতুন কৃষক আইডি কার্ড (Digital Farmer ID Card). আবেদন করলেই মিলবে একগুচ্ছ সুবিধা। ডিজিটাল ফার্মার আইডি কার্ড পেতে আপনি বাড়িতে বসেই আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে আবেদন জমা করার কিছু দিনের মধ্যেই আপনার কার্ড চলে আসবে। এই কার্ড থাকলে কৃষকরা আর্থিক ও কৃষি ক্ষেত্রে একাধিক সুবিধা পাবেন। কৃষক বন্ধুদের সুবিধার্থে সরকারের এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কারা এই কার্ড পাওয়ার যোগ্য, কৃষক আইডি নাম্বার কিভাবে পাবেন? কিভাবে আবেদন করবেন? কিভাবে কৃষক আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন? সমস্ত কিছু বিস্তারিত জেনে নিন।
Digital Farmer ID Card Benefits and Registration Online
দেশের কৃষক বন্ধুদের জন্য সরকার নানান ধরনের প্রকল্প চালু করেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় কেন্দ্র সরকারের প্রধানমন্ত্রী কিষান যোজনার (PM Kisan Yojana) কথা। এর পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকার কৃষক বন্ধু প্রকল্পও (Krishak Bandhu Scheme) চালু করেছে। তবে এবার আর প্রকল্প নয়। বরং কৃষকদের জন্য নতুন পরিচয়পত্র তথা আইডি কার্ড (Digital Farmer ID Card) চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এই ফার্মার আইডি কার্ড থাকলে কৃষকরা পাবেন প্রচুর সুবিধা।
কৃষক আইডি কার্ড কী?
সরকারের তরফে চালু করা Farmer ID Card বা কৃষক পরিচয়পত্র হল দেশের কৃষকদের জন্য সরকার-স্বীকৃত একটি ডিজিটাল কার্ড যেখানে দেশের সমস্ত কৃষকের নিজস্ব পরিচয়, কৃষকের জমির মালিকানা, তাঁর জমিতে ফসল সংক্রান্ত তথ্য, এছাড়াও, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য ইত্যাদি সংরক্ষিত থাকবে । এই সমস্ত তথ্য অনলাইনে সংরক্ষিত হয়ে থাকবে। প্রত্যেক কৃষকের জন্য একটি ইউনিক কৃষক আইডি নাম্বার থাকবে। কৃষক কার্ডে সেই নাম্বার উল্লেখ থাকবে। সেই নাম্বার দিয়েই পর্টাল থেকে সার্স করলেই সমস্ত কৃষকের তথ্য এক ক্লিকেই পাওয়া যাবে। সমস্ত সরকারি প্রকল্পের টাকা এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ও এই নাম্বারের মাধ্যমেই দেওয়া হবে।
কৃষকরা কী কী সুবিধা পাবেন?
✅ এই কার্ড থাকলে প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি যোজনার টাকা কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি পৌঁছে যাবে।
✅ কৃষি যন্ত্র ভর্তুকি, ফসল বিমা যোজনা, বীজ ও সার বিতরণ কৃষকেরা আরও সহজে পাবেন।
✅ কৃষকের জমির ডিজিটাল রেকর্ড সংযুক্ত করা থাকবে।
✅ কৃষকের ব্যাংক লেনদেনের রেকর্ড সরকারের কাছে থাকবে
✅ আপনারা সরাসরি কৃষি অফিসের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করতে পারবেন।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের প্রচুর রেশন কার্ড বাতিল। কেবলমাত্র এনারাই ফ্রি রেশন পাবেন
কৃষক আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া
প্রথমে আপনাকে পশ্চিমবঙ্গ কৃষি দফতরের ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। এরপর সেখানে গিয়ে কিছু তথ্য উল্লেখ করতে হবে। যেমন, আধার নম্বর, আপনার মোবাইল নম্বর জেলা, ব্লক, গ্রাম, আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর জমির তথ্য (খতিয়ান, দাগ নম্বর) প্রভৃতি। এরপর কিছু নথি আপলোড করতে হবে। যেমন আধার কার্ড (PDF), কৃষকের জমির দলিল / খতিয়ান, কৃষকের ব্যাংক পাসবুক, পাসপোর্ট সাইজ ছবি। এরপর সঠিকভাবে আবেদনপত্র পূরণ করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। সব কিছু হয়ে গেলে অনলাইনে ফার্মার আইডি কার্ডের আবেদন জমা দেওয়ার পর পাবেন Acknowledgement Number বা আবেদন নম্বর পেয়ে যাবেন। এবার এটা পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য নম্বরটি লিখে রাখুন।
আরও পড়ুন, আপনার কি LIC পলিসি আছে? তাহলে আপনার জন্য বিরাট খুশির খবর।
কৃষক আইডি কার্ড ডাউনলোড করবেন কিভাবে?
অনলাইনে কৃষক আইডি রেজিস্ট্রেশন করার ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই সাধারণত এই কৃষক আইডি নাম্বার জেনারেট হয়ে যায়। এরপর এই আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। কার্ড ডাউনলোড করতে নিম্নলিখিত পদ্ধতিটি ধাপে ধাপে অনুসরণ করুন:
- প্রথমে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন।
- সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে বেছে নিন “Farmer Search” বা “Download ID Card” অপশনটি।
- এরপর উল্লেখ করুন আপনার আবেদন নম্বর অথবা মোবাইল নম্বর।
- এর পরের ধাপে OTP ভেরিফাই করে নিন।
- এরপর বিকল্প থেকে PDF আকারে কার্ডটি ডাউনলোড করতে হবে
- আপনি চাইলে এই কার্ডটি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন
আরও পড়ুন, আগামী মাস থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ৩০০০ টাকা করে দেবে? সঠিক খবর জেনে নিন
উপসংহার
২০২৫ সালের মধ্যে ভারতবর্ষের প্রায় প্রতিটি রাজ্যে ফার্মার আইডি কার্ড চালু হয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলে উত্তর প্রদেশ, বিহার মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান। পশ্চিমবঙ্গেও খুব শীঘ্রই এই কার্ড চালু হয়ে যাবে। অনলাইনের মাধ্যমে কার্ড ডাউনলোড করে নিয়ে প্রচুর সুবিধা পাবেন বাংলার কৃষকেরাও। এছাড়া কৃষক বন্ধু প্রকল্প ও পিএম কিষান যোজনার পরের কিস্তির টাকা খুব শীঘ্রই দেওয়া হবে। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।