প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি বা WBBPE Primary TET Scam নিয়ে যে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে, তাতে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা যাচ্ছে। আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI) শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডের (Primary TET Scam) তদন্ত করছে। একাধিক মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। কখনো সিবিআই এর তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি, আবার তারপরে CBI কেই গুরুত্বপূর্ণ কোন তদন্তের ভারও দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে (WBBPE Primary TET Scam) বহু টাকার লেনদেন হয়েছে, টাকা পাচার হয়েছে, OMR Sheet বিকৃত করা হয়েছে, এই সমস্ত অভিযোগে সম্প্রতি আদালত জানিয়েছে এখনো পর্যন্ত অনেকেই এই ঘটনায় অভিযুক্ত, যারা বাইরে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে সিবিআই কি ভূমিকা গ্রহণ করেছে? CBI- এর তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তুলেছে আদালত।
WBBSE Primary TET Scam Update:
এবার যে নতুন তথ্য সামনে এসেছে, তাতে রীতিমতো অবাক হওয়ার মতো ঘটনা। ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অ্যাপটিটিউড টেস্ট (TET Personality Aptitude Test) নেওয়া হয়নি। ওই অ্যাপটিটিউড টেস্ট (Aptitude Test) যে সমস্ত শিক্ষকরা নিয়েছেন বা নেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন, তাদেরকে এবার কলকাতা হাইকোর্টে তলব করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
২০১৬ সালের নিয়োগ দুর্নীতি (WBBPE Primary TET Scam) সংক্রান্ত মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে আদালতে যে হলফনামা পেশ করা হয়েছিল, সেই হলফনামা দেখে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, What is Aptitude Test? সংক্রান্ত জায়গায় বহু কথা লেখা রয়েছে। কিন্তু তার মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয় না যে, অ্যাপটিটিউড টেস্ট সমস্ত চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে নেওয়া হয়েছে। ইন্টারভিউ আর অ্যাপটিটিউড টেস্ট এক করে দেওয়া হয়েছে। অথচ ইন্টারভিউ Interview এবং অ্যাপটিটিউড টেস্ট Aptitude Test- এর জন্য আলাদা নম্বর ধার্য করা রয়েছে।
২০১৬ সালে ৫টি জেলায় যে অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে রীতিমতো ধন্দ তৈরি হয়েছে সেই জেলার ইন্টারভিউয়ারদের আদালতে তলব করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি হাওড়া, হুগলি, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার এবং মুর্শিদাবাদ জেলার ক্ষেত্রে যে সমস্ত শিক্ষকরা ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন, তাদেরকে আদালতে (Primary TET Scam) উপস্থিত থাকতে হবে। চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাপটিটিউড টেস্ট এর ক্ষেত্রে তারা কিভাবে নিয়েছিলেন, সেই বিষয়টি বিস্তারিত জানাতে হবে আদালতকে। যদিও শিক্ষকদের যাতায়াতের খরচ পর্ষদ কে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে এটাও জানা গিয়েছে, ২১ ফেব্রুয়ারি ৫ জেলার শিক্ষকরা আদালতে উপস্থিত থেকে মামলার শুনানিতে তাদের বক্তব্য পেশ করবেন। সেখানে রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলার শুনানি হতে পারে। শুধুমাত্র আইনজীবীরা ছাড়া আর কেউ থাকতে পারবেন না। ওই শুনানি ক্যামেরাবন্দি করা হতে পারে বলেই জানা গিয়েছে। আর শুনানিতে সন্তুষ্ট না হলে সমস্ত শিক্ষকদের ডাকার হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে আদালতের প্রশ্ন, ২০১৬ সালে প্রায় ৪৩ হাজার শিক্ষকের যে প্যানেল সেখানে কোনো অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি। ফলে যে সমস্ত শিক্ষকরা ইন্টারভিউ নিয়েছেন, তাদেরকে হাইকোর্টে এসে অ্যাপটিটিউড টেস্ট সম্বন্ধে বিস্তারিত জানাতে হবে। কোন জেলা থেকে কতজন শিক্ষককে তলব করা হয়েছে, যারা এই ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দেখে নেওয়া যাক, হুগলী জেলায় ১০ জন, কোচবিহার জেলায় ১০ জন, উত্তর দিনাজপুর ১২ জন এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় ৬ জন শিক্ষককে তলব করা হয়েছে। হাওড়ার ক্ষেত্রে সংখ্যাটা এখনো জানা যায়নি।
মোবাইলে রিচার্জ না থাকলেও এবার থেকে করা যাবে ভয়েস ও ভিডিও কল।
আদালতের তরফে পর্ষদকে জানানো হয়েছে, দূরের জেলার যে সমস্ত শিক্ষকরা আসবেন তাদের আসা-যাওয়ার খরচ হিসেবে ২০০০ টাকা এবং কাছাকাছি জেলার যে শিক্ষকরা আসছেন তাদের ৫০০ টাকা করে দিতে হবে।
২০১৬ সালের নিয়োগ দুর্নীতি (WBBPE Primary TET Scam) সংক্রান্ত মামলায় এবার এই অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ৪৩ হাজার শিক্ষকের চাকরি নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়ে গেল। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আদালতের শুনানিতে কি হয়, সেদিকেই নজর এখন সকলের।
Written by Rajib Ghosh.
বিনামূল্যে মেডিকেল স্টোর এর ব্যবসা করে লাখ টাকা আয় করুন, লাইসেন্স হবে সহজেই।