অবশেষে SSC মামলায় অযোগ্য শিক্ষকদের ডাকতে শুরু করলো CBI. কাদের স্বস্তি, কাদের দুর্ভোগ?

গত দুই তিন সপ্তাহ ধরে SSC মামলা তথা WBSSC Scam নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে রয়েছে রাজ্য তথা সারা দেশে। আর এই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকে হাতিয়ার করেও বিরোধীরা নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে। আর এই মামলায় ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে 2016 সালের নিয়োগ প্যানেল (SSC Panel 2016) বাতিল হওয়ায় মোট ২৬ হাজার জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে চাকরি থেকে। সঙ্গে বেতনের পুরো টাকা ফেরত দিতেও নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। তালিকায় রয়েছেন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক শিক্ষিকা, গ্রুপ সি ও ডি কর্মীরাও। আর এবার সেই মামলায় চাকরি বাতিলের স্থগিতাদেশ দিলেও দুর্নীতির অভিযোগে অযোগ্য শিক্ষকদের একাংশকে ডাকতে শুরু করলো CBI তথা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

WBSSC Case Update for 26000 Cancel Teachers & Staffs.

সকলেই যে দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছিলেন এমনটা নয়। তাই যারা যোগ্য তারা সে নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court Of India) মামলা করেন। ইতিমধ্যেই এক শুনানি (SSC Case Update) মারফত সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ করে কর্মরতদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এবার ২০১৬ এর নিয়োগ প্যানেল নিয়ে বিরাট আপডেট জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। যার ফলে কার্যত সময়িক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন চাকরিহারারা। তবে সেই সাথে আগামী ১৬ই জুলাই এর আগে একে একে অভিযুক্ত শিক্ষকদের CBI দপ্তরে হাজিরার নির্দেশ আসায় নয়া টেনশন হানা দিলো চাকরি প্রার্থীদের মনে।

প্রসঙ্গত ২০১৬ এর নিয়োগ প্যানেল বাতিলের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যে কেবল চাকরিহারারা মামলা করেছেন তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (WBBSE) এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য এক সঙ্গে সব শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলে স্কুল চালাবে কারা? ছাত্র ছাত্রীদের পড়াবে কারা? তাই আদালতের কাছে তারা আর্জি জানিয়েছেন যারা যোগ্য তাদের অবিলম্বে চাকরি (SSC Case Update) দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

ইতিমধ্যে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং মোহাম্মদ রশিদের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে যে প্রথমে কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য সেই তালিকা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে হবে। এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (West Bengal School Service Commission) এর উপর। সঙ্গে CBI কেও আদালত নির্দেশ দিয়েছে তদন্তের কাজ চালাতে। নিয়োগপ্রাপ্তদের OMR Sheet এবং Personality Test এর প্রাপ্ত নম্বরকে পুনর্মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে। আর সেই তালিকা ধরে ডাকা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

ইতিমধ্যেই একটি রিপোর্ট মারফত স্কুল সার্ভিস কমিশন যোগ্য ও অযোগ্যদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করেছে (SSC Case Update) কোর্টের কাছে। বলা হয়েছে ২০১৬ এর তালিকায় (WB SSC 2016) মোট ৮,৮৬১ জন এমন চাকরিপ্রার্থীর নাম পাওয়া গেছে যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। বাকি ১৬৮৬২ জন যোগ্যতার সঙ্গে চাকরি পেয়েছিল। কিন্তু এরপর আরো কিছুটা সময় দেওয়া হয়েছে, স্কুল সার্ভিস কমিশনকে (SSC Case Update). যেহেতু এখন ভোট পর্ব চলছে তাই এর মধ্যে কোন কাজ করা সম্ভব নয়, বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। তাই আগামী 16 জুলাই পুনরায় শুনানির দিন ঘোষণা করেছে আদালত।

E Shram Card (ই শ্রম কার্ড)

তার আগে ভালো ভাবে নিরীক্ষণ করে সংশোধিত তালিকা জমা দিতে হবে কোর্টে। তার ওপর ভিত্তি করেই অযোগ্যদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করবে আদালত (SSC Case Update). সেই সঙ্গে তাদের বেতন ও ফেরত নেওয়া হবে। আর যারা যোগ্য তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে চাকরি। আর এই SSC নিয়ে আগামীদিনে সুপ্রিম কোর্ট কি নির্দেশ দেয় সেই দিকেই নজর সকলের।

অভিযুক্ত অযোগ্য শিক্ষকদের CBI তলব

‘অযোগ্য’ শিক্ষকদের এবার তলব করতে শুরু করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তথা CBI. TET পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড ও বেতন পাওয়ার নথি-সহ নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে ‘অযোগ্য’ শিক্ষকদের। সেই তালিকা ধরে ধরে প্রায় ৪৩২৭ জন ‘অযোগ্য’কে তলব করা শুরু করেছে CBI. অযোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মোট ৬টি তালিকা রয়েছে CBI এর হাতে। প্রত্যেক তালিকা থেকেই বেশ কয়েকজনকে তলব করা হয়েছে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এবং বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় CBI নোটিশের প্রতিলিপি ভাইরাল হয়েছে। যদিও EK24 News সেই প্রতিলিপির সত্যতা যাচাই করেনি।

CBI এর হাতে তালিকা কিভাবে এলো?

এবার প্রশ্ন হচ্ছে, CBI এর হাতে এই তালিকা এলো কোথা থেকে? বা এই ৪৩২৭ জন কে কিসের ভিত্তিতে ডাকা হয়েছে? সংবাদ সূত্রের খবর, OMR যাচাইকারী সংস্থা নাইসা থেকে CBI যে হার্ড ডিস্ক উদ্ধার করেছে, সেখানেই রয়েছে কারা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, কাদের OMR শীট ম্যানুপুলেশন হয়েছে তার সম্পূর্ণ তালিকা রয়েছে। কার্যত সেই তালিকা থেকেই তাদের ডাকা হয়েছে? তাই এবার হয়তো ‘কোথাও নাম নেই, কীভাবে চাকরি পেলেন?’, ‘কাকে টাকা দিলেন?’, এই ধরনের কড়া প্রশ্নের মুখে এবার পড়তে হতে পারে ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের। আর CBI এর এই জেরায় আরও নতুন তথ্য উঠে আসবে কিনা এবার সেটাই দেখার।

মহিলাদের ৫০০০ টাকা দেবে সরকার। PMMVY প্রকল্পে আবেদন করুন।

তবে যোগ্য হোক আর অযোগ্য এই ২৬০০০ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মুচলেকা দিতে হবে যে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হলে বেতন ফেরত ও চাকরি থেকে বরখাস্ত হতে পারে। এবার হাতে মাত্র আর দুই মাস তারপরেই এই সকল শিক্ষকও শিক্ষাকর্মীদের ভাগ্য নির্ধারণ হতে চলেছে। আর এই মামলা নিয়ে জুলাই মাসে যেই নির্দেশ দেওয়া হবে সেই নির্দেশই সকলকে মানতে হবে বলে জানিয়ে মহামান্য আদালত।
Written by Nabadip Saha.

টাকার প্রয়োজন হলেই সরকার দেবে। এই প্রকল্পে আবেদন করলেই ৫ মিনিটে একাউন্টে টাকা ঢুকবে।

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!

Leave a Comment