Most Profitable Business – কম খরচে, কম লোক বল দিয়ে লাভজনক ব্যাবসার আইডিয়া
কথায় আছে যে দ্রব্যের প্যাকেট ভালো সেই দ্রব্যের মূল্য ও চাহিদা দুটোই বেশি (Most Profitable Business)। আর আপনি যদি ভালো মানের প্যাকেট তৈরী করতে পারেন তবে ভালো কোম্পানী আপনার সাথে যুক্ত হয়ে আপনাকে ভালো অঙ্কের টাকা রোজগার করার সুযোগ করে দেবে, তাও আবার কোনও রকম পুঁজি ছাড়াই। তার জন্য আপনাকে কি কি করতে হবে, আপনার কি কি কাঁচামাল লাগবে, কোথায় পাবেন সমস্ত নিয়ে রইল বিস্তারিত বিবরণ।
কিভাবে শুরু করবেন (Most Profitable Business)
সর্বপ্রথম আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কোন ধরনের প্যাকেট তৈরি করবেন। আর তার সাথে আপনাকে তার চাহিদাটাও বুঝে নিতে হবে। আপনি যদি এলাকা ভিত্তিক ব্যাবসা শুরু করতে চান তবে আপনার জন্য সবচেয়ে লাভজনক এবং সহজ ব্যাবসা হবে মিষ্টির এবং হোম ডেলিভারির খাবারের প্যাকেট তৈরী করা। অতিমারী পরিস্থিতিতে হোম ডেলিভারির চাহিদা অনেক বেড়েছে, তাই এই ব্যাবসায় আপনাকে বেশি মার্কেটিং এর প্রয়োজন হবে না, এবং প্রতিযোগিতাও খুবই কম।
আর আপনি যদি ব্যাবসার পরিধিটা একটু বাড়িয়ে করতে চান তবে সেক্ষেত্রে জুতোর প্যাকেট, শপিং মলের প্যাকেট, শাড়ী ও জামাকাপড়ের প্যাকেট এর ব্যাবসা করতে পারেন। এক্ষেত্রে লাভ তুলনামুলক ভাবে বেশী (Most Profitable Business)। তবে সমস্যাটা হচ্ছে, জুতো, শাড়ী বা পোশাক সাধারণত ব্রান্ডেড কোম্পানী কোনও ব্রান্ডেড প্যাকেজিং কোম্পানীর কাছ থেকেই বেশী অর্ডার নেয়। আর আপনার নতুন ব্যাবসায় অর্ডার পেতে একটু সমস্যা হতে পারে। আর যদি আপনি নিজেই যোগাযোগ করে অর্ডার তুলতে পারেন সেক্ষেত্রে তো আর কিছু ভাবতেই হবে না।
তবে একদম নতুন ব্যাবসা শুরু করার সময়ে লোকাল প্রোডাক্ট দিয়ে শুরু করে একটু অভিজ্ঞ হয়ে বড় ব্যাবসায় যাওয়া উচিৎ। সেক্ষেত্রে আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিৎ, মিষ্টি এবং খাবারের প্যাকেজিং। এবং আপনি সহজেই লোকাল দোকানে প্যাকেট তৈরির অর্ডার পেয়ে যাবেন (Most Profitable Business)।
এই ব্যাবসার সুবিধাঃ
আমাদের দেশের গ্রাম বা শহর সব জায়গার শাড়ী, জুতা, মিষ্টি, খাবার এবং হোম ডেলিভারির দোকানে বিভিন্ন রকম প্যাকেটের দরকার হয়। ভালো প্যাকেজিং ছাড়া ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতি সম্ভব হয় না। উন্নত মানের প্যাকেজিং বাক্স তৈরি করে দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এই ছোট ব্যাবসাটি ভবিষ্যতে বড় কোনও সম্ভাবনা ও তৈরী করতে পারে। শুধু নিজের উন্নতিই নয়, আপনি কর্মসংস্থান ও সৃষ্টি করতে সক্ষম হবেন। (Most Profitable Business)
ব্যবসার পুঁজি / কত টাকা লাগবে?
