আপনি কি বর্তমানে রাজ্য সরকারের অধীনে চাকুরীরত? তবে আপনার জন্য রয়েছে একটি সতর্কবার্তা। ৩১শে আগস্ট শেষ তারিখ। এই দিনের মধ্যে বিশেষ এক নথি জমা না করলে সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যেতে পারে আপনার বেতন। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করে এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সকল রাজ্য সরকারি কর্মী কে।
সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী রাজ্যের অধীনে কর্মরত মোট ১৩ লক্ষ চাকুরীজীবীর বেতন নিয়ে টানাটানি শুরু হতে পারে পরের মাস থেকে, যদি তারা নির্দিষ্ট নিয়ম লংঘন করেন। কাদের বেতনে পড়বে কোপ? কোন নথি জমা করতে হবে বিপদ এড়ানোর জন্য? প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়লে সব জানতে পারবেন।
কোন রাজ্যের জন্য?
উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের নতুন আদেশ নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের তাদের স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পদের বিবরণ একটি নির্দিষ্ট পোর্টালে জমা দিতে বলা হয়েছে। ৩১ আগস্টের মধ্যে এই তথ্য জমা না দিলে, ওই মাসের বেতন আটকানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে বিপাকে পড়তে পারেন প্রায় ১৩ লক্ষ সরকারি কর্মী।
উল্লেখ্য, এই আদেশ আজকের নয়, গত বছরের আগস্টে তা প্রথম জারি করা হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ কর্মচারী তখন তাদের সম্পত্তির বিবরণ জমা দিতে ব্যর্থ হন। এর পরে সরকার একাধিকবার সময়সীমা বাড়িয়েছে। কিন্তু এবার ৩১ আগস্টের সময়সীমা পূর্ণ হওয়ার পরেও সম্পত্তির বিবরণ জমা না দিলে, বেতন বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে রাজ্য সরকার।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশে মোট ১৭ লক্ষ ৮৮ হাজার ৪২৯ জন সরকারি কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে মাত্র ২৬ শতাংশ কর্মী তাদের সম্পত্তির বিবরণ জমা দিয়েছেন। এর অর্থ, প্রায় ১৩ লক্ষ কর্মচারী এখনও এই নির্দেশ পালন করেননি। মুখ্য সচিব মনোজ কুমার সিং এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “৩১ আগস্টের মধ্যে যারা সম্পত্তির বিবরণ জমা দেবেন না, তাদের বেতন বন্ধ করা হবে। শুধুমাত্র যাঁরা এই নির্দেশ মেনে চলবেন, তাঁদেরই বেতন দেওয়া হবে।”
সরকারের এই সিদ্ধান্তকে বিরোধীরা কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন। বিরোধীদের মতে, রাজ্য সরকার তার নির্দেশ কার্যকর করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এই ব্যর্থতার ফলস্বরূপ বারবার সময়সীমা বাড়িয়ে চলেছে। সরকারের এই প্রক্রিয়ার উপর প্রশ্ন তুলে বিরোধীরা বলছে, “সরকার যদি আদেশটি কার্যকর করতে পারত, তবে এতবার সময়সীমা বাড়ানোর প্রয়োজন পড়ত না।”
যদিও সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মূল লক্ষ্য দুর্নীতি প্রতিরোধ। এক বিজেপি মন্ত্রী বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দুর্নীতির প্রতি আমাদের জিরো-টলারেন্স নীতি রয়েছে। এই নীতি বাস্তবায়নের জন্যই এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
সাধারণভাবে, সরকারি কর্মচারীদের স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পদের বিবরণ জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া আগেও ছিল, কিন্তু তাতে এত কঠোরতা দেখা যায়নি। এবার রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন স্বচ্ছতা বাড়ানোর চেষ্টা, তেমনই কর্মীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্কও সৃষ্টি করেছে।
Written by Nabadip Saha.