Lakshmir Bhandar: লক্ষ লক্ষ মহিলার নাম বাদ যাচ্ছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের তালিকা থেকে। কাদের নাম বাদ যাবে? এখন কি করণীয়?

পশ্চিমবঙ্গের মা বোনেদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে রাজ্য সরকার চালু করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প তথা Lakshmir Bhandar Scheme. এবার সেই প্রকল্প নিয়েই এক বিরাট দুঃসংবাদ মিলল সরকারের তরফে। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বহু মহিলার নাম। এমাস থেকেই টাকা পাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে অনেকের। জানা গেছে, কোন একটি নয়, একাধিক কারণের জন্য রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। তবে যাদের নাম কাটা হচ্ছে, তারা চাইলে কিভাবে পুনরায় সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন, সেই উপায় ও উল্লেখ করেছে সরকার। আর দেরি না করে এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

West Bengal Lakshmir Bhandar Scheme details

লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প

২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এই প্রকল্প চালু করেন। প্রকল্পের আওতায় প্রথমে সাধারণ শ্রেণির মহিলারা মাসে ₹৫০০ আর তফসিলি জাতি (এসসি/এসটি)-এর মহিলারা মাসে ₹১,০০০ টাকা ভাতা পেতেন।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ভাতা আরও বাড়ায় রাজ্য সরকার। তখন থেকে সাধারণ শ্রেণীর মহিলারা ১০০০ এবং তফশীল জাতীয় উপজাতির মহিলারা ১২০০ টাকা করে মাসে পান। লক্ষাধিক মহিলার জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এই Lakshmir Bhandar Scheme প্রকল্প। তবে সাম্প্রতিককালে তালিকা থেকে বহু মহিলার নাম বাদ যাওয়া এবং ভাতা বন্ধ হওয়ার কারণে অসুবিধায় পড়ছেন অনেকে।

কেন বাদ পড়ছে লক্ষীর ভান্ডার থেকে নাম?

রাজ্য সরকার কয়েকটি বিশেষ কারণে নাম বাতিল করছে। সেগুলি হল:
১. ভুয়া নথি দাখিল:
অনেকে ভুয়া জাতি শংসাপত্র জমা দিয়ে তফসিলি জাতি বা উপজাতি হিসাবে দাবি করেছেন। এই ধরনের ভুল তথ্য প্রদানকারী মহিলাদের নাম বাতিল করা হচ্ছে।

২. একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট:
কিছু মহিলা নিজের নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ গ্রহণ করেছেন। এটি অনিয়ম হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তাদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে।

৩. বয়সের ভুল তথ্য:
প্রকল্পের জন্য ন্যূনতম বয়সসীমা ২৫ বছর। তবে ২৫ বছরের কম বয়সের অনেক মহিলাই ভুয়া প্রমাণপত্র দিয়ে ভাতা নিচ্ছেন। তাদের নামও তালিকা থেকে বাদ পড়ছে।

৪. জয়েন্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্ট:
ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকার কারণে যারা জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছেন, তাদের নাম বাতিল হচ্ছে।

৫. অসম্পূর্ণ KYC তথ্য:
যাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের KYC আপডেট নেই, তাদের ভাতা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন, অনলাইনে নতুন প্যান কার্ডের আবেদন কিভাবে করবেন? প্যান কার্ড আবেদন পদ্ধতি

তালিকায় নাম না থাকলে কী করবেন?

যদি আপনার নাম বাদ পড়ে থাকে, তবে নীচের ধাপগুলি অনুসরণ করুন:
১. প্রমাণপত্র ঠিক করুন:
ভুয়া নথি জমা না দিয়ে বৈধ কাগজপত্র জমা দিন। এখনই নিজের প্রোফাইল চেক করে আপডেট করুন।

২. ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলুন:
জয়েন্ট ব্যাংক একাউন্টে রাজ্য সরকার লক্ষীর ভান্ডারের টাকা দেয় না। তাই জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার না করে নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলুন।

৩. KYC আপডেট করুন:
নিজের ব্যাংকে যান এবং কেওয়াইসি আপডেট করা আছে নাকি চেক করুন। যদি না থাকে, তবে ব্যাংক অবিলম্বে কেওয়াইসি নথি জমা করে আপডেট করুন।

৪. স্থানীয় ব্লক অফিসে যোগাযোগ করুন:
যদি এগুলির মধ্যে কোনটাই আপনার সমস্যা না হয় অথবা এই সব সমস্যা না থাকার পরেও টাকা ঢুকছে না, তবে ব্লক অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করুন।

আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গে এবার পুরুষদের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালু হচ্ছে? জেনে নিন

কেন এই পদক্ষেপ?

লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প বর্তমানে রাজ্যের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। যার আওতায় কোটি কোটি মহিলার নাম রয়েছে। এদের মধ্যে ভুয়া আবেদনকারীদের সরিয়ে যাদের প্রকৃত দরকার তাদের সুবিধা দেওয়াই লক্ষ্য রাজ্য সরকারের। তাই প্রকল্পের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার কর্তৃপক্ষ।

গ্রাহকদের এখন কি করণীয়?

যেহেতু অনেকের নাম বাদ যেতে পারে। তাই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাওয়া এখনো চালিয়ে যেতে চাইলে যাদের যাদের লক্ষ্মীর ভান্ডারের আবেদনে গরমিল আছে, তারা অবিলম্বে নিজেদের একাউন্ট সঠিক তথ্য দিয়ে আপডেট করুন।
Written by Nabadip Saha.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!