স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হতেই শিক্ষা দপ্তরের জন্য সার্কুলার জারি, মানতেই হবে সমস্ত নিয়ম।
রাজ্যের সমস্ত স্কুলের জন্য বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। রেজাল্টের কাজ চলছে। তার মধ্যে স্কুল স্পোর্টস ও সার্কেল স্পোর্টস এর প্রস্তুতি চলছে। এরই মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের (West Bengal Board of Secondary Education) তরফে। সমস্ত স্কুলে এই সার্কুলার পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিটি স্কুল কর্তৃপক্ষকে এই ৭ দফা নির্দেশিকা পালন করতে হবে। যাতে সঠিক এবং স্বচ্ছভাবে স্কুলের পরিচালন ব্যবস্থা চালিয়ে নেওয়া যায়। সেই কারণেই বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হতেই, এই নির্দেশিকা জারি করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (WBBSE). এবং পর্ষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বার্ষিক পরীক্ষারে রেজাল্টের পরই এই কাজ স্রুর করতে হবে। কি কি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে, এই নির্দেশিকা কি শুধুমাত্র হাইস্কুলের জন্য, নাকি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পালন করবে, জেনে নিন বিস্তারিত।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের (WBBSE) তরফে সার্কুলারে যা বলা হয়েছে সেটা হল, প্রতিটি স্কুলেই স্টুডেন্ট এন্ড সিকিউরিটি মনিটরিং কমিটি (SSMC) গঠন করতে হবে। স্কুলের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সমস্ত ধরনের পরিষেবামূলক ব্যবস্থা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে পর্যালোচনা করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রসঙ্গত এই কমিটি ভিন্ন নামে আগেও ছিলো, তবে এবার গুরুত্ব সহকারে এই কমিটির কাজ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ হতেই এই কমিটি গঠন করতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গ স্কুল শিক্ষা দপ্তরের ২০২৩ সালের ছুটির তালিকা
কারা থাকবেন এই কমিটিতে?
এই মনিটরিং কমিটিতে যারা দায়িত্বে থাকবেন তারা হলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বা চেয়ারম্যান, একজন মহিলা শিক্ষক, যদি কোনো স্কুলে মহিলা শিক্ষক না থাকেন তাহলে সেই জায়গায় পুরুষ শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, অভিভাবকদের দুইজন প্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের দুইজন প্রতিনিধি। (বার্ষিক পরীক্ষা)
এই মনিটরিং কমিটির মূল কাজ কি?
SSMC এর মূল কাজ হল, সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিচালন ব্যবস্থাকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা। স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে যাতে কোনোভাবেই সংক্রমণজনিত রোগ না ছড়ায়, সেই দিকে সজাগ থাকতে হবে। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া বা পতঙ্গবাহিত কোনো রোগ যাতে না ছড়ায় তার জন্য স্কুল সংলগ্ন ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এই বিষয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করতে হবে। স্কুলের পানীয় জলের বন্দোবস্ত ঠিক আছে কিনা লক্ষ্য রাখতে হবে। স্কুলের বিভিন্ন ইউনিট ও বার্ষিক পরীক্ষা সঠিক সময়ে নিতে হবে।
রেশনকার্ড ধারীদের জন্য আবারও সুখবর, বিনামূল্যে মিলবে খাদ্য সামগ্রী, কি কি মিলবে?
পাশাপাশি বাইরে থেকে আগত অতিথিদের জন্য পৃথক শৌচাগারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিরাপত্তার দিকে নজর দিয়ে সিসিটিভির বন্দোবস্ত করতে হবে।
সার্কুলারে আরো বলা হয়েছে, এই মনিটরিং কমিটিকে পানীয় জলের নমুনা সংগ্রহ করে জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি দপ্তরের ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে। স্কুলে যে সমস্ত সিলিং ফ্যান রয়েছে তা যাতে কখনোই হঠাৎ ছিড়ে পড়ে দুর্ঘটনা না ঘটে, বৈদ্যুতিক সুইচবোর্ড, তার সহ যে সমস্ত উপকরণ রয়েছে, তা নিয়মিত একজন লাইসেন্স প্রাপ্ত ইলেকট্রিশিয়ানকে দিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে।
অন্তত ছয় মাস অন্তর সংশ্লিষ্ট কমিটি এই সমস্ত দিক গুলি দেখা শোনা করে রিপোর্ট পাঠাবেন। এছাড়াও স্কুলের ভিতরে Safe Drive Save Life- এর প্রচার করতে হবে। তার বিভিন্ন কর্মসূচির ছবি স্কুলের দেওয়ালে লাগিয়ে রাখতে হবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই নয়া সার্কুলারে তৃণমূলের সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক তৃণমূল শিক্ষক সমিতির তরফে সাধুবাদ জানানো হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় পর্ষদের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন।
আবার বঙ্গীয় শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা স্বপন মন্ডল জানান, সার্কুলারে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। যে সমস্ত স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নেই সেখানে কাকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হবে তা এখনো বলা হয়নি। আর পানীয় জল ল্যাবরেটরীতে পাঠানোর জন্য যে পরিকাঠামো প্রয়োজন তা সমস্ত স্কুলে নেই। এগুলো সঠিকভাবে বন্দোবস্ত করে তারপরে সার্কুলার জারি করাই উচিত ছিল।
ডিসেম্বরে সবার SBI Account থেকে কাটা হচ্ছে টাকা, কি কারনে ও কত করে চার্জ দিতে হবে জেনে নিন।
এই কমিটি কি শুধুমাত্র হাইস্কুলের জন্য?
শিক্ষা দপ্তর সুত্রে জানা গেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (WBBPE) পক্ষ থেকেও পৃথক বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হবে। অন্যদিকে যে সমস্ত প্রাথমিক স্কুল এখনও বাংলার শিক্ষা SMS পোর্টালে এখনও বার্ষিক পরীক্ষার নম্বর আপডেট করেন নি, তাদের আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত স্কুল এখনও অর্ডার পাননি, তাদের ও কিন্তু করতে হবে। শেষ মুহুর্তে অর্ডার পেয়ে সার্ভারের সমস্যা এড়াতে এখুনি শুরু করুন। সার্ভার রাতের দিকে ভালো থাকছে।
Written by Rajib Ghosh.