সম্প্রতি রাজ্যে এবার কনস্টেবল নিয়োগে (Constable Recruitment) তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এতদিন পর্যন্ত নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিতর্ক শিক্ষক শিক্ষিকা, গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছিল। কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে সম্প্রতি কনস্টেবল পদে নিয়োগের নতুন প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে। আর যার কারণেই চাকরি হারাতে পারেন অনেক পুলিশ কর্মী। কিন্তু কেন এমন হল? এখন উপায় কী?
WB Constable Recruitment Scam
কনস্টেবল নিয়োগ দুর্নীতি
২০১৯ সালের ৩ রা ফেব্রুয়ারি ৮৪১৯ টি পদে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ (Constable Recruitment) এর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড। এরপর ৪ ঠা আগস্ট পুলিশ কনস্টেবল পদের পরীক্ষা হয়। আর ২০২০ সালের ১৫ ই অক্টোবর এই পরীক্ষারই চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ পেয়েছিল। মেধা তালিকা প্রকাশ পাওয়ার পর খুশি হয়েছিলেন অনেকেই। তবে এই খুশি দীর্ঘস্থায়ী হল না। দেখা যাচ্ছে এই মেধা তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রেও অনিয়ম হয়েছে। যার ফলে ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাডমিনিস্ট্রেটেড ট্রাইব্যুনালে ২০২১ সালের ১০ ই মার্চ মামলা করা হয়েছিল।
২০১৯ সালে শুরু হওয়া এই কনস্টেবল নিয়োগ (Constable Recruitment) প্রক্রিয়ায় মোট ২ টি মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম মেধা তালিকাটি প্রকাশ করা হয় ২০২১ সালের ২৬ শে মার্চ। যা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন মামলাকারীরা। পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের বিরুদ্ধে তাঁরা মামলা করেন ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালে। ট্রাইবুনাল পুলিশ কনস্টেবলদের নিয়োগ সংক্রান্ত ত্রুটি শুধরানোর নির্দেশ দিয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডকে।
এর পরেই প্রকাশিত হয় Constable Recruitment এর দ্বিতীয় মেধা তালিকা। ২০২২ সালের ২৪ শে ফেব্রুয়ারি সংরক্ষণের নিয়ম মেনে সেই তালিকা প্রকাশ করা হয়। নতুন করে চাকরিও পান অনেকে। কিন্তু বুধবার কলকাতা হাই কোর্ট এই দ্বিতীয় তালিকাটি খারিজ করে প্রথম তালিকাটিকেই মান্যতা দিয়েছে।
তবে এসসি ও এসটি সহ সংরক্ষিত ক্যাটাগরির যে সমস্ত প্রার্থীরা জেনারেল ক্যানডিডেটদের তুলনায় বেশি নম্বর পেয়েছে তাঁদের জেনারেল হিসেবেই চাকরি গ্রহণ করতে হবে এমন মামলা করা হয়েছিল। কিন্তু এই আইনের বিরোধিতা করেছে বেশ কিছু সাধারন পরীক্ষার্থী। তাঁরা স্যাটে মামলা করেছিলেন। এই মামলার ভিত্তিতে ২০২২ সালের ২৮ শে জানুয়ারি স্যাটে রায় দিয়েছিল।
সেই রায় অনুযায়ী সংরক্ষিত আসনের উক্ত পরীক্ষার্থীদের নাম সাধারণ তালিকা থেকে সরিয়ে সংরক্ষিত তালিকায় পাঠানো হয়। এরপর ট্রাইবুনাল নির্দেশ দিয়েছে ৪ সপ্তাহের মধ্যে নতুন প্যানেল প্রকাশ করার। এই নতুন প্যানেলে সংরক্ষিত প্রার্থীদের তালিকা আলাদা করে প্রকাশ করতে হবে।
আরোও পড়ুন » WBBPE প্রাইমারী টেট এর মামলা থেকে রেহাই পেলেন প্রাথমিক শিক্ষকেরা। অবশেষে বেঁচে গেল চাকরি।
সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের আর্জিতে অবশ্য সাড়া দেয়নি ট্রাইবুনাল। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মামলা করেছিল সংরক্ষিত তালিকার নিচের দিকে থাকা বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। এই মামলার রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে হয়ত নতুন নিয়োগ প্যানেলও বাতিল হতে পারে। যে কারণে চাকরি হারাতে পারেন কয়েক’শ কনস্টেবল।