Primary TET 2022 – শিক্ষক নিয়োগ ও প্রাথমিক টেট ২০২২ নিয়ে হাইকোর্টের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ।

২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া তথা Primary TET 2022 নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) এক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে, যা রাজ্যের সমস্ত প্রাইমারি টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। সাধারণত প্রাইমারি টেটে অংশগ্রহণ করতে গেলে চাকরিপ্রার্থীদের ডিএড বা ডি এল এড ডিগ্রী থাকা আবশ্যক। আগে অবশ্য বি এড ডিগ্রিকে গুরুত্ব দেওয়ার নিয়ম থাকলেও গতবছর থেকে পর্ষদ কড়া ভাবে তা নিষেধ করে দিয়েছিল। তবে এবার কলকাতা হাইকোর্টের এক রায়তেই ফের বদলে গেল পর্ষদের নিয়ম। আদালত সরাসরি ঘোষণা করে দিল যে কেবল ডি এড বা ডি এল এড নয় (DElEd), বিকল্প ডিগ্রি থাকলেও টেট পরীক্ষায় বসা যাবে।

Calcutta High Court Judgement on WBBPE Primary TET 2022

হাইকোর্টে এই রায় এসেছে এক মামলা থেকে যার সূত্রপাত দুই চাকরিপ্রার্থীর আবেদন ঘিরে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ডিইএলএড ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক হলেও, Primary TET 2022 মামলাকারীদের জাতীয় মুক্ত বিদ্যালয় থেকে অর্জিত একটি শিক্ষাগত ডিগ্রি ছিল, যা তাদের আবেদনকে জটিল করেছিল।

নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় এই ডিগ্রি বৈধ হিসেবে বিবেচিত হলেও, পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল করে। এতে চাকরিপ্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম দাবি করেন, যদি সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India) আগেই এই নির্দেশ দিত, তাহলে চাকরিপ্রার্থীরা ডিইএলএড ডিগ্রি দিয়েই আবেদন করতেন এবং কোনও সমস্যা হতো না।

আদালতের রায়

এই পরিস্থিতির বিবেচনায় হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha) WBBPE পর্ষদকে দ্বিতীয় প্যানেল প্রকাশ করার নির্দেশ দেন, যাতে মামলাকারীরা তাদের বিকল্প ডিগ্রি দিয়েই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। বিচারপতি সিনহার এই রায় শুধু মামলাকারীদের জন্য নয়, বরং আরও অনেক চাকরিপ্রার্থীকে নতুন আশার আলো দেখাবে, যারা বিকল্প ডিগ্রি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন।

আরও পড়ুন, ভারতীয় রেলে মাধ্যমিক পাসে প্রচুর কর্মী নিয়োগ, আজই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ।

তবে, এই রায়ের পর প্রশ্ন উঠছে, বিএড (B.Ed.) ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়েও। ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিএড ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করেছিলেন এবং পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, শুধুমাত্র বিএড ডিগ্রি থাকলেই প্রার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে না। এর ফলে, অনেক বিএড ডিগ্রিধারী প্রার্থীর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ হারিয়েছে। এমনকি, কিছু প্রার্থী ডিইএলএড ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও ফর্মে ভুল করে বিএড লিখে দেন, যা পরবর্তীতে আরও জটিলতা তৈরি করে।

আরও পড়ুন, আয়ুষ্মান ভারত না স্বাস্থ্য সাথী, কোন প্রকল্পে সুবিধা বেশি? দুই সরকারি স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্পের তুলনা

সিদ্ধান্ত

এই প্রেক্ষাপটে, হাইকোর্টের (Calcutta High Court) এই রায় শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রশ্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিশেষ করে, বিকল্প ডিগ্রি থাকা প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ দেওয়া শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে এই নির্দেশ মানতে হবে এবং দ্রুত দ্বিতীয় প্যানেল প্রকাশ করতে হবে, যাতে যোগ্য প্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
Written by Nabadip Saha.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!