Swasthya Sathi: স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের টাকা ও সুবিধা কমালো রাজ্য সরকার। এখন থেকে আর এই সুবিধা পাবেন না

রাজ্যের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প (Swasthya Sathi Health Insurance Scheme) নিয়ে পশ্চিমবঙ্গবাসীদের জন্য জরুরী বার্তা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উদ্যোগে চালু হয়েছিল এই প্রকল্প। উদ্দেশ্য ছিল গরিব অসহায় মানুষদের চিকিৎসায় সাহায্য করা। আর এই প্রকল্পের (Free Health Insurance) জনপ্রিয়তা ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কারণে সারা দেশে আলোড়ন ফেলেছিলো, যা আজও বর্তমান। এই প্রকল্পের কারণে অনেকেই জটিল অপারেশন সম্পূর্ণ বিনা খরচায় করতে পেরেছেন। তবে বর্তমানে এই প্রকল্পের আওতায় অর্থসাহায্য কম করতে চলেছে রাজ্য সরকার। আগে যা পাওয়া যেত তার অর্ধেক টাকা দেওয়া হবে এরপর থেকে। আর এই ঘোষণা শুনে স্বাভাবিকভাবেই মাথায় হাত গরিব মানুষের। কোন খাতে অর্থ বরাদ্দ কমলো বিস্তারিত জেনে নিন।

West Bengal Swasthya Sathi Health Insurance Benefits

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা কমল

স্বাস্থ্য সাথীর আওতায় রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা বা Health Insurance দেওয়া তো হয়েই, সেই সঙ্গে বাড়তি সুবিধা হিসেবে রোগীরা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার জন্যেও পরিবহণ ভাতা পেয়ে থাকেন। আগে যদি রোগীর বাড়ি ও হাসপাতাল একই জেলায় থাকত, তাহলে ৪০০ টাকা, আর বাইরের জেলায় থাকলে ৬০০ টাকা দেওয়া হত। তবে এবার থেকে সেই পরিবহন ভাতাই কমিয়ে অর্ধেক করা হল, অর্থাৎ সর্বোচ্চ ২০০ টাকা করে দেওয়া হবে এরপর থেকে।

কী কারণে এই পরিবর্তন?

২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের দায়িত্ব সরাসরি রাজ্য সরকারের হাতে চলে আসে। আগে এটি পরিচালিত হত বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে। প্রকল্পটি ইনসিওরেন্স মোড থেকে অ্যাসিওরেন্স মোডে স্থানান্তরিত হওয়ার পর থেকেই খরচ কমানোর বিষয়ে সরকার বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবেই পরিবহণ ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে পরিবহণ ভাতা বাবদ হাসপাতালে ৪০০ টাকা পাঠানো হত। এর মধ্যে ২০০ টাকা রোগীর পরিবার পেত এবং বাকি ২০০ টাকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হত। তবে নতুন নিয়মে এটি ২০০ টাকাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

আরও পড়ুন, মাসে মাসে পাবেন 2100 টাকা! লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো নতুন প্রকল্প আনল মোদি সরকার

এর ফলে কি অসুবিধা হল?

স্বাস্থ্য সাথীর পরিবহণ ভাতা কমানোর ফলে কী কী প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে।

১) রোগীর যাতায়াত খরচ বৃদ্ধি: গ্রামীণ এলাকা থেকে শহরে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীদের খরচ অনেকটা বেড়ে যাবে।
২) পরিষেবায় ঘাটতির আশংকা: কম ভাতার কারণে কিছু মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করতে বাধাগ্রস্ত হতে পারেন।
৩) প্রতিক্রিয়া: সরকারের দিক থেকে খরচ কমলেও, প্রকল্পের প্রতি মানুষের আস্থা কিছুটা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন, কল্পতরু মোদী সরকার। সব শর্ত উঠে গেল। এবার টাকার দরকার হলেই কাগজপত্র ছাড়াই একাউন্টে টাকা ঢুকবে।

জনগণের প্রতিক্রিয়া

এই সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ এবং বিশেষজ্ঞ মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই পরিবর্তন রোগীদের জন্য আর্থিকভাবে আরও চাপ সৃষ্টি করবে। বিশেষত যেসব রোগী দূরবর্তী গ্রাম বা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শহরের হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন, তাদের যাতায়াতের খরচ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে রাজ্য সরকার এই পদক্ষেপকে যুক্তিযুক্ত মনে করছে। সরকারি দাবি, স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে যথেচ্ছ খরচ এবং দুর্নীতি বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত বছর ডিসেম্বরে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় প্রকল্পের টাকার অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। সেই সময় তিনি প্রকল্পের টাকার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে ডাবল চেকিংয়ের নির্দেশ দেন (Swasthya Sathi card status check online) এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
Written by Nabadip Saha.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!