মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আপডেট। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষা (WBBSE Madhyamik Pariksha 2023) নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিলো পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ (WBBSE). যা শুনে পরীক্ষার্থীদের চাপ বাড়বে ছাড়া কমবে না।
প্রসঙ্গত, কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত দেখা গিয়েছিল প্রাইমারী টেট (Primary TET) পরীক্ষাকেন্দ্রে। যাতে কোনোভাবেই প্রশ্নপত্র পাচার, টোকাটুকি সহ কোনো অবৈধ কাজকর্ম যেন পরীক্ষাকে ঘিরে না হয়। বহু বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সেটা ছিল চাকরির জন্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। আর এবার যেন ঠিক একইরকম কড়া নজরদারির ব্যবস্থা হতে চলেছে ছাত্রছাত্রীদের জীবনের সবচেয়ে বড় প্রথম পরীক্ষায়। মাধ্যমিক পরীক্ষায় (Madhyamik Examination) এবার যথেষ্ট কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত নেওয়া হচ্ছে।
আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে ৪ মার্চ পর্যন্ত চলবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। যাতে পরীক্ষা চলাকালীন কোনো সমস্যা না হয়, শান্তিপূর্ণভাবে যাতে পুরো মাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায়, তার জন্য ইতিমধ্যেই পর্ষদের সভাপতি এবং সচিব ১০টি জেলায় বৈঠক করে ফেলেছেন।
মাধ্যমিক পরীক্ষা ২০২৩ঃ
এর আগের বছরগুলোতে মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় একাধিক জেলায় দেখা গিয়েছে, বাইরে থেকে উত্তরপত্র পাচার করা, পরীক্ষার সময় টোকাটুকির জন্য বাইরে থেকে সাহায্য করা, পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে এবার যাতে এই ধরনের কোনো পরিস্থিতি না তৈরি হয় সেই দিকে নজর দিতেই যথেষ্ট কড়া বন্দোবস্ত করতে চলেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে:
মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে (Exam Center) রীতিমত হাইটেক দুর্গে পরিণত করতে চলেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সিসিটিভিতে নজরদারি চলবে, জিপিএস ম্যাপিং এর মাধ্যমে পরীক্ষা কেন্দ্রের ছবি তোলা, অ্যাপ ইত্যাদি নয়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে কমপক্ষে তিনটি সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে। প্রধান শিক্ষকের ঘর বা কন্ট্রোলরুম, পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকা এবং বেরোনোর পথ এবং যে জায়গা দিয়ে পরীক্ষার্থীরা বিভিন্ন শ্রেণীকক্ষে যাবে, সেই সমস্ত জায়গাতেই CCTV বসাতে হবে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য বিরাট সুযোগ করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সবাই খুব খুশি।
এর আগে পরীক্ষা কেন্দ্রে ভাঙচুর হলে যে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষা দিত সেই স্কুল থেকে জরিমানা নেওয়া হতো। কিন্তু এবার পরীক্ষা শুরুর আগে এবং পরে GPS অন করে ছবি তুলে রাখতে হবে। কোনো গোলমাল হলেই ছবিসহ পর্ষদকে লিখিত অভিযোগ দিতে হবে। যে সমস্ত স্কুলের পড়ুয়ারা এই ধরনের ভাঙচুরের ঘটনা ঘটাবে, সেই বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের ক্ষতিপূরণ না দিলে সেই পরীক্ষার্থীদের ফল উইথহেল্ড থাকবে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে এবার প্রথম পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকরা প্রথম দিনেও পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। সাধারণত এর আগের বছরগুলিতে দেখা যেত অভিভাবকরা শুরুর দিনটায় পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতেন। এবার তা হবে না। মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে চিকিৎসা এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশ কর্মীরা জরুরী প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না। এবার পুলিশ কর্মীদের সকাল ৮টায় প্রশ্নপত্র পৌঁছানো থেকে শুরু করে উত্তর পত্র বেরোনো পর্যন্ত উপস্থিত থাকতে হবে।
জানা যাচ্ছে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ৩০০০ স্কুলকে পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে। পৌনে ১০ লক্ষ পরীক্ষার্থী হবে এটা ধরে নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার দিনগুলোতে অ্যাপের মাধ্যমে পর্ষদ প্রতিনিধির দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডিশনাল ভেনু সুপারভাইজাররা নজরদারি চালাবেন। সেই App পর্ষদ তৈরি করেছে। এতদিন SMS এ এই নজরদারির কাজ চালানো হতো।
এই বিষয়ে পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পরীক্ষার আয়োজন গোপন ব্যাপার। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার মত পরিস্থিতি এখনো হয়নি। কিছু জেলা যেমন মুর্শিদাবাদ, মালদা এবং উত্তর দিনাজপুরে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলি পর্ষদের কাছে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের। সেটা একাধিক কর্তারাও মেনে নিচ্ছেন। এই পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে সাত দিন আগেই পর্ষদের মনিটরিং টিম পরিদর্শন করে স্কুল সম্পর্কে রিপোর্ট দেবে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ৮ তারিখ স্কুলে যেতে হবে, কি কারন দেখুন।
যাতে কোনো সমস্যা থাকলে পুরো পরীক্ষা শুরুর আগে মিটিয়ে ফেলা যায়। এই প্রসঙ্গে শিক্ষা মহলের একাংশের কথায়, পর্ষদের এই সিদ্ধান্ত প্রাথমিক টেটের আয়োজন থেকে শিক্ষা নিয়েই নেওয়া হয়েছে।
Written by Rajib Ghosh.