বিরাট ঐতিহাসিক পদক্ষেপ এর পথে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi). আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬ টার পর দেশ জুড়ে Citizenship Amendment Act চালু হলো, সিএএ অর্থাৎ নাগরিকত্ব আইন। জারির জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ইতিমধ্যেই নিয়ে ফেলেছেন চূড়ান্ত প্রস্তুতি। আজ সন্ধ্যার মধ্যেই সরকারি ওয়েবসাইট থেকে এই বিষয়ে নানারকম নিয়মকানুন জারি করা হবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
Citizenship Amendment Act Gazette Notification
সিএএর বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী Citizenship Amendment Act কার্যকর হতে পারে এরপর থেকেই। পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, থেকে আগত অমুসলিম জনগোষ্ঠীকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথাই বলা রয়েছে এই আইনে। এর আগে যদিও এই আইনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এসেছিল নানান বিরোধী মন্তব্য। সেই সূত্র অনুযায়ী কার্যকর করা যায়নি এই আইন।
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগেই Citizenship Amendment Act প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বিজেপির পক্ষ থেকে। তাই ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি এই আইন জারি করতে না পারলেও ভঙ্গ হবে প্রতিশ্রুতি। পশ্চিমবঙ্গের একটা বিশাল অংশের মানুষ বিশেষ করে মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছে নাগরিকত্ব লাভের জন্য বর্তমানে এই আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলেন লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশে লাগু হতে পারে সিএএ আইন। আর সেই কথার মান্যতা দিয়ে আজ সন্ধ্যায় দেশ জুড়ে চালু হলো CAA আইন।
CAA Act কী?
সিএএ অর্থাৎ সিটিজেন আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (Citizenship Amendment Act).
ভারতের নাগরিকদের ওপর ঠিক কতটা প্রভাব ফেলতে পারে নাগরিকত্বের এই সংশোধনী আইন?
Citizenship Amendment Act – CAA Act
স্বরাষ্ট্র মন্তকের খবর অনুযায়ী, ভারতীয় নাগরিকদের সঙ্গে CAA বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আপাতত কোনওরকম সম্পর্ক নেই। আপাতত এই দেশের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের উল্লেখ রয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের মধ্যে। কোন আইন এই অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। মুসলিমসহ ভারতীয় নাগরিকদের ওপর সিএএর কোনওরকম প্রভাব পড়বে না এমনটাই জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন, 1500 টাকা পাবেন প্রতিমাসে। মহিলাদের জন্য ভোটের আগে নতুন প্রকল্প। কিভাবে এই আবেদন করবেন?
CAA কাদের জন্য কার্যকর হতে পারে?
২০১৪ সালের ৩১ শে ডিসেম্বরের পর পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, থেকে ধর্মীয় কারণবশত হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি এবং খ্রিস্টানদের জন্যেই তৈরি হয় এই Citizenship Amendment Act বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। এই তিন দেশ বা অন্য কোন দেশ থেকে আসা মুসলিম সহ অন্য কোনও বিদেশি শরণার্থীদের জন্য আপাতত এই নিয়ম কার্জকর হবে না।
কীভাবে সুবিধা হতে পারে?
পাসপোর্ট বা ভিসার মতো নথি না থাকলেও ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে এই আইন অনুসারে। এমনকি সিএএর মাধ্যমে শরণার্থীরা ও পাবেন আবেদন করার সুযোগ।
দ্বিতীয়তঃ ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্যে তাদের আবেদনের রাস্তা হয়ে যাবে আরো মসৃণ। এক্ষেত্রে বসবাসের ন্যূনতম সময় ১২ বছরের পরিবর্তে করা হচ্ছে ৬ বছরের।
আরও পড়ুন, প্রত্যেক পরিবারকে 15 লাখ টাকা দেবে কেন্দ্র সরকার। আধার কার্ড থাকলে এইভাবে আবেদন করুন।
অন্য দেশ থেকে যারা এখানে এসে অবৈধভাবে বসবাস করছেন বিশেষ করে মুসলিমদের কি বিতাড়িত করা হবে?
এর উত্তরেও বিজেপি সরকার জানিয়েছে, “একেবারেই নয়।” কোনও নাগরিকদের বিতরণের সঙ্গে আপাতত সম্পর্ক নেই CAA. ১৯৪৬ এর বিদেশি আইন এবং ১৯২০ পাসপোর্ট আইন অনুযায়ী এই সংক্রান্ত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। বিদেশী নাগরিকদের ভারতের প্রবেশ এবং প্রস্থানের সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে এই দুই আইনের ভিত্তিতেই। তবে কোন ব্যক্তির ধর্ম বা দেশের ভিত্তিতে নেওয়া হয় না কখনোই।
নাগরিকত্ব পেতে কিভাবে আবেদন করবেন?
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২০১৪ সালের আগে যে সমস্ত শরণার্থীরা এদেশে এসেছেন তারা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। তাদের বৈধ মোবাইল নম্বর থাকতে হবে। সেখা OTP এর মাধ্যমে ভেরিফিকেশন হবে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ জানানো হবে। কাল থেকেই আবেদন করা যেতে পারে। তবে আগের কোনও নথি লাগবে কিনা সে ব্যাপারে এখনও জানা যায়নি। বিস্তারিত আসছে।
Written By Tithi Adak.