সিভিক ভলেল্টিয়ারদের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর, কিভাবে প্রোমোশন পাবেন, জেনে নিন।
সিভিক ভলেল্টিয়ারদের জন্য সুখবর। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের তরফে রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজকর্ম সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়। সেখানে সিভিক ভলেল্টিয়ারদের কাজকর্ম (Civic Volunteer) সম্পর্কে রাজ্য পুলিশের তরফে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয় হাইকোর্টে। আর তারপরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি ভবিষ্যতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজের সুযোগ কমে যাবে? তাদের কি কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে?
এবার সেই বিষয়েই খোলসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন সিভিক ভলেল্টিয়ারদের কাজের ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি হবে না। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি সিভিক ভলেল্টিয়ার এর পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া হবে। পূর্ব মেদিনীপুরের এক সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সমস্ত দপ্তরের সচিবদের উদ্দেশ্যেই এই কথা জানিয়ে দেন। তিনি বক্তব্যে এও বলেন, সকলকেই জানাবো, ভিলেজ ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগাতে হবে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগান।
সম্প্রতি বাঁকুড়ায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের একটি প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের পড়ানোর প্রশাসনিক নির্দেশিকা ঘিরে রাজ্যজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এই বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। আর সেখানেই হাইকোর্টের তরফে সিভিক ভলেল্টিয়ারদের কাজের বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়। রাজ্য প্রশাসন হাইকোর্টে সেই তথ্য দাখিল করে। রাজ্য সরকার নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়ে দেয়, আইনশৃঙ্খলাজনিত কোনো কাজেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের যুক্ত করা হবে না। শুধুমাত্র ট্রাফিক সামলানো এবং পার্কিং নিয়ন্ত্রণের মতো কাজেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের যুক্ত করা হবে।
ফলে এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে সিভিক ভলেল্টিয়ারদের কাজের পরিধি কি কমতে চলেছে? সিভিক ভলান্টিয়াররা পরবর্তীতে কি কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন? এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিভিকদের আশ্বস্ত করে জানান, আগে এই নিয়ম ছিল না, কোনো সিভিক ভলান্টিয়ার মারা গেলে তার পরিবারের কেউ চাকরি পাবে। সেটা আমরা করে দিয়েছি। সকলের জন্যই করা হয়েছে।
আরও পড়ুন, বিনামূল্যে রেশনের মাধ্যমে অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন রাজ্যবাসী, চিনি, ময়দা সহ আর কি কি পাবেন জেনে নিন।
পাশাপাশি, মমতা সিভিক ভলেল্টিয়ারদের উদ্দেশ্যে আশ্বাস দিয়ে বলেন, সিভিক ভাই-বোনেরা জেনে রাখো, আগামী দিনে ধীরে ধীরে তোমাদের অনেক উন্নতি হবে। তোমাদের একটা কোটা করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে কনস্টেবল করা হবে, পার্মানেন্ট ও প্রোমোশন হবে। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। আর তার আগেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে যথারীতি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বক্তব্য পেশ করতে শুরু করেছে।
বিজেপির তরফে বলা হয়েছে, সিভিক এবং ভিলেজ পুলিশ শাসকদলের ক্যাডার। পঞ্চায়েতে মনোনয়ন করতে না দিয়ে এদের দিয়েই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল জিততে চাইছে। যাতে দলীয় কাজে সিভিকদের ব্যবহার করা যায় তাই মুখ্যমন্ত্রী এই কথা জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য সরকার নির্দেশিকা দিয়েই জানিয়ে দিয়েছে, সিভিকরা কি কাজ করবেন? তাই এই নিয়ে অযথা রাজনীতি করার কোনো অর্থ নেই।
মহিলাদের জন্য দুর্দান্ত সরকারি প্রকল্প, রকেট গতিতে বাড়বে টাকা
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই সিভিক ভলেল্টিয়ার নিয়োগ শুরু হয়। পুলিশ প্রশাসনকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে সিভিক ভলান্টিয়াররা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আর যথারীতি নিয়ম মেনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সিভিক ভলান্টিয়ারদের শাসক তৃণমূলের হয়ে কাজ করতে দেখা যায় বলে বিরোধিতা শুরু করে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের কোন কোন কাজে লাগানো হবে, মুখ্যমন্ত্রী সেই বিষয়টি সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে বলেননি।
এই প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) মানব কুমার সিংঘল বলেন, সভামঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজ নিয়ে কিছু কথা বলেছেন। এটা নিয়ে লিখিত কোনো নির্দেশিকা এখনো আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি। তবে সম্প্রতি হাইকোর্টে সিভিকদের প্রসঙ্গ ওঠায় যে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছিল, সেই বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে সিভিক ভলেল্টিয়ার দের দৈনিক পারিশ্রমিক অনেক কম হলেও একাধিক বার ভাতা বাড়িয়েছেন। আর সম্প্রতি ও ভাতা বাড়ানো হয়েছে। আর এবার স্থায়ীকরনের সুযোগ পেয়ে, নয়া উদ্যমে কাজ করবেন সিভিক ভাইয়েরা।
Written by Rajib Ghosh.