Citizenship Amendment Act বা CAA আইনে নতুন সংশোধনীতে নতুন করে সুবিধা পেতে চলেছেন শরণার্থীরা। একদিকে, কোটা আন্দোলন ইস্যুতে উত্তপ্ত বাংলাদেশ (Bangladesh News). প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের (Sheikh hasina) পর কার্যত নড়ে গিয়েছে সেখানকার সরকারের ভীত। যার কারণে অনেকেই বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে আসছেন। সেইসব রিফিউজি দের এদেশে সুবিধা করতে এবার বিশেষ উদ্যোগ নিল নরেন্দ্র মোদির সরকার। সিএএ আইনের এক নিয়মে বিরাট পরিবর্তন আনা হয়েছে সম্প্রতি। উল্লেখিত সংশোধনের ফলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা হিন্দু রিফিউজি দের এদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। যা তাদের বড়োসড়ো উপকার করবে।
CAA কি নিয়মে বদল?
উদ্বাস্তুদের দেশের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার পাস করে সিএএ আইন। যার আওতায় আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ও পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়ের সদস্যরা নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) অনুযায়ী, এই আইনের আওতায় আবেদনকারীদের আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, অথবা পাকিস্তানের কোনও সরকারি কর্তৃপক্ষের দ্বারা জারি করা নথি জমা দিতে হত, যা তাদের মূল দেশের পরিচয় প্রমাণ করত।
কিন্তু এখন সেই নিয়মকেই সংশোধন করে বলা হয়েছে, আবেদনকারীরা কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার কিংবা অন্যান্য ‘কোয়াশি জুডিশিয়াল’ সংস্থার দ্বারা জারি করা নথিও জমা দিতে পারবেন। ‘কোয়াশি জুডিশিয়াল’ বলতে এমন প্রতিষ্ঠান বোঝায় যা বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করে না, কিন্তু প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের অধীনে কাজ করে।
সংশোধিত নিয়ম অনুযায়ী আরো বলা হয়েছে, আবেদনকারীদের ধর্মের স্বীকৃতির জন্য স্থানীয় পুরোহিত বা নামকরা স্থানীয় ‘কমিউনিটি ইনস্টিটিউশন’-এর প্রদত্ত শংসাপত্র লাগবে। এই শংসাপত্র এখন বাধ্যতামূলক।
তবে, নতুন নিয়মের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলির দ্বারা জারি করা নথিও গ্রহণযোগ্য হবে। এতে করে সিএএ আওতায় নাগ’রিকত্বের আবেদন যাচাই করার সময় কোনও খামতি থাকলে সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে আরও একটি বিকল্প থাকবে।
কেন্দ্র সরকার এই ব্যাপারে কি বলছে?
বাংলার বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য বিশেষভাবে লাভজনক হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের (পূর্ব পাকিস্তান) হিন্দুরা যে পরিস্থিতিতে তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে চলে এসেছিলেন, সেই বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিবেচনা করছে। নতুন নিয়মের মাধ্যমে তারা সহজেই নাগরিকত্ব লাভ করতে পারবেন।’ এর মাধ্যমে যাঁরা প্রমাণ দেখাতে সমস্যায় পড়তেন, তাঁদের সুবিধা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এতে কি লাভ হবে উদ্বাস্তুদের?
নতুন নিয়ম ঘোষণার পরে নাগরিকত্বের আবেদনকারীরা তাদের পূর্বের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য হাতে অন্য একটি বিকল্প পেলেন যা আগে সম্ভব ছিল না। এর ফলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ অথবা পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা ছয়টি অ-মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এই আইনের আওতায় নাগরিকত্ব লাভ করতে পারবেন। এটি বিশেষভাবে CAA আবেদনকারীদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা প্রদান করবে, কারণ তাদের জন্য প্রমাণ সরবরাহের নতুন বিকল্প যুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর টোটো অবৈধ। টোটো চালাতে এই নিয়ম মানতে হবে।
তবে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (Citizenship Amendment Act) এই নতুন নিয়ম নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কিছু মহল মনে করেন, এই নিয়ম সংশোধনের মাধ্যমে আবেদনকারীদের জন্য সহজলভ্যতা বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে কিছু মানুষ এই পরিবর্তনকে বিতর্কিত মনে করছেন। সামগ্রিকভাবে, এই সংশোধন নাগরিকত্বের আবেদন প্রক্রিয়াকে আরও নমনীয় ও সহজ করে তুলবে, বিশেষ করে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য।
তথ্যসুত্রঃ বাংলা হিন্দুস্থান টাইমস।
Written by Nabadip Saha.