West Bengal School reopen after Summer Vacation
গ্রীষ্মের ছুটি বা Summer Vacation কাটিয়ে স্কুল খুলতেই চালু হচ্ছে নয়া নিয়ম, বদলে যেতে পারে সব, জেনে নিন।
খুলে গিয়েছে রাজ্যের সমস্ত স্কুল। তবে তারপর থেকেই শুরু হয়েছে নতুন সমস্যা। গরমের জন্য দীর্ঘ ৪৫ দিনের ছুটি থাকার কারণে সিলেবাস সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। গ্রীষ্মকালীন ছুটি (Summer Vacation) অনেকটাই এগিয়ে এনে ঘোষণা করে দেওয়া হয়। তার কারণ হিসেবে সেই সময় তীব্র তাপপ্রবাহ (Heatwave) চলছিল রাজ্যজুড়ে।
শিক্ষকদের নতুন নির্দেশ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে, নিচে পড়ুন।
আর সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গরমের ছুটি এগিয়ে আনার কথা ঘোষণা করেন। ২ মে থেকেই গ্রীষ্মকালীন ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় রাজ্যের সমস্ত সরকারি এবং সরকারি পোষিত স্কুলগুলিতে। এবার কবে স্কুল খুলবে তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়। স্কুল খোলার দিনক্ষণ জানতে চাওয়া হয়।
প্রথম দিকে ঠিক হয়েছিল ৫ জুন থেকে স্কুল খোলা হতে পারে। কিন্তু পরে লক্ষ্য করা যায় ফের বাংলা জুড়ে তীব্র দাবদাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাপমাত্রা ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী। পড়ুয়াদের স্বস্তি দেওয়ার জন্য ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৪ ই জুন পর্যন্ত স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি বাড়িয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
তারপরে দীর্ঘ গরমের ছুটি কাটিয়ে ১৫ই জুন বৃহস্পতিবার থেকে Summer Vacation শেষ করে রাজ্যের সমস্ত স্কুলগুলি খুলে যায়। আর স্কুল খুলে যেতেই শিক্ষা দপ্তরের তরফে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল, সেই নির্দেশিকা বলবৎ করার জন্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীদের জন্য সেরা 5 স্কলারশিপ। আবেদন করলেই পাবেন পড়াশোনার খরচ।
এদিকে গরমের ছুটি (Summer Vacation) দেওয়ার সময়ে শিক্ষা দপ্তরের তরফে নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, গরমের কারণে Summer Vacation দীর্ঘ ছুটি পড়ার জন্য সিলেবাস পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের সিলেবাস পূরণ করার জন্য স্কুল খোলার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অতিরিক্ত ক্লাস (Extra Class) নিতে হবে। কারণ চলতি বছরের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আর তাই সঠিক সময়ের মধ্যে যদি পড়ুয়াদের সিলেবাস পূরণ করানো সম্ভব না হয়, তাহলে সমস্যা তৈরি হবে। সেই কারণে স্কুল খোলার সাথে সাথে শিক্ষক -শিক্ষিকাদের এক্সট্রা ক্লাস নেওয়ার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সাথে সাথে মশা বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য স্কুলের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিড ডে মিল (Mid Day Meal) চালু রাখার জন্য স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুলে গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পড়ুয়াদের পড়াশোনার যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে দীর্ঘ ছুটির কারণে, সেই ঘাটতি পূরণ করতে হবে। সেই কারণে ইতিমধ্যেই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকরা সমস্ত স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন, যেভাবেই হোক এই সমস্যা মেটাতে হবে। পড়ুয়াদের সিলেবাস সম্পূর্ণ করতে হবে।
নির্দেশিকায় আরো জানানো হয়েছে, প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া কোনো শিক্ষক- শিক্ষিকা স্কুলের বাইরে বেরোতে পারবেন না। এমনকি টিফিন টাইমেও কোনো শিক্ষক শিক্ষিকাই বাইরে যেতে পারবেন না। ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে স্কুল কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সমস্ত শিক্ষক- শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীরা তা মানতে বাধ্য থাকবেন। এবার যে সিলেবাস পূরণের জন্য নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে, সেখানে শনিবার পুরোদমে স্কুল চালু রাখা যায় কিনা তা নিয়েও ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন, বদলে গেল মাধ্যমিক পরীক্ষার সিলেবাস, নবম দশম শ্রেণীর পড়ুয়ারা জেনে নিন।
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে শনিবার পুরোদমে স্কুল চালু রাখার বিষয়ে ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। সাধারণত শনিবার সমস্ত সরকারি এবং সরকারি পোষিত স্কুল গুলি হাফ ডে অর্থাৎ অর্ধ দিবস খোলা থাকে। ফলে এবার সিলেবাস পূরণের জন্য যদি শনিবার পুরোদমে চালু করতে হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই পুরনো নিয়মের বদল ঘটতে চলেছে। এখন দেখার বিষয়, সমস্ত সরকারি স্কুলে শনিবার পুরোদমে ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কিনা।
এদিকে পঞ্চায়েত ভোটের কারনে সমস্ত শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া স্তগিত হয়ে গেল। আর সাম্প্রতিক ৬০৩ জন শিক্ষকের বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়ে। আর সেই নিয়ে মামলা ও দায়ের করা হয়। আজ এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালো শিক্ষা দপ্তর। ভোটের আগে শিক্ষকদের বদলী স্তগিত থাকবে। এই নিয়ম সম্ভবত সমস্ত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে প্রজগ্য হবে, ভোট সম্পন্ন হওয়ার আগে পর্যন্ত।