কম বিনিয়োগে এই সময়ের 11টি লাভজনক ব্যবসা, দোকানে কাস্টোমার উপচে পড়বে।

দেশজুড়ে কাজের অভাব সর্বত্র। আর চাকরির বাজার তো প্রায় তলানিতে ঠেকছে। তাই শিক্ষিত যুবক যুবতিরা লাভজনক ব্যবসায় নামলে চাকরির চেয়ে ভালো রোজগার করার সুযোগ থাকে। তবে বর্তমান সমসাময়িক ব্যবসা বেছে নিলে সেখানে প্রতিযোগিতা যেমন কম থাকে, তেমনি লসের ভয় কম হয়, আর অন্যদিকে রোজগার ও ভালো হয়।

অতিমারী পরিস্থিতির পর নতুন করে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়নি। তার উপরে পুরনো কাজ চলে যাচ্ছে। ফলে দিন দিন বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো বেকার সমস্যা। কারণ মানুষের আয় ঠিক থাকলে তবেই সার্বিকভাবে দেশের আর্থিক উন্নয়ন সম্ভব। আর সেখানেই শুরু হয়েছে সমস্যা। আর এর ফলে মানুষ ছোটখাটো ব্যবসা করে দিন যাপন করার চেষ্টা করছে।

কিন্তু ব্যবসার কথা মাথায় আসলেই তো হলো না কোন ব্যবসা করলে অন্ততপক্ষে দিন যাপন করার মত উপার্জন করা সম্ভব, আবার সেই লাভজনক ব্যবসার ক্ষেত্রে কতখানি পুঁজি লাগতে পারে, কিভাবে করতে হবে, এইরকম সাতসতেরো চিন্তা ভাবনা চলতে থাকে। ফলে ব্যবসা করার ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় সঠিক পথ না পেয়ে পিছিয়ে আসতে হয়। এখানে এরকমই বেশ কিছু লাভজনক ব্যবসার কথা জানানো হবে, যেখানে খুব কম পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করে হাজার হাজার টাকা মাসে উপার্জন করতে পারবেন।

যে ব্যবসার কথা জানানো হবে সেই লাভজনক ব্যবসাগুলি যেমন সহজেই শুরু করা যায়, তেমনি মূলধন লাগে একেবারে সামান্যই। কিন্তু সঠিকভাবে পরিশ্রম করে এই ব্যবসা চালাতে পারলে যথেষ্ট ভালো পরিমাণে উপার্জন করা সম্ভব। শহরাঞ্চলে ব্যবসা করার বহু সুযোগ থাকলেও গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা সামনে আসে। তাই এমন কিছু ব্যবসা নিয়ে আলোচনা হবে যেগুলো মফঃস্বল শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা করতে পারবেন। পাশাপাশি গ্রামের মানুষদেরও অনেকটাই সুবিধা হবে। এবার দেখে নেওয়া যাক কোন কোন ব্যবসা করা যেতে পারে:

কয়েকটি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়াঃ

1. Cyber Cafe Business:
একটি ছোট্ট জায়গায় কম্পিউটার, প্রিন্টার এবং ইন্টারনেট কানেকশন নিয়ে সাইবার ক্যাফে খুলতে পারেন। বর্তমানে সমস্ত কাজ অনলাইনের মাধ্যমেই করা হয়। চাকরির ফরম ফিলাপ থেকে শুরু করে ইলেকট্রিক বিল, ব্যাংকিং ক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের কাজ সহ প্রায় সমস্ত কাজই অনলাইনের মাধ্যমে করা সম্ভব। আর তাই এই কাজের মাধ্যমে মাসে একটা ভালো টাকা আয় করা সম্ভব। শহরাঞ্চলের বহু বাড়িতে কম্পিউটার, ইন্টারনেট পরিষেবা থাকলেও গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের সুবিধা খুব একটা পাওয়া যায় না। তাছাড়া শহরের অনেকের কাছে কম্পিউটার থাকলেও প্রিন্টার থাকে না। ফলে ছোট শহর ও গ্রামে যদি সামান্য কিছু বিনিয়োগ করে একটি দোকানে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ, তার সঙ্গে আনুষঙ্গিক কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে সাইবার ক্যাফে খোলা যেতে পারে।

