সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের মাথায় হাত পড়ার জোগাড় এবার (Dollar to INR). আগামী দিনে এই দেশের মূল্য বৃদ্ধি যে হারে বাড়তে চলেছে তাতে হয়তো না খেয়েই দিন কাটাতে হবে তাদের। কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না ডলারের দাম বেড়ে চলা। বিদেশি মুদ্রার (Foreign Reserve) নিরিখে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হয়েই চলেছে দেশীয় মুদ্রার দাম। ডলারের দাম (USD Price) আরো বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৮৩.৩৮ টাকায় (Indian Rupee).
Dollar to INR Exchange Rates Today.
এই নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ফের আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা। কী ভাবে তারা মূল্য বৃদ্ধিকে (Inflamation) আরও চড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিপাকে ফেলবে? কংগ্রেসের অভিযোগ, দেশবাসীর স্বার্থ দেখছে না সরকার। নিজের সুবিধা মতো টাকার দরকার বাড়িয়ে চলেছে। সাধারণ মানুষের কি হবে মূল্য বৃদ্ধি এভাবে হতে থাকলে? প্রধানমন্ত্রী চোখ বুজে আছেন। আর এই Dollar to INR বা ডলারের থেকে রুপির মূল্য যত বৃদ্ধি পাবে ততই সমস্যা বাড়বে।
Why Dollar to INR Is The Main Reason To Hike Inflamation?
১. তেল সহ সমস্ত পণ্যের আমদানি খরচই বাড়বে। ফলে আরও চড়তে পারে মূল্য বৃদ্ধি।
২. রফতানির থেকে আমদানি মূল্য অনেক বেশি হওয়ায় চওড়া হবে বাণিজ্য ঘাটতি।
৩. টাকাকে বাঁচাতে রিজ়ার্ভ ব্যাংক বাজারে ডলার ছাড়তে হওয়ায় কমছে বিদেশি মুদ্রা ভান্ডার।
৪. মূল্য বৃদ্ধি যুঝতে বর্ধিত সুদে ঋণের চাহিদা ধাক্কা খাবে তার খরচ বাড়ায়।
৫. সংস্থার লগ্নির আগ্রহ কমবে।
৬. লগ্নি না বাড়লে তৈরি হবে না কাজ। যা চাহিদাকে বাড়তে দেবে না।
৭. বিদেশি লগ্নিকারীরা শেয়ার বাজার থেকে পুঁজি (Dollar to INR) তুলে নিলে পড়বে সূচক।
৮. ধাক্কা খাবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা।
Inflamation Hike For Dollar to INR Devaluation
ভারতীয় মুদ্রার (Indian Rupee) মূল্য বৃদ্ধির হার প্রকাশ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল মার্কিন ডলার। মার্কিন ডলার অনুযায়ী স্বাধীনতার প্রাক্কাল থেকেই দেশীয় মুদ্রার দাম চড়াও হচ্ছে। এর মাঝে কয়েকবার Devaluation হওয়ায় মূল্য তলানিতে গিয়েও ঠেকেছিল। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দাম ঊর্ধ্বমুখি হয়েছে।
Dollar to INR Exchange Rate Before 1974
শুনলে অবাক হবেন স্বাধীনতার আগে আমাদের দেশের মুদ্রার দাম মার্কিন ডলারের (United State Dollar) চেয়েও বেশি ছিল। এর কারণ হলো ভারত তখন ব্রিটিশদের অধীনে ছিল। ভারতীয় মুদ্রার মূল্য নির্ধারণ হতে সরাসরি ব্রিটিশ পাউন্ড মুদ্রার নিরিখে। করা হয় ব্রিটিশ ফাউন্ডের (USD To GBP) মূল্য মার্কিন ডলারের চেয়েও অধিক ছিল তখন যার কারণে এদেশের মুদ্রার তুলনায় অনেক সস্তা ছিল মার্কিন মুদ্রা তখন।
Dollar to INR Exchange Rate Between 1947 To 1991
1947 সালে স্বাধীনতা লাভের পর, ভারত একটি নির্দিষ্ট বিনিময় হার ব্যবস্থা গ্রহণ করে যেখানে সরকারী হস্তক্ষেপ বিনিময় হারের কোনো ওঠানামা পরিচালনা করে। এই ব্যবস্থার অধীনে, ভারতীয় রুপির মান স্থির ছিল। এই পদ্ধতির লক্ষ্য ছিল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য স্থিতিশীল করা, কিন্তু এটি পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য মুদ্রার ক্ষমতাকেও সীমিত করে।
