হাসপাতাল থেকে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার রতন টাটা. গতকাল রাতে তিনি (Ratan Tata) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল সকালে রক্তচাপ জনিত কারনে হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রাথমিক ভাবে রুটিন চেক আপ করার কথা বলা হলেও বিকালে জানা যায় তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এবং গভীর রাতে সারা দেশবাসীকে কাঁদিয়ে ৮৬ বছর বয়েসে তিনি না ফেরার দেশে চলে গেলেন। তবে দেশ ও আগামী ভবিষ্যতের জন্য করে যাওয়া ১০টি কাজ সারা জীবন তাঁকে অমর করে রাখবে।
Ratan Tata: 10 Facts On India’s Most Beloved Industrialist
রতন টাটা সম্পর্কে ১০টি অজানা তথ্য
Is Ratan Tata married?
১) রতন টাটা অবিবাহিত ছিলেন। তিনি কাজ ও নানা ব্যাক্তিগত কারনে বিয়ে করতে পারেন নি। তবে তিনি নিজেই একবার বলেছিলেন, লস এঞ্জেলেসে কাজ করার সময় একবার প্রেমে পড়েছিলেন, তখন তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা হলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি।
২) টাটা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটা তাঁর পিতার ঠাকুর দাদা অর্থাৎ প্রপিতামহ। তিনি তাঁর ঠাকুমা নওইয়াজবাই টাটার কাছে বড় হন।
৩) তিনি (Ratan Naval Tata) মুম্বাইয়ে স্কুল জীবনে প্রাথমিক পড়াশোনা করেন, এরপর সিমলার স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। এবং এরপর আমারিকার নিউইয়র্ক থেকে ডিপ্লোমা পাশ করেন।
৪) ১৯৫৫ সালে ডিপ্লোমা পাশ করার ৬ বছর পর, অর্থাৎ ১৯৬১ সালে টাটা গ্রুপে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন। তবে কয়েক বছর পর তিনি আবার হার্ভার্ড এ ম্যানেজমেন্ট এর ডিগ্রী অর্জন করতে যান।
৫) বিজনেস ও আর্কিটেকচার এর ডিগ্রী অর্জনের পর তিনি ফের টাটা গ্রুপে যোগ দেন। এবং দেশের প্রয়োজনে বার বার ধসে যাওয়া সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কে তিনি আর্থিক সাহায্য করেছেন। এবং দেশের বেকার ছেলেমেয়েদের জন্য ২০০৪ সালে দেশীয় প্রযুক্তিকে আরো উন্নত করার লক্ষ্যে টিসিএস (TCS) প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া তাঁর নেতৃত্বে টাটা ইস্পাত ও বিদেশি গাড়ি নির্মাতা সংস্থা জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার দেশে গাড়ি উৎপাদন শুরু করে। এবং ব্রিটিশ সংস্থা টেটলীর সাথে যুক্ত হয়ে টাটা চা এর প্রতিষ্ঠা হয়।
৬) ২০০৯ সালে মধ্যবিত্তের জন্য লাখ টাকার গাড়ী বানানোর প্রতিশ্রুতি দেন। এবং বাংলায় না হলেও টাটা ন্যানো গুজরাতে প্রতিষ্ঠিত হয়।
৭) ভারতীয় মেধাবী পড়ুয়াদের জন্য একাধিক স্কলারশিপ চালু করেন। যার দরুন ২৮ মিলিয়ন ডলার (Ratan Tata Net Worth) শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য দান করেছেন। এবং সেই ফান্ড থেকে প্রচুর ছাত্রছাত্রী স্কলারশিপ পায়।
৮) ২০১০ সালে টাটা গ্রুপ হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল কে ৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়, যার ফলে এখন লাখ লাখ ভারতীয় পড়ুয়া সেখান থেকে ম্যানেজমেন্ট এর ডিগ্রী পাচ্ছে।
৯) ২০১৪ সালে টাটা গ্রুপ IIT Bombay কে ৯৫ কোটি টাকা অনুদান দেয়। যা শুধুমাত্র গরীব পড়ুয়াদের স্বার্থে ব্যাবহার করা হয়।
১০) শুধুমাত্র মানুষের জন্যই নয়, রাস্তার কুকুরদের জন্য ও তিনি বোম্বে শহরে কেনেল করে দিয়েছেন, যেখানে রাস্তার কুকুরদের খাবার ও থাকার জায়গা দেওয়া হয়।
তিনি শুধুমাত্র একজন শিল্পপতিই ছিলেন না। দেশের প্রয়োজনে বার বার তিনি সামনে এসেছেন। সম্প্রতি টাটা গোষ্ঠী BSNL ও Air India এর পাশে দারিয়েছে। এরকম আরো জানা অজানা অবদান রয়েছে তাঁর। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা রইলো। তাঁর প্রয়াণে ইতিমধ্যেই শোক প্রকাশ করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও সারা দেশের বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ।