শিক্ষকদের জন্য এবার রাজ্যে চালু হলো নতুন নিয়ম। School Teacher দের নিয়ে রাজ্য সরকার স্বয়ং উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এ ব্যাপারে। সেই সঙ্গে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নতুন নিয়মের অন্যথা যদি কোন শিক্ষক করেছেন, সঙ্গে সঙ্গে তার চাকরি কেড়ে নেওয়া হবে। ফলে এখন চরম বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন রাজ্যের শিক্ষকরা। এমনিতে বেতন বৃদ্ধি এবং পদোন্নতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা রাজ্য সরকারের কাছে দাবি তুলেছেন। কিন্তু বারবার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সরকার তাদের দিক থেকে। ফলে মনে একেবারে শান্তি নেই তাদের। এরই মাঝে এই নতুন নিয়মের ঘোষণা রাতের ঘুম কেড়ে নিল সেই সকল শিক্ষকদের। যদিও এহেন দৃষ্টান্তমূলক নিদান এর আগে দেওয়া হয়েছে কিনা মনে করতে পারছেন না শিক্ষকদের একাংশ।
School Teacher must stay within 15 KM from school.
সম্প্রতি বিহার রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে এবার থেকে প্রতিটি শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে তারা যে স্কুলে চাকরি করবেন সেই স্কুলের ১৫ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে থাকতে হবে। কোন কারনে যদি এই নির্দিষ্ট পরিমাণ অঞ্চলের বাইরে তারা পা ফেলেন তাহলে বরখাস্ত করা হবে তাদের নিজেদের চাকরি থেকে। রাজ্য সরকার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে এ ব্যাপারে একবারের বেশি দুবার বিবেচনা কিন্তু করা হবে না। যে শিক্ষক নিয়ম লঙ্ঘন করবেন তারই বিরুদ্ধে নেওয়া হবে এই কঠিন ব্যবস্থা।
রাজ্য সরকারের এরূপ নিয়ম কে অনেকেই নিন্দার নজরে দেখেছেন। এমনকি বিষয়টি আজব বলেও মনে হয়েছে অনেক ব্যক্তির কাছে। তবে নিয়ম তো নিয়ম। একবার যখন তা চালু হয়েছে শিক্ষকরা যে তার না মানলে বিপদে পড়বেন এ কথা তো বেশ স্পষ্টই বোঝা যায়। একদিকে যখন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার, শিক্ষকদের বাড়ির কাছে বদলির জন্য আলাদা করে উৎসশ্রী পোর্টাল খুলেছে। এবং গত ৪ বছরে কয়েক লক্ষ শিক্ষক নিজের বাড়ির কাছের স্কুলে বদলী হয়েছে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য বিহারে স্কুল শিক্ষকদের জন্য এরূপ কড়া নিদানে, নিন্দার ঝড় উঠছে।
বিহারের শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব কে কে পাঠক শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে এই আজব নিদান দিয়েছেন, যা শুনেই গলা শুকোচ্ছে শিক্ষকদের। বৃহস্পতিবার বক্সার জেলা পরিদর্শনে যান তিনি। সেখানে BPSC এর অধীনে সদ্য প্রশিক্ষণরত শিক্ষকদের কাছে গিয়ে উপস্থিত হন। আর সেখানেই এই ঘোষণা জানান তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন জেলা শাসক আনশুল আগরওয়াল, জেলা শিক্ষা আধিকারিক অনিল কুমার, DIET-র অধ্যক্ষ বিবেক কুমার মৌর্য, SDO কুমার পঙ্কজ।
কি কারনে এই নির্দেশ?
মুখ্য সচিব বলেন, “সব School Teacher তথা শিক্ষকরা গ্রামে থেকেই পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে সাহায্য করুন, এমনটাই চাই আমরা। কারণ গ্রামে থেকে শিশুদের পঠনপাঠনের দায়িত্ব সামলালে শরীর-মন দুই ভালো থাকবে। উপরন্তু পাওয়া যাবে গ্রামবাসীদের সম্মান ভালোবাসা। হবু শিক্ষকদের পাঠকের পরামর্শ, পোস্টিং স্কুল থেকেও মোটেই বেশি দূরে থাকা উচিত নয় তাঁদের। বরং গ্রামে থেকে স্কুলে যাতায়াত করে বাচ্চাদের পড়ালে শিশুদের ভবিষ্যতও হবে উজ্জ্বল।”
তিনি আরো বলেন, “School Teacher রা যদি বেশি করে সময় কাটান পড়ুয়াদের সঙ্গে, তবে পড়ুয়াদেরও অনেকটা সহজ হবে পড়াশোনা। তারা পড়াশোনার আবহেই থাকবে। সেই সঙ্গে যেকোনোরকম সুবিধা অসুবিধার ক্ষেত্রেই শিক্ষকরা সাহায্য করতে পারবেন তাদের। যার দরুন তারা শিখবেও ভালোভাবে।” অর্থাৎ তার কথায় স্পষ্ট হয়, সকলের ভালোর জন্যই এই অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদিও এই নিয়মে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শিক্ষকদের (School Teacher) মধ্যে
আরও পড়ুন, ATM থেকে এবার টাকা তুললেই দিতে হবে চার্জ। ব্যাংকের নতুন নিয়মে কোটি গ্রাহকের মাথায় হাত।
এদিকে প্রথমবার তার কথা শুনে বেশ হতভম্ব হয়ে পড়েন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অধ্যায়নরত School Teacher রা। এরকম আজব নিয়মকে কটাক্ষের চোখে দেখতে থাকেন তারা। এমনকি অনেকে সাফ সাফ এও জানিয়ে দেয় যে তাদের হাতে নাকি অন্য রাস্তা আছে। যদি এখানে চাকরি না হয়, তবে অন্যত্র গিয়ে চাকরি করবেন তারা। তবে পরে মুখ্যসচিব তাদের যখন বুঝিয়ে এর উপকারের কথা জানান, তখন খানিকটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তারা।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গে বদলে গেল বাড়ি ভাড়ার নিয়ম। বাড়ির মালিকের জুলুমের দিন শেষ।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে ও একটা নিয়ম আসতে চলেছে, যেখানে School Teacher দের কমপক্ষে ৫ বছর গ্রামের স্কুলে পড়াতে হবে। তবে সেই নির্দেশিকা এহেন অমানবিক নয়। এই ব্যাপারে আপনার মন্তব্য নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
শিক্ষা ও কেরিয়ার সংক্রান্ত খবর পেতে EK24 News নিয়মিত ফলো করুন।