Dollar to INR বিনিময় হার প্রাথমিকভাবে তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল। যাই হোক, পাকিস্তান (Pakistan) এবং চীনের (China) সাথে যুদ্ধের কারণে ভারতীয় রুপির স্থিতিশীলতা ব্যাহত হয়েছিল, যা ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে চাপ দিয়েছিল। এরপর শুরু হয় ১৯৭০ এর দশকে তেল সংকট। যা দেশীয় মুদ্রা কে মুদ্রাস্ফীতির দিকে চালনা করে।
Dollar to INR Exchange Rate Between 1991 To 2001
১৯৯১ সালে ভারত সরকার (Government Of India) উদারীকরণ নীতি ঘোষণা করে। সমস্ত বাঁধা তুলে দিয়ে বিশ্ব বাণিজ্যের বাজারে এগিয়ে যাওয়ার জন্য চলতে থাকে চেষ্টা। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিকেও নিশ্চিত করেছিল তখন। অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটার জন্য এবং বিশ্বের কঠিন প্রতিযোগী দেশ গুলির সম্মুখীন করার জন্য স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছিল তখন ভারতীয় মুদ্রার দাম। ২০০১ সালে মার্কিন ১ ডলার অনুযায়ী আমাদের দেশীয় মুদ্রার দাম ছিল ৪৫ টাকা।
Dollar to INR Exchange Rate Between 2001 To 2023
এই দুই শতকে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ভারতীয় মুদ্রার দাম। যার ফলে দেশীয় বাজারে মূল্য বৃদ্ধির হারও হয়েছে চরম। একুশ শতকের প্রথম দিকে USD ১ অনুযায়ী ভারতীয় মুদ্রার দাম ছিল 47 টাকা। ২০২০ সালে এর হার আকাশছোঁয়া বেড়ে হয়, ৭৫ টাকা। সবশেষে ২০২৩ সালে ৮০ টাকায় সর্বশেষ দাঁড়িয়ে ছিল দাম। এরমধ্যে করোনা অতি মারি এসে পড়ার কারণে দেশের অর্থনৈতিক বাজারকে তছনছ করে দিয়েছিল তা। ঋণের বোঝা ক্রমশ বেড়েই চলে যার কারণে পরবর্তীকালে মূল্যবৃদ্ধি ঘটাতে বাধ্য হয় ভারত সরকার।
Dollar to INR Exchange Rate
ডলারদের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষতি
তবে ভারতের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে মূল্য বৃদ্ধি (Dollar to INR) ঠেকানো কখনোই সম্ভব নয়। ২০২৩ থেকে ২৪ সালের মধ্যে ভারতীয় মুদ্রার দাম মার্কিন ডলারের নিরিখে আরো তিন টাকা বেড়ে গিয়ে এখন ৮৩.৩৮ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যা ক্রমশ চড়া করে চলেছে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার কেও। চড়া ডলারের জেরে ভারতের আমদানির খরচ বাড়ায় ওষুধ, ভোজ্যতেল, গাড়ি তৈরির যন্ত্রাংশের মতো বহু পণ্যের দাম বাড়বে।
1 লক্ষ টাকা সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে দিচ্ছে SBI. কিভাবে আবেদন করলে এই টাকা পাবেন?
আমদানিকৃত কাঁচামালে তৈরি জিনিসও আরও দামি হবে। আখেরে সমস্যায় পড়বেন সাধারণ রোজগেরে মানুষই। তাঁর আশঙ্কা এর ফলে বাজারে চাহিদা কমতে পারে, যা বিরূপ প্রভাব ফেলবে অর্থনীতিতে। আর ১লা এপ্রিল ২০২৪ অনুসারে Dollar to INR এর নতুন রেট হল ৮৩.৪০ রুপি, যা কিছুদিন ধরে স্থিতিশীল বলে মনে করছেন অনেকে। আর এই রেট সদা পরিবর্তনশীল।
ডলারের দাম বৃদ্ধিতে কাদের লাভ?
ডলারের দাম বৃদ্ধিতে কার্যত দেশের সামগ্রিক ক্ষতি। তবে যারা ভারতের বাইরে থাকেন, বা ভারতে ডলার পাঠান তারা তুল্যমূল্য বেশি পাবেন। এদিকে Youtuber, Blogger যাদের সাধারনত Google থেকে ডলার এ ইনকাম হয়, তারাও বেশি টাকা পাবেন। যদিও এই লাভ সীমিত, এবং সামগ্রিক ভাবে দেশের জন্য ভালো নয়।
Written by Nabadip Saha.
এটিএম কার্ডের খরচ বেড়ে গেল গ্রাহকদের। GST সমেত কত খরচ হবে? একাউন্ট থেকে কেটে নেবে।