State Bank of India: অনলাইন আর্থিক জালিয়াতির জেরে স্টেট ব্যাংক কে কঠোর শাস্তি। টাকার কি হবে? কোটি গ্রাহক মহা টেনশনে।

দেশের কোটি কোটি স্টেট ব্যাংক গ্রাহকদের মাথায় হাত। অনলাইন জালিয়াতির জেরে State Bank of India এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিলো দেশের সর্বোচ্চ আদালত Supreme Court of India. আর এই খবর প্রকাশ হতেই কোটি কোটি SBI গ্রাহক চিন্তায় পড়েছেন। কারন দেশের বেশিরভাগ লোকের সবচেয়ে ভরসা ও নিরভরজগ্যব্যাঙ্কের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ভারতীয় স্টেট ব্যাংক। আর সেই ব্যাংকের নামে কোন অভিযোগ উঠলেই সভাবতই চিন্তার কারন। তবে অহেতুক উদ্বিগ্ন না হয়ে আগে বিস্তারিত জেনে নিন।

Supreme court imposes fines against State Bank of India

দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হল ভারতীয় স্টেট ব্যাংক তথা State Bank of India. বিভিন্ন সুবিধাজনক স্কিম থেকে শুরু করে লোন ফেসিলিটি দেওয়া (Instant loan) অথবা অন্যান্য ব্যাংকিং পরিষেবাতেও (Banking Service) এই ব্যাংকের নাম সবার উপরে। আর তাই স্বাভাবিকভাবেই স্টেট ব্যাংকের মতো গ্রাহক অন্য কোনো ব্যাংকের নেই। তবে এবার সেই সুনামে কার্যত ধাক্কা খেল স্টেট ব্যাংক। সাথে গ্রাহকদের জন্যেও এল বড়সড় চিন্তা। অনলাইন আর্থিক জালিয়াতি জেরে ব্যাংকের ওপর কঠোর শাস্তি চাপালো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এরপর থেকে স্টেট ব্যাংকে টাকা রাখা সুরক্ষিত তো? আজকের প্রতিবেদনটি পড়ে আসল ঘটনাটা জেনে নিন, আর জেনে সতর্ক হয়ে যান।

স্টেট ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ঘটনার সূত্রপাত ২০২১ সালে আসামের এক গ্রাহকের সঙ্গে। লুই ফিলিপ ব্র্যান্ডের একটি ব্লেজার কিনেছিলেন তিনি, যার মূল্য ছিল ৯৪ হাজার টাকা। ব্লেজারটি পছন্দ না হওয়ায় ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময় লুই ফিলিপের ওয়েবসাইট হ্যাক হয়ে যায় এবং প্রতারকরা কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি পরিচয়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা জানায়, একটি বিশেষ অ্যাপ ডাউনলোড করলে ব্লেজার ফেরত দেওয়া যাবে। গ্রাহক কথামতো অ্যাপটি ডাউনলোড করতেই তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে পুরো টাকা উধাও হয়ে যাযজো

এই ঘটনার পর গ্রাহক স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (SBI) হেল্পলাইনে যোগাযোগ করেন এবং অ্যাকাউন্ট ব্লক করার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি, তিনি স্থানীয় থানায় FIR দায়ের করেন এবং সাইবার ক্রাইম সেলেও অভিযোগ জানান। কিন্তু এতকিছুর পরও SBI এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়।

আরও পড়ুন, কল্পতরু মোদী সরকার। এবার টাকার দরকার হলেই কাগজপত্র ছাড়াই একাউন্টে টাকা ঢুকবে।

SBI এর পক্ষ থেকে প্রথমে জানানো হয় যে, গ্রাহক অসতর্কতার জন্য নিজেই দায়ী। ব্যাঙ্কের দাবি ছিল, প্রতারণাটি Google Pay-এর মাধ্যমে হয়েছে, যা একটি থার্ড-পার্টি অ্যাপ। SBI জানায়, তারা কখনোই এই ধরনের অ্যাপ ব্যবহারের পরামর্শ দেয় না। গ্রাহক অবশ্য এই যুক্তি মানতে নারাজ ছিলেন। তিনি RBI ব্যাঙ্কিং ন্যায়পাল, গুয়াহাটি হাইকোর্ট এবং শেষে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। যদিও RBI-র ন্যায়পালের কাছে হেরে যান, কিন্তু গুয়াহাটি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে ন্যায়বিচার পান।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে পুরো ৯৪ হাজার টাকা গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে বলা হয়েছে। আদালতের রায়ে স্পষ্ট, গ্রাহকের সুরক্ষার দায়িত্ব ব্যাঙ্কের, এবং এই দায়িত্বে গাফিলতি করার কোনো অধিকার তাদের নেই।

আরও পড়ুন, প্রতিমাসে 15,000 টাকা দিচ্ছে। নতুন স্কিমে কিভাবে আবেদন করবেন?

এই ঘটনাটি SBI এর মতো একটি বিশাল প্রতিষ্ঠানের সাইবার সুরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি, এটি গ্রাহকদের জন্য একটি সতর্কতা হিসেবে কাজ করবে। ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে অনলাইন লেনদেন করার সময় আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজনীয়তা এখানে স্পষ্ট। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনা দেশের অন্যান্য ব্যাংকের জন্য একটি শিক্ষা। ব্যাংকগুলোকে গ্রাহকের সুরক্ষায় আরও জোর দিতে হবে এবং অনলাইন প্রতারণা প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

তাই অনলাইন লেনদেনের সময় সতর্ক হোন। অপরিচিত অ্যাপ ডাউনলোড বা ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার আগে ভালোভাবে যাচাই করুন। আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনারই।
Written by Nabadip Saha.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!