2. Medicine Shop Business:
শহরাঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় মেডিসিন শপ বা ওষুধের দোকান পাওয়া যায়। কিন্তু একটু গ্রামাঞ্চলের দিকে গেলে হাতের কাছেই এই সুবিধা সব সময় পাওয়া যায় না। কিন্তু মানুষের ওষুধের দরকার সবসময়। তাই গ্রামের মানুষকে ওষুধের প্রয়োজনে শহরে ছুটতে হয়। এবার গ্রামাঞ্চলের মধ্যেই যদি একটি ভালো ওষুধের দোকান থাকে এবং সেখানে যদি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনগুলিতে ডাক্তার বসানো যায়, তাহলে এই ব্যবসা করে যথেষ্ট টাকা উপার্জন করা সম্ভব এবং তার পাশাপাশি গ্রামের মানুষও যথেষ্ট উপকৃত হবেন।

3. কোয়েল পাখির ব্যবসা:
কোয়েল পাখির ডিম এবং মাংসের চাহিদা বর্তমানে প্রচুর। এই পাখির দামও বাজারে খুব কম। কিন্তু অনেকেই কোয়েল পাখির ডিম এবং মাংস খেতে পছন্দ করেন। তাই কোয়েল পাখির এই লাভজনক ব্যবসা যদি শুরু করেন সেক্ষেত্রে একটা ভাল টাকা আয় করতে পারবেন। এই পাখি ডিম খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পাড়ে। আর এর পুষ্টিগুন যথেষ্টই রয়েছে। তাই ডিমের চাহিদাও রয়েছে। শহরের বাড়ির ছাদে বা গ্রামের উঠোনে বা কোনো অল্প জায়গার মধ্যে কোয়েল পাখি পালন করা সম্ভব।

স্বল্প পুঁজিতে শুরু করুন লাভজনক এই ব্যবসা। ঘরে বসে ইনকাম

4. Vegetable Business:
গ্রামাঞ্চলের মানুষের অধিকাংশ মানুষের জীবিকা হল কৃষিকাজ। ফলে গ্রামাঞ্চলেই সমস্ত সবজি চাষ হয়। আর এই লাভজনক ব্যবসা খুব সহজেই শুরু করে অল্প দিনের মধ্যে মোটা টাকা উপার্জন করতে পারবেন। গ্রামের কৃষকদের কাছ থেকে অল্প দামে লাউ, কুমড়ো, টমেটো, বিভিন্ন রকম শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, উচ্ছে, বেগুন সহ একাধিক সবজি শহরের কোনো কোম্পানি বা পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। এছাড়া গ্রামেও খুচরো হিসেবে সবজি বিক্রি করা যায়। এই ব্যবসা শুরু করতে একেবারে সামান্য মূলধন হলেই সম্ভব। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে এই লাভজনক ব্যবসা শুরু করে যথেষ্ট ভালো পরিমাণে লাভ পাবেন। আর বর্তমানে অনলাইনেও এই লাভজনক ব্যবসা করে ভালো টাকা রোজগার করা সম্ভব।

5. মুরগি পালন এবং মাছ চাষ:
অধিকাংশ মানুষের খাদ্য তালিকায় মাছ, মাংস থাকেই। ফলে যাই হোক না কেন মাছ মাংসের চাহিদা কখনোই কমবে না। যদি মুরগি পালনের সঙ্গে মাছ চাষ একসাথে করতে পারেন, তাহলে লাভের পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে। কারণ মুরগি এবং মাছ চাষ করলে মুরগির বিষ্ঠা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন। ফলে মাছের খাবার কেনার খরচ করতে হবে না। গ্রাম থেকে শহর যে কোনো জায়গায় মাছ এবং মুরগি সহজেই বিক্রি করতে পারবেন এবং টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

যারা এই কাজ করবেন তারা বাংলা আবাস যোজনার টাকা পাবেন না, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নতুন নিয়ম।

6. মাশরুম চাষের লাভজনক ব্যবসা:
বর্তমানে অনেকেই মাশরুম খেতে পছন্দ করেন। তবে শহরাঞ্চলে মাশরুম চাষের কোনো উপযুক্ত জায়গা সাধারণত পাওয়া যায় না। গ্রামাঞ্চলে মাশরুম চাষের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। এর জন্য বড় কোনো জমির দরকার নেই। ঘরের বারান্দায় বা যে কোনো ছোট জায়গায় মাশরুমের চাষ করতে পারবেন। এখানে যা বিনিয়োগ করবেন তার তুলনায় লাভের পরিমাণ বহুগুণ বেশি। সমস্ত বাজারেই মাশরুমের চাহিদা রয়েছে। ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেই লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যথেষ্ট লাভ করতে পারবেন।

