বিগত কয়েক বছর ধরে একাধিক ব্যাংক কে জরিমানা করা হয়েছে। DICGC Insurance RBI Bankruptcy and Insolvency Code অনুযায়ী ব্যাংকের নিয়ম না মানায় (Bankruptcy Birmingham) বন্ধ হয়ে গেছে প্রচুর কো-অপারেটিভ ব্যাংক (Co-Operative Banks). আর সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের ও একাধিক ব্যাংক রয়েছে। গ্রাহকের টাকা সুরক্ষিত করতে একাধিক নিয়ম পরিবর্তন করেছে রিজার্ভ ব্যাংক তথা RBI. আর এই নিয়ম না মানায় বিভিন্ন ব্যাংক শাস্তিও পেয়েছে। তবে ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হলে বা দেউলিয়া হলে DICGC Insurance থাকায় গ্রাহকের টাকা সুরক্ষিত, সেকথা জানিয়েছে Reserve Bank of India. তবে তা কতটা সুরক্ষিত এবং কত টাকা ফেরত পাওয়া যাবে, আতঙ্কিত না হয়ে পুরোটা জেনে নিন।
DICGC Insurance RBI Bankruptcy and Insolvency Code
ব্যবসা আর ঝুঁকি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। ছোট হোক বা বড় যে কোন ব্যবসাতেই ঝুঁকি থাকবে না এমনটা সম্ভবই নয়। ব্যাংক মানেও তো ব্যবসাই। বিভিন্ন সময়ে আমরা দেখি বিভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন হয় একটি ব্যাংক। যেমন কোন কারনে দেউলিয়া (Bankruptcy and Insolvency Code) হয়ে যাওয়া, বা সরকারের অর্থনৈতিক নীতির প্রভাব, বা অন্য কোন এমার্জেন্সি বশত একটি ব্যাংক কে অনেক সময়ই বিভিন্ন ঝুঁকি পোহাতে হয়। এমনকি বন্ধও হয়ে যায় অনেক ব্যাংক।
ব্যাংক বন্ধ হওয়া মানে তার সঙ্গে সমস্ত টাকা পয়সা লোপাট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই তো? এই আশঙ্কায় কাজ করে গ্রাহকদের মনে। এই পরিস্থিতিতে একটা চিন্তা থেকে যায় যে নিজের আমানত কি করে বাঁচাবে তারা? এই সমস্যার সমাধান নিয়ে এগিয়ে এসেছে এক সরকারি সংস্থা। গ্রাহকদের টাকা পয়সা লোপাট হয়ে গেলেও সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে এরপর থেকে। গত ২০১৯ সালের নতুন নিয়ম চালু করে মোদী সরকার। যার ফলে গ্রাহকের টাকা আরও সুরক্ষিত হয়। এবার সেই নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন।
DICGC Insurance
ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স এবং ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন (DICGC Insurance and Credit Gurantee) হল একটি সরকারি সংস্থা। এটি ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এবং আগে এই বীমার পরিমান ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ছিলো, ২০১৯ সালে মোদী সরকার সেই ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করেছে। এই নিয়ম অনুযায়ী DICGC এর তালিকাভুক্ত কোনও ব্যাংক যদি ঝুঁকির সম্মুখীন হয় এবং সেই কারণে তা গ্রাহকদের টাকা-পয়সার ক্ষতি হয় তবে এই সংস্থাটি আমানতের (Investment) জন্য উপযুক্ত বীমা প্রদান করে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের। অর্থাৎ এখন থেকে আর টাকা চোট যাওয়ার কোন ভয় নেই।
কোন কোন ব্যাংক DICGC Insurance এর অধীনে?
দেশের যেকোনো ব্যাংক DICGC এর অধীনে সুবিধা প্রাপ্ত। বিভিন্ন প্রাইভেট সেক্টর, পাবলিক সেক্টর, গ্রামীণ ব্যাংক, সমবায় ব্যাংক, বিদেশ থেকে যে ব্যাংকগুলি ভারতে এসেছে সেগুলি সব এর আওতায় রয়েছে। কোনও গ্রাহক যখনই কোনও একাউন্ট উপরোক্ত যেকোনো ব্যাংকে করেন, তবে তখন থেকে তার বীমা (Insurance Coverage) চালু হয়ে যায়। আর তার জমানো টাকার সুরক্ষা ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়।
কোন বিনিয়োগে DICGC Insurance পাবেন?
সাধারণ গ্রাহকদের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডিপোজিট (Current Account), সেভিংস অ্যাকাউন্ট ডিপোজিট (Savings Account), ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposit), রেকারিং ডিপোজিট (Recurring Deposit) ইত্যাদি প্ল্যান গুলির ক্ষেত্রে ডিআইসিডিসি বীমা (DICGC Insurance) প্রদান করে।
কোন বিনিয়োগে DICGC Insurance পাবেন না?
