পশ্চিমবঙ্গের সেরা ৫ স্কলারশিপ প্রোগ্রাম।
পশ্চিমবঙ্গের স্কুল পড়ুয়ারা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করলে এই 5টি স্কলারশিপ (Top 5 Scholarship) এ আবেদন করলেই নগদ টাকা পাবেন।
পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে মে মাসের ১৫ থেকে ১৭ই মে এর মধ্যে চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ। মাধ্যমিকের ফলাফল বেরোলেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ করা হবে। সাধারণ স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের পাশাপাশি, মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেও অনেক স্কলারশিপে আবেদন করতে পারবে পড়ুয়ারা। মূলত মেধাবী কিন্তু দুঃস্থ পড়ুয়ারা যাতে ভবিষ্যতে তাদের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, সেই কথা মাথায় রেখেই এই প্রতিবেদনে 5 টি স্কলারশিপের ব্যাপারে আলোচনা করা হল। এখানে আবেদন পদ্ধতি, যোগ্যতা ইত্যাদি সমস্ত ব্যাপারে জানতে এই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
১) জি.পি বিড়লা স্কলারশিপ
এই স্কলারশিপটি দেশের জনপ্রিয় বেসরকারি স্কলারশীপ গুলির মধ্যে অন্যতম।
যোগ্যতাঃ
এই স্কলারশিপে আবেদন করতে গেলে দেশের যেকোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে নূন্যতম 80 শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে থাকতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের।
এর সাথে, আবেদনকারী পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক মোট আয় 3 লক্ষ টাকার কম হতে হবে।
পড়ুয়াকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
টাকার পরিমাণঃ
জি পি বিড়লা স্কলারশীপের আওতায় পড়ুয়াদের একটি অ্যাকাডেমিক ইয়ারে সর্বোচ্চ 50,000 টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকে।
আবেদন পদ্ধতিঃ
এই স্কলারশিপে অনলাইন ও অফলাইন এই দুই মাধ্যমেই আবেদন করা যায়। যারা ঘরে বসে অনলাইনে আবেদন করতে চান, তারা স্কলারশিপের ওয়েবসাইটে গিয়ে, আবেদন লিঙ্কটিতে ক্লিক করে আবেদন করুন।
অন্যদিকে যারা অফলাইনে করতে চান, তারা ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করে তা সঠিকভাবে পূরণ করে এবং তার সাথে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংযুক্ত করে একটি মুখ বন্ধ খামে ভরে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন।
২) টাটা স্কলারশিপ
যোগ্যতাঃ
এখানে বিভিন্ন স্তরের প্রার্থীরা আবেদন করতে পারেন। প্রতিটি স্তরের জন্য আলাদা আলাদা করে যোগ্যতা চাওয়া হয় এখানে।
(1) উচ্চ মাধ্যমিক স্তর– এই পর্যায়ে আবেদন করতে গেলে পড়ুয়াদের মাধ্যমিকে নূন্যতম 60 শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকতে হবে।
(2) স্নাতক স্তর (এর মধ্যে অনার্স/নার্সিং/প্যারাডিক্যাল/ইঞ্জিনিয়ারিং/ডিপ্লোমা ইত্যাদি কোর্সগুলো রয়েছে) – এই পর্যায়ে আবেদন করতে গেলে পড়ুয়াদের উচ্চ মাধ্যমিকে নূন্যতম 60 শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকতে হবে।
(3) স্নাতকোত্তর স্তর – এই পর্যায়ে আবেদন করতে গেলে পড়ুয়াদের স্নাতক অর্থাৎ গ্র্যাজুয়েশনে নূন্যতম 60 শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকতে হবে।
(4) পলিটেকনিক স্তর- এই পর্যায়ে আবেদন করতে গেলে পড়ুয়াদের মাধ্যমিক এবং/অথবা উচ্চ মাধ্যমিকে নূন্যতম 60 শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকতে হবে।
টাকার পরিমাণঃ
এই স্কলারশিপের আওতায় পড়ুয়াদের একটি অ্যাকাডেমিক ইয়ারে সর্বোচ্চ 9,500 টাকা দেওয়া হয়ে থাকে।
আবেদন পদ্ধতিঃ
এই স্কলারশীপে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। ঘরে বসে সহজেই অনলাইনে আবেদন করার জন্য, স্কলারশীপের ওয়েবসাইটে গিয়ে, আবেদন লিঙ্কটিতে ক্লিক করে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করুন।
৩) সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপ
যোগ্যতাঃ
এখানেও আবেদন করার জন্য বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরি রয়েছে। যোগ্যতা অনুয়ায়ী নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন পড়ুয়ারা।
(1) ক্যাটগরি A- এখানে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে নূন্যতম দ্বাদশ পাঠরত হতে হবে।
আবেদনকারী পড়ুয়া যদি পুরুষ হন, তবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় নূন্যতম 70 শতাংশ নাম্বার এবং আবেদনকারী পড়ুয়া মহিলা হলে তাকে মাধ্যমিকে নূন্যতম 65 শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করে থাকতে হবে।
(2) ক্যাটাগরি B- এখানে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে কোনো সরকারী অথবা বেসরকারী ITI এ পাঠরত হতে হবে।
আবেদনকারী পড়ুয়া যদি পুরুষ হন, তবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় নূন্যতম 50 শতাংশ নাম্বার এবং আবেদনকারী পড়ুয়া মহিলা হলে তাকে মাধ্যমিকে নূন্যতম 40 শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করে থাকতে হবে।
