Kanchanjunga Express Accident – ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। কি কারনে এই দুর্ঘটনা? যাত্রীরা কিভাবে ফিরবেন?

ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস (Kanchanjunga Express Accident). কি কারনে দুর্ঘটনা, এখন কি অবস্থা, যাত্রীরা কেমন আছেন, সরকার কি জানাচ্ছেন এক নজরে জেনে নিন।

Kanchanjunga Express Accident News Live

গত বছর জুন মাসে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল করমন্ডল এক্সপ্রেস। উড়িষ্যার বালাসোরের কাছে এই দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় বহুজনের। আবার ঠিক এক বছর বাদে সেই স্মৃতির পুনরাবৃত্তি হলো পশ্চিমবঙ্গে। এবার বিপদের কবলে উত্তরবঙ্গ গামী ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। আজ সকালে নিউ জলপাইগুড়ির রাঙাপানি স্টেশনের কাছাকাছি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে এই ট্রেন।

দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন মোট ১৫ জন। আহতের সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ জন। ইতিমধ্যে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সেই স্থানে উপস্থিত হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। কিন্তু কি কারনে ফের এক বছর বাদে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি? এই কথাই ভাবিয়ে তুলছে মানুষকে। তবে কি এর পেছনে রেলেরই অসচেতনতা দায়ী? দেরি না করে ইতিমধ্যেই উদ্ধারের কাজও শুরু করা হয়েছে দুর্ঘটনাস্থলে। যেসব যাত্রীরা সেখানে আটকে রয়েছেন তাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করছে সরকার। আরো জানতে হলে পড়তে থাকুন আজকের প্রতিবেদন।

কেন দুর্ঘটনায় পড়ল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস?

সূত্রের খবর, আজ নির্ধারিত সময়ে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে এসে পৌঁছায় ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। এরপরই নিচবাড়ি এবং রাঙাপানি স্টেশনের মাঝামাঝি চটেরহাটের কাছাকাছি এলাকায় ঘটে দুর্ঘটনা (Kanchanjunga Express Accident). সেই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনেরা জানিয়েছেন নিয়ম মেনেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস লাইন দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে পেছন থেকে একটি মাল বাড়ি এসে প্রচন্ড জোরে ধাক্কা মারে সেই ট্রেনের পিছনে।

যার ফলে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুটি কামরা ট্রেন থেকে বেরিয়ে এসে লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের গতি ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার ছিল। মালগাড়িটির গতি ছিল তার চেয়েও বেশি। সঙ্গে সেটি আবার ওভারলোডেড ছিল। সেই কারণেই সেটি এসে সজোরে ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে এবং তার ফলেই ঘটে দুর্ঘটনা।

আরও পড়ুন, ভোটে জিতেই নতুন প্রকল্প। মহিলারা পাবে ৪২০০ টাকা, পুরুষরা ৩১০০ টাকা প্রতিমাসে। কারা পাবেন জেনে নিন

জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া গাড়ি গুলিকে প্রথমে ক্রসিং পয়েন্ট দিয়ে পার করিয়ে দেয় রেল। তারপরে অন্যান্য ট্রেন গুলি আসে। কিন্তু আজ ভুল করে সেখানে মালগাড়ি ঢুকে যাওয়ায় এই এক্সিডেন্ট। এর পেছনে রেলের সঠিক সময় সিগন্যাল না দেওয়া কেই দায়ী করছেন সকলে। আবার রেল বলছে সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু চালক না মেনে এগিয়ে গেছে। তবে এও জানা গেছে যে সেই লাইনে রেলের কবচ বসানো ছিলনা। এর ফলেও ঘটে থাকতে পারে এক্সিডেন্ট, যা রেলেরই দোষ দেখায়।

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা মোকাবিলায় সরকার

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে যথাস্থানে পৌঁছান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। এরপর তিনি স্থানীয় লোকজন এবং রেলের অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন। তিনি নিজে কন্ট্রোলরুমে থেকে কড়া নজর রাখছেন গোটা পরিস্থিতির ওপর। সেই সঙ্গে দূর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। অশ্বিনী জানান, “দুর্ঘটনায় যারা মৃত হয়েছেন তাদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা, যারা আহত হয়েছেন তাদের ২.৫ লাখ টাকা আর যারা সামান্য চোট পেয়েছেন তাদের ৫০ হাজার টাকা করে দেবে সরকার।”

ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। রাজ্যের তরফ থেকে ঘটনায় আহত ও নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে যারা বর্তমানে দুর্ঘটনাস্থলে আটকে রয়েছেন, তাদের কেও দ্রুত ফেরানোর চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন, এই স্কলারশিপে আবেদন করলেই পাবেন 12000 টাকা। যোগ্যতা ও আবেদন প্রক্রিয়া জেনেনিন

প্রধানমন্ত্রীর টুইট

ঘটনার কয়েক ঘন্টা পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও নিজের টুইটার একাউন্টে টুইট মারফত শোক বাণী প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে যে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। যাঁরা নিজেদের ভালোবাসার মানুষকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছি।”

কিভাবে বাড়ি ফিরবেন আটকে পড়া যাত্রীরা?

দুর্ঘটনার স্থান থেকে যাত্রীদের ফিরিয়ে আনার জন্য ইতিমধ্যেই বাস সার্ভিস চালু করেছে সরকার। উত্তরবঙ্গ রাজ্য পরিবহন সংস্থার তরফ থেকে ১০ টা বাস রাঙাপানির উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে দুর্গতদের ফেরার জন্য। রয়েছে কলকাতা গামী অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থাও। যারা কলকাতায় আসবেন তারা এই বাসগুলো করেই ফিরতে পারেন।
এছাড়াও যাত্রীরা চাইলে কাছেই শিলিগুড়ি আসার রাস্তা রয়েছে।

সেখান পর্যন্ত কোনো ছোট বাস বা স্থানীয় গাড়ি করে করে নৌকাঘাটের রাস্তা ধরে চলে আসতে পারেন। এরপর যারা কলকাতায় আসবেন তারা কিন্তু সেখান থেকে সরাসরি বাস পাবেন না কলকাতা ফেরার। এজন্য তেনজিং নোরগে টার্মিনাসে গিয়ে আপনাদের কলকাতাগামী বাস ধরতে হবে। যদি একান্তই কোনো অসুবিধায় পড়তে হয় তবে স্থানীয় প্রশাসন সর্বদা সাহায্য করতে তৈরি রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
Written by Nabadip Saha.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!

Leave a Comment