আবাস যোজনায় বাড়ি কি পাবেন? জানতে হলে অবশ্যই দেখুন
আবাস যোজনার ভেরিফিকেশনের জন্য বাড়ির দোরগোড়ায় যাচ্ছেন বিডিও, এসডিও, থানার আইসি। তার আগে পৌঁছে যাচ্ছেন আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, সিভিক ভলেন্টিয়ার সহ পঞ্চায়েত কর্মীদের টিম। রাজ্যের মানুষ উৎসুক দৃষ্টিতে দেখছেন এই ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়া। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শুরু হয়েছে Bangla Awas Yojana এর বরাদ্দ বাড়ি প্রাপকদের তালিকা যাচাইকরনের কাজ।
সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, যত শীঘ্র সম্ভব প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ন্যায্য বাড়ি প্রাপকদের তালিকা তৈরি করে ফেলতে হবে। ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই আবাস যোজনার সমস্ত কাজ প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলতে হবে। আর সেই কাজের মধ্যে যাতে ফাঁক না থাকে সেই লক্ষ্যে সরকার তিনটি স্তরে এই ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এবং সেই প্রস্ক্রিয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার জন্য বরাদ্দ টাকা বন্ধ করে রেখে দিয়েছিল। কেন্দ্রের অভিযোগ, PM Awas Yojana এর নাম বদলে Bangla Awas Yojana করা হচ্ছে। তাই টাকা দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ফলক প্রতিটি জায়গায় লাগাতে হবে। তার সঙ্গে Bangla Awas Yojana এর বাড়ির প্রাপকদের তালিকায় বিরোধীদল বিশেষ করে বিজেপির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার কড়া সিদ্ধান্ত জানিয়েছে রাজ্য সরকারকে।
PM Bangla Awas Yojana এর মোট বরাদ্দ অর্থের ৬০% দেয় কেন্দ্র। ৮২০০ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। বাকি ৪০ শতাংশ দেবে রাজ্য সরকার। আর এই কেন্দ্রের ৬০ শতাংশ বরাদ্দ টাকা পেতে গেলে ১৫ দফা শর্ত পূরণ করতে হবে রাজ্যকে। তবেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা রাজ্য সরকারকে দেওয়া হবে, এমনটাই জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
LIC র একাধিক নিয়ম বদল, গ্রাহকদের ওপর কি প্রভাব পড়তে চলেছে?
আর তারপরই রাজ্যের তরফে সরকারি নির্দেশিকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা তৈরীর যাচাইকরনের জন্য প্রথমে আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, সিভিক ভলেন্টিয়ার, পঞ্চায়েত কর্মীদের দিয়ে এলাকায় ভেরিফিকেশন এর কাজ করা হচ্ছে। তারপর পরবর্তী স্তরে এই একই ভেরিফিকেশন এর কাজ করবেন BDO, SDO, থানার IC এবং DM আবাস যোজনার বাড়ি যেন ন্যায্য প্রাপকের কাছেই পৌঁছায়, সেই লক্ষ্যেই এই কাজ শুরু করা হয়েছে।
কারা পাবেন PM Awas Yojana বা বাংলা আবাস যোজনার টাকা?
ত্রুটিমুক্ত উপভোক্তা নির্বাচন বা Bangla Awas Yojana List করার জন্য যে ১৫ দফা শর্ত আরোপ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, যদি কেউ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, গীতাঞ্জলি, বাংলা আবাস যোজনা বা এই ধরনের কোনো প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে থাকেন তিনি যোগ্য নন।
পাকা বাড়ি থাকলে তিনিও এই সুবিধা পাবেন না।
আড়াই একরের বেশি কৃষি জমি বা বানিজ্যিক অকৃষি জমি থাকলে তিনিও তালিকা থেকে বাদ পড়বেন।
যন্ত্র চালিত নৌকা, কৃষির কাজে ব্যবহৃত দামী সরঞ্জাম থাকলে তিনিও যোগ্য নন।
৫০০০০ টাকার ঋণ পাওয়া যায় এরকম কিষান ক্রেডিট কার্ড, ফোন, ফ্রিজ, মোটরবাইক থাকলে তিনি এই সুবিধা পাবেন না।
মাসিক ১০ হাজার টাকার উপরে আয় হলে কিংবা আয়কর যদি দেন, তাহলে তিনি এই আবাস যোজনার সুবিধা পাবেন না।
পঞ্চায়েত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, সমস্ত শর্ত মেনেই প্রতিটি গ্রাম থেকে তথ্যভান্ডারে ৪৯ লক্ষ ২২ হাজার উপভোক্তার নামের তালিকা রয়েছে। এবার সেখান থেকে ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৮ জনকে বাড়ি দেওয়ার জন্য তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। কারো সুপারিশ চলবে না। ভুয়ো নাম থাকলে বাদ পড়ে যাবে।
সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ন্যায্য উপভোক্তার তালিকা তৈরি করতে তিনটি স্তরে ভেরিফিকেশনের কাজ হচ্ছে।
আশা কর্মী, অঙ্গনাওয়াড়ি কর্মী, পঞ্চায়েত কর্মীরা প্রথমে উপভোক্তার কাছে গিয়ে সমস্ত কিছু দেখে রিপোর্ট তৈরি করছেন। তারপরে মোট উপভোক্তার তালিকার মধ্যে থেকে ১০ শতাংশ ভেরিফিকেশন করবেন বিডিও বা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক। ৩ শতাংশ করবেন এসডিও বা মহকুমা শাসক এবং ২ শতাংশ ভেরিফিকেশন এর কাজ করবেন ডিএম বা জেলাশাসক। সর্বোপরি পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে যাতে কোনো গলদ না থাকে সেই লক্ষ্যেই চলছে এই ধরনের যাচাইকরণের কাজ। আপনাদের কোনও প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।
Written by Rajib Ghosh.