(3) ক্যাটাগরি C- এখানে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে গ্র্যাজুয়েট অথবা পোষ্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্সে পাঠরত হতে হবে।
আবেদনকারী পড়ুয়া যদি পুরুষ হন, তবে পূর্ব পরীক্ষায় নূন্যতম 65 শতাংশ নাম্বার এবং আবেদনকারী পড়ুয়া মহিলা হলে তাকে পূর্ব পরীক্ষায় নূন্যতম 60 শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করে থাকতে হবে।
(4) ক্যাটাগরি D- এখানে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে যে কোনো ডিপ্লোমা কোর্সে পাঠরত হতে হবে।
আবেদনকারী পড়ুয়া যদি পুরুষ হন, তবে পূর্ব পরীক্ষায় নূন্যতম 65 শতাংশ নাম্বার এবং আবেদনকারী পড়ুয়া মহিলা হলে তাকে পূর্ব পরীক্ষায় নূন্যতম 60 শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করে থাকতে হবে।
(5) ক্যাটগরি E- এখানে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে ইঞ্জিয়ারিং বা মেডিক্যাল কোর্সে পাঠরত হতে হবে।
আবেদনকারী পড়ুয়া যদি পুরুষ হন, তবে পূর্ব পরীক্ষায় অর্থাৎ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নূন্যতম 70 শতাংশ নাম্বার এবং আবেদনকারী পড়ুয়া মহিলা হলে তাকে পূর্ব পরীক্ষায় নূন্যতম 65 শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করে থাকতে হবে।
টাকার পরিমাণঃ
ক্যাটাগরি অনুয়ায়ী বিভিন্ন অঙ্কের স্কলারশিপ দেওয়া হয়ে থাকে পড়ুয়াদের। সর্বনিম্ন 500 থেকে সর্বোচ্চ 2500 টাকা অবধি মাসিক অনুদান দেওয়া হয় এখানে।
আবেদন পদ্ধতিঃ
এখানে অফলাইনে আবেদন করতে হয়। এর জন্য ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করে তা সঠিকভাবে পূরণ করে এবং তার সাথে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংযুক্ত করে একটি মুখ বন্ধ খামে ভরে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন।
৪) ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ
এটি মূলত সংখ্যালঘু স্কলারশীপ। এখানে আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত যোগ্যতা লাগবে।
যোগ্যতাঃ
এই স্কলারশিপটি পাবার জন্য
(1) OBC ক্যাটাগরির প্রার্থী হতে হবে।
(2) প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণীর পড়ুয়ারা ‘প্রি ম্যাট্রিক’ এবং উচ্চ মাধ্যমিক থেকে অন্যান্য ডিগ্রি কোর্সের পড়ুয়ারা ‘পোস্ট ম্যাট্রিক’ পর্যায়ে এই স্কলারশিপে আবেদন করতে পারবেন।
(3) এর সাথে, আবেদনকারী পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক মোট আয় 3 লক্ষ টাকার কম হতে হবে।
(4) পড়ুয়াকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
টাকার পরিমাণঃ
প্রি ম্যাট্রিক পর্যায়ে পড়ুয়াদের 1,100 থেকে 11,000 হাজার টাকা অবধি অনুদান দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, পোস্ট ম্যাট্রিক পর্যায়ে পড়ুয়াদের 10,200 থেকে 16,500 হাজার টাকা পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হয়।
আবেদন পদ্ধতিঃ
অনলাইনে আবেদন করতে হয় এখানে। এর জন্য স্কলারশিপের ওয়েবসাইটে গিয়ে, আবেদন লিঙ্কটিতে ক্লিক করে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করুন।
৫) নবান্ন এবং উত্তরকন্যা স্কলারশিপ
নবান্ন এবং উত্তরকন্যা স্কলারশিপটি একই। উত্তর বঙ্গের পড়ুয়াদের জন্য স্কলারশিপটির নাম রাখা হয়েছে উত্তরকন্যা স্কলারশিপ এবং দক্ষিণ বঙ্গের পড়ুয়াদের জন্য স্কলারশিপটির নাম রাখা হয়েছে নবান্ন স্কলারশিপ।
এখানে আবেদন করার জন্য অনেকগুলো ভাগ রয়েছে।
যোগ্যতাঃ
(1) উচ্চ মাধ্যমিক স্তর – এই পর্যায়ে আবেদন করতে গেলে পড়ুয়াদের একাদশ শ্রেণিতে 65 শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকতে হবে।
(2) গ্র্যাজুয়েট স্তর – এই পর্যায়ে আবেদন করতে গেলে পড়ুয়াদের উচ্চ মাধ্যমিকে নূন্যতম 60 শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকতে হবে।
(3) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্তর – এই পর্যায়ে আবেদন করতে গেলে পড়ুয়াদের গ্র্যাজুয়েশনে নূন্যতম 55 শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকতে হবে।
(4) আবেদনকারী পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক মোট আয় 60 হাজার টাকার কম হতে হবে।
(4) পড়ুয়াকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
টাকার পরিমাণঃ
বার্ষিক 10,000 টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে এই স্কলারশিপের আওতায়।
আবেদন পদ্ধতিঃ
এখানে অফলাইনে আবেদন করতে হয়। এর জন্য ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করে তা সঠিকভাবে পূরণ করে এবং তার সাথে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংযুক্ত করে একটি মুখ বন্ধ খামে ভরে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন।
এখানে আবেদন করতে গেলে নিজের এলাকার MLA এর সুপারিশ পত্রও প্রয়োজন হয়।
স্কলারশিপ ও পড়াশোনা সংক্রান্ত কোনও তথ্যের আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কোনও প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করুন। আর অবশ্যই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আবেদন করবেন।
Written By Antara Bannerjee.