7. Coaching and Computer Training Center:
স্কুল-কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশন নিতে হয় প্রতিটি ছাত্রছাত্রীকে। তাই কোচিং সেন্টার বা এরকম ধরনের কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রয়োজন হয়। একই সঙ্গে কোচিং সেন্টার এবং কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার তৈরি করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে অল্প সময়ের মধ্যে বহু ছাত্র-ছাত্রী সেখানে শিখতে আসবে। আর এর সঙ্গে যদি কোনো কারিগরি শিক্ষা বা হাতের কাজ শেখাতে পারেন সেই ট্রেনিং সেন্টারে, তাহলে যথেষ্ট বেশি পরিমাণে ছাত্রছাত্রীরা সেখানে আসবে। বিভিন্ন কারিগরি কাজের সম্ভাবনা রয়েছে। এই কেন্দ্র খুলে এই লাভজনক ব্যবসায় যথেষ্ট ভালো টাকার রোজগার করতে পারবেন।

কাল থেকে বদলে যাচ্ছে রেশন তোলার নিয়ম, কি কি জমা দিতে হবে, জেনে নিন।

8. Mobile Shop:
মোবাইল এখন সবারই প্রয়োজন। এখন আর শুধুমাত্র বিলাসিতার জিনিস নয় এটি, সবার হাতেই মোবাইল রয়েছে। ফলে ছোট শহর বা গ্রামের দিকে হাতের কাছেই মোবাইলের কোনো সমস্যা হলে দোকান পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে যদি পাড়ার ভেতরে মোবাইল রিপেয়ারিং এর কোনো দোকান করা যায় তাহলে বহু মানুষ সেই দোকানে আসবে। পাশাপাশি মোবাইল রিচার্জের সুবিধাও রাখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভালো টাকা উপার্জন করা সম্ভব। আর এই লাভজনক ব্যবসায় আপনি অনলাইনেও সামগ্রী বিক্রয় করতে পারবেন।

9. Beauty Parlour:
বর্তমান সময়ে সব মেয়েরাই নিজেকে সুন্দর করে সাজাতে চায়। আর সৌন্দর্যের প্রতি টান থেকেই অধিকাংশ মেয়ে নিয়মিত বিউটি পার্লারে যায়। তাই এই মুহূর্তে শহরাঞ্চলের পাশাপাশি কোনো গ্রামাঞ্চলেও যদি বিউটি পার্লার করা যায়। সেক্ষেত্রে যথেষ্ট ভালো টাকা উপার্জন করা সম্ভব। পাশাপাশি গ্রামের মেয়েদের বিউটিশিয়ান কোর্স করিয়েও আয় করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে যেমন উপার্জন হবে, তেমনি গ্রামের বেশ কিছু মেয়ে নিজেরাও স্বনির্ভর হতে পারবে।

Dear lottery inning Tips (ডিয়ার লটারি জেতার উপায়)

10. সার, বীজ এবং কীটনাশকের ব্যবসা:
গ্রামাঞ্চলে যেহেতু কৃষিকাজ অধিকাংশ মানুষের জীবিকা, তাই চাষের জন্য সার, বীজ, কীটনাশকের প্রয়োজন হয়। শহর থেকে অধিকাংশ মানুষ সেগুলো কিনে আনতে যান। কিন্তু গ্রামাঞ্চলেই যদি এরকম কোনো দোকান পাওয়া যায় যেখানে সার, বীজ, কীটনাশক বিক্রি হয়, তাহলে গ্রামাঞ্চলের মানুষের সুবিধা হয়। এই লাভজনক ব্যবসা করলে খুব কম সময়ের মধ্যেই ভালো টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

11. Dairy Business:
গ্রামাঞ্চলে গরু বা মহিষ পালন করেন অনেকেই। সেক্ষেত্রে এই লাভজনক ব্যবসা করেও যথেষ্ট ভালো টাকা আয় করা যায়। গরু বা মহিষের যে দুধ পাবেন তা বিক্রি করতে পারবেন। শহরাঞ্চলে মিষ্টির দোকানগুলিতে এই দুধ বিক্রি করে ভালো টাকা উপার্জন করতে পারবেন। দুধের চাহিদা সর্বত্রই। যেমন নিজের গ্রামে দুধ বিক্রি করতে পারবেন তেমনি যদি বেশি পরিমাণে দুধ সংগ্রহ করেন তাহলে শহরেও সেই দুধ বিক্রি করে টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
Written by Rajib Ghosh.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!

Leave a Comment