অন্যদিকে, আন্তঃব্যাঙ্ক আমানত, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আমানত, বিদেশি সরকারের আমানত, রাষ্ট্রীয় ভূমি উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলির আমানত, ভারতের বাইরে প্রাপ্ত কোনও আমানতের অ্যাকাউন্টে যে কোনও পরিমাণ বকেয়া, যে কোনও পরিমাণ যা RBI-এর পূর্ববর্তী অনুমোদনে DICGC দ্বারা বিশেষভাবে ছাড় দেওয়া হয়েছে, এমন ক্ষেত্রগুলিতে এটি বীমা দেয় না। অর্থাৎ বিদেশী বিনিয়োগ বা রিজার্ভ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া বিনিয়োগে এই বীমা পাওয়া যাবে না। তাই বিনিয়োগের আগে এই সংক্রান্ত তথ্য জেনে নেওয়া ভালো।
আরও পড়ুন, Income Tax Saving – কষ্টার্জিত জমানো টাকায় ট্যাক্স বাঁচাবেন কিভাবে?
কখন বিমার সুবিধা পাওয়া যায়?
- ব্যাংক বা আর্থিক সংস্থা দেউলিয়া হলে
- ব্যাংকের লাইসেন্স বাতিল হলে
- ব্যাংকের মার্জার হলে
১) কোন কারনে একটি ব্যাংক যদি দেউলিয়া (Bankruptcy and Insolvency) হয়ে পড়ে এবং তার গ্রাহকদের টাকা পয়সার ক্ষয়ক্ষতি হয় তখন DICGC Insurance দেয়।
২) যদি একটি তালিকাভুক্ত ব্যাংকের লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায় এবং সেই ব্যাংকটি বন্ধ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে গ্রাহকদের আমানতের ক্ষতিপূরণ দেয় এই সংস্থা।
৩) যখন একটি ব্যাংকের সঙ্গে আরেকটি ব্যাংকের মার্জার হয়ে যায় তখনও পূর্ববর্তী ব্যাংকের গ্রাহকরা ক্ষতিগ্ৰস্ত আমানতের বিমা পান।
কিভাবে বীমা দেওয়া হয়?
কোন ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে পড়লে এটি ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিমা দেয় গ্রাহকদের।
১) এক্ষেত্রে আপনি যদি একই ব্যাঙ্কের আলাদা আলাদা শাখায় নিজের নামে আমানত রাখেন তবে ৫ লক্ষ টাকা পাবেন।
২) একই ব্যাংকের পৃথক শাখায় একটি নিজের নামে এবং আরেকটি তে জয়েন্ট একাউন্ট থাকলে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা বীমা পাওয়া যায়।
৩) একই ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় অনেকগুলি যৌথ একাউন্ট থাকলে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকাই পাওয়া যাবে।
৪) একজন গ্রাহকের যদি দুই বা ততোধিক আলাদা পৃথক ধরনের ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকে তবে প্রতিটি ব্যাঙ্কের আমানতের জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে বিমা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, 500 টাকার জাল নোট বাজারে ছেয়ে গেছে, আসল নোট সহজেই চিনে নিন।
DICGC Insurance বিমার জন্য আবেদন
১) প্রথমে তালিকাভুক্ত ব্যাঙ্কগুলি প্রতি গ্ৰাহকের দাবি তালিকা তৈরি করে। এই তালিকায় ক্ষতিগ্ৰস্ত গ্ৰাহকের নাম, ঠিকানা, আমানতের পরিমাণ, সুদ অন্যান্য বিবরণ থাকে। এটিও জানতে হবে যে কেউ যদি ৯০ দিনের মধ্যে নিজেদের সম্মতি প্রদান করতে ব্যর্থ হয়, তবে কোনও বকেয়া আমানতের ক্ষেত্রে সেই দাবি গ্রহণ করা হবে না।
২) এরপর আমানতকারীদের সম্মতি নিয়ে তাদের দিয়ে সেই ফর্মগুলি সাইন করানো হয় ব্যাঙ্ক মারফত।
৩) এরপর DICGC ক্ষতিগ্রস্ত গ্ৰাহকদের আমানতের হিসাব করে সমপরিমান বিমার কভারেজ পাঠিয়ে দেয় ব্যাঙ্কগুলিতে।
এক্ষেত্রে গ্রাহকদের জেনে রাখা প্রয়োজন, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ব্যাংক মার্জ হয়েছে। জরিমানা ও বাতিল হয়েছে একাধিক ব্যাংকের লাইসেন্স। আর তার পরই গ্রাহকদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, তাদের টাকা মার যাবে কিনা। কারন অতিমারী পরিস্তিতির পর সারা দেশের আর্থিক অবস্থা কিছুটা হলেও অবনতি হয়েছে। যদিও সেই ধাক্কা কাটাতে সক্ষম হয়েছে, তবে আগামী দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। যার জেরে কড়া আইন এনেছে কেন্দ্র সরকার ও রিজার্ভ ব্যাংক। এই বিষয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করতে পারেন।
আরও এই ধরনের তথ্য পেতে EK24 News ফলো করুন।
Written by Nabadip Saha.