WB Primary TET – প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দারুন সুখবর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী, আর উচ্চপ্রাথমিকের ব্যাপারে কি বললেন দেখুন।

রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ (WB Primary TET) নিয়ে বিতর্ক ও আন্দোলনের মধ্যে সুখবর দিলেন শিক্ষামন্ত্রী। গতকাল শিক্ষা বিষয়ক একটি ভিডিও টক শো তে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের স্থান স্পষ্ট করলেন ব্রাত্য বসু। শিক্ষক ও অধ্যাপক নিয়োগ নিয়ে তার বক্তব্য, আন্দোলন, মামলা, দীর্ঘ শুনানি, বিক্ষোভ, শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি বার বার আলোচনায় উঠে আসে। গোটা প্রক্রিয়াকে চারটি ভাগে ভাগ করেন শিক্ষামন্ত্রী, প্রাথমিকের টেট, উচ্চপ্রাথমিকের টেট, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষক নিয়োগ ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে কলেজে শিক্ষক নিয়োগ।

এদিন তিনি বলেন, প্রাথমিকে পুজোর আগেই চার হাজার নিয়োগ হয়েছে। যেমনটা মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, পুজোর পরেও তেমন ভাবেই আরও ১ হাজার ৭০০ নিয়োগ হবে। সমস্যা হচ্ছে উচ্চতর প্রাথমিকের নিয়োগের ক্ষেত্রে। এ ক্ষেত্রে ১২ হাজার নিয়োগ দিতে রাজ্য সরকার বদ্ধ পরিকর। স্কুল শিক্ষা দপ্তরের ১২ হাজার চাকরি আমাদের হাতে আছে, শুধু দিতে পারছি না। আদালতে মামলা চলছে। আমরা বলেছি, আদালত যে ভাবে বলবে, আমরা সে ভাবেই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাব। শুধু দুটি বিষয় মাথায় থাকবে, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতা। এই দুটোকে আমরা প্রাধান্য দেব।

তিনি আরও বলেন, একটা শুনানি চলছে, সেই শুনানি শেষ হবে। যে মুহূর্তে আদালতে শুনানি শেষ হবে, তখন আদালত যদি নির্দেশ দেয় আপনারা নিয়োগ করতে পারেন, তা হলে নিয়োগ হবে। মনে রাখতে হবে, নিয়োগ কিন্তু শিক্ষা দফতর করে না, শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও স্কুল শিক্ষা আয়োগ নিয়োগপত্র দেয়। আমরা দফতরের দিক থেকে বলতে পারি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বলেছেন, সেই কথা মতো যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার উপর নির্ভর করে নিয়োগ করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে আমরা জেলা স্কুল পরিদর্শকদের (DI) থেকে শূন্যপদের তালিকা নেওয়া হচ্ছে। সেখানেও পাঁচ থেকে ছয় হাজার শিক্ষক নিয়োগ হবে। এছাড়াও শিক্ষক নিয়োগের মামলা নিয়ে ব্রাত্য বসু বলেন, শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি দীর্ঘ দিন ধরে মামলা, ক্ষোভ, বিক্ষোভ, অনশন, অবস্থান সব কিছুই দেখেছে। একের পর এক মামলার শুনানিও চলেছে দীর্ঘ দিন ধরে। একাংশ সংগঠিত ভাবে মামলাতে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ মামলাতে যেতেই পারেন, তাঁদের অধিকার আছে। কিন্তু আমরা আমাদের দিক থেকে স্বচ্ছ থাকছি। এই যে অনেকে আন্দোলন করছেন, হয়তো ১০০, ২০০ লোক আন্দোলন করছেন, তার বাইরে থেকে কিন্তু ৬০ থেকে ৭০ হাজার লোক আছেন। মামলার সাথে সাথে প্রাথীদের ভবিষ্যৎ গঠনেও বিলম্বিত হচ্ছে। এই ধারনাটা করলে চলবে না যে, আন্দোলন করলেই চাকরি পাবেন, আর আন্দোলন না করলে পাবেন না। আন্দোলন করা মানেই আপনি যোগ্য, যাঁরা করছেন না তাঁরা অযোগ্য, এমনটা নয়। যোগ্যতার মাপকাঠি টেট এবং একাডেমিক কোয়ালিফিকেশন।

এছাড়াও, ডিএলএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়োগ নিয়ে এদিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, যাঁরা ডিএলএড প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তাঁদের সবাইকে কেন নিয়োগ করা হচ্ছে না? যাঁরা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, তাঁরাই সকলেই চাকরি পাবেন, তার তো কোনও মানে নেই। তার জন্য কাউন্সেলিং হবে। ডিএলএড প্রশিক্ষণটা বাধ্যতামূলক, কিন্তু তার পর তো বাছাই হবেই। একটি চাকরিতে যদি ১০টি পোস্ট থাকে, আর ১০০ জন আবেদন করেন, তা হলে তো ১০০ জনই চাকরি পেয়ে যান না। তার একটা বাছাই প্রক্রিয়া থাকে। কিছু লোক চাকরি পান, কিছু লোক পান না। এটা সারা পৃথিবীতেই সত্য। এ ক্ষেত্রেও আমরা স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা বিচার করে, মহামান্য আদালত যে ভাবে বলবে, সেই ভাবে নিয়ম মেনে আয়োগকে বলব নিয়োগটাকে সুষ্ঠু ভাবে ত্বরান্বিত করুন।

আরও পড়ুন, কবে নিয়োগ শুরু, তারিখ জানুন

অন্যদিকে কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কলেজ সার্ভিস কমিশনের ক্ষেত্রেও জানুয়ারিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। সবার ক্ষেত্রে সাম্য বজায় রাখা হবে। সেই নোটিশও খুব শীঘ্রই প্রকাশিত হবে। আমাদের চাকরি দেওয়ার অধিকার আছে, আমরা চাকরি দেবই। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, আমরা আগেই কথা দিয়েছি, শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার দিকে অবশ্যই নজর দেওয়া হবে। আর মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মত ধাপে ধাপে একের পর এক নিয়োগ হবে।

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!

Leave a Comment