এই ব্যাবসা ছোট থেকে শুরু করলে নামমাত্র মুলধন হলেই চলে। বলতে গেলে মুলধন লাগেই না। শুধুমাত্র একটি ফাঁকা ঘর হলেই চলবে। তবে মেশিন দিয়ে কাটিং করলে শেপ এবং ডিজাইন খুবই ভাল হয়। আর সেই মেসিনের দাম ও বেশি নয়। বর্তমান বাজারে মোট ২৫০০০ টাকার মধ্যে আপনি বোর্ড কাটিং মেদিন এবং ক্রিজ মেশিন একসাথে পেয়ে যাবেন। এবং তার সাথে ২০০০ টাকা কাঁচামাল নিয়ে প্যাকেজিং ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অর্থাৎ আপনি যদি সর্বমোট ৩০ হাজার টাকা পূজি নিয়ে ব্যাবসা শুরু করেন তবে প্রফেশনাল ভাবেই শুরু করতে পারবেন। (Most Profitable Business)
ব্যাবসার প্রশিক্ষণ
ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য সরকার বিনামুল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গে প্যাকেজিং ব্যবসাতে প্যাকেট তৈরি প্রশিক্ষণের জন্য Micro, Small & Medium Enterprises, Government of West Bengal কেন্দ্রে যোগাযোগা করতে পারেন। এবং সেখান থেকে আপনার কাছাকাছি কবে এবং কোথায় প্রশিক্ষণ হবে সেই ব্যাপারে তথ্য পাবেন। (Most Profitable Business)
প্যাকেজিং ব্যবসায় দাম সহ প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি
বোর্ড কাটিং মেশিন – মূল্য ২০,০০০ টাকা
ক্রিজ মেশিৎ – মূল্য ১৫,০০০
প্রয়োজনীয় উপকরন
কড়াই: ১ টি, চুলা: ১ টি,
স্কেল: ১ টি, গামলা: ১ টি
কাঁচি: ১ টি, বাটি: ১ টি
ব্রাশ(কাঠ): ১ টি, খুনতি: ১ টি
চৌকি: ১ টি
আনুমানিক মূল্য মোট = ১০০০ টাকা
প্রয়োজনীয় কাঁচামাল:
বোর্ড কাগজ : কমপক্ষে ৫০০ শীট – Rs. ১০০০ – ১২০০ টাকার মধ্যে,
সাদা কাগজ : কমপক্ষে ৫০০ শীট – Rs. ২৫০ – ৩০০ টাকার মধ্যে
রঙিন কাগজ : কমপক্ষে ২০০ শীট – Rs. ২০০ – ৩০০ টাকার মধ্যে
(এগুলো স্থানীয় অথবা কলেজ স্ট্রীটের কাগজের পাইকারী দোকান থেকে কিনতে হবে।)
আঠা : ১ কেজি – Rs. ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে
(স্থানীয় হার্ডওয়ারের দোকান থেকে কিনতে হবে।)
মোট খরচ = ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা।
আরও পড়ুন, নতুন ব্যাবসার আইডিয়া, আপনি ও পারবেন, সরকারী লোন পাবেন, ক্লিক করুন
বিভিন্ন রকম প্যাকেট তৈরির নিয়ম
খাবার এবং মিষ্টির প্যাকেট তৈরির নিয়ম
প্রথমেই আপনি যে দোকান বা সংস্থার প্যাকেট তৈরী করবেন তাদের দোকানের নাম, লোগো এবং অন্যান্য তথ্য তাদের পছন্দের রঙ্গীন কাগজে প্রিন্ট করে নিতে হবে। এরপর বাক্স তৈরির প্রসেস শুরু হবে। মিষ্টির বাক্স তৈরির ক্ষেত্রে নরম বোর্ড দিয়ে বাক্স তৈরি করতে হবে। (Most Profitable Business)
এরপর বাক্সের আকার অনুযায়ী শীটগুলো কাগজ কাটার মেশিন দিয়ে কেটে নিতে হবে। এরপর ক্রিজ মেশিন দিয়ে ভাঁজ করে বাক্সের দুই অংশ বাক্স এবং ঢাকনায় ভাগ করতে হয়। মিষ্টির ওজন অনুযায়ী বাক্সের সাইজ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। বাক্সের বাইরের খসখসে অংশটুকু দোকানের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন রঙের কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে দেয়া হয়। ( Most Profitable Business Ideas)
জুতার প্যাকেট তৈরির নিয়ম
আপনি যদি কোন দোকান বা কোম্পানীর কাছ থেকে প্যাকেজিং এর অর্ডার পেয়ে থাকেন তাদের নিজস্ব প্রোডাক্টের জন্য তবে তাদের দোকান বা কোম্পানির নাম ও লোগোর ডিজাইন বানিয়ে প্রিন্টিং প্রেসে বড় শীটে প্রিন্ট করে নিতে হবে। যদি অর্ডার না থাকে তবে কোন রকম ডিজাইন ছাড়াই কাটিং করতে হবে। যেমন অনেক মিষ্টির দোকানে শুধু মিঠাই কিম্বা Sweets লেখা প্যাকেট পাওয়া যায়, এগুলো রেডিমেট প্যাকেট।
এরপর জুতার বাক্সের সাইজ অনুযায়ী শীটগুলো কাগজ কাটার মেশিন দিয়ে কেটে নিতে হয়। এরপর এগুলো ক্রিজ মেশিন দিয়ে ভাঁজ করা হয়। ভাঁজ করা অংশগুলো আঠা দিয়ে জোড়া লাগানো হয়। বাক্সের দুইটি অংশ থাকে বাক্স এবং তার ঢাকনা। জুতার বাক্সগুলো সাধারণত একই সাইজের হয়ে থাকে। তবে বাচ্চাদের জুতার বাক্সগুলো আকারে ছোট হয়ে থাকে। বাক্সের বাইরের খসখসে অংশটুকু কোম্পানী বা দোকানের চাহিদা মতো রঙ্গীন কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে দিতে হবে। মনে রাখবেন বাইরের টা দেখতে সুন্দর হবে, তার দাম ও বেশি পাবেন। (Most Profitable Business Ideas)
আয় কেমন হবে?
(একদিনের খরচ)
কাগজ, আঠা বাবদ খরচ – ১৫০০ – ২০০০ টাকা।
২ জন শ্রমিক বাবদ খরচ – ৬০০ টাকা
যাতায়াত ও অন্যান্য খরচ – ১০০ টাকা।
মোট খরচ = ২২০০ – ২৭০০ টাকা।
আয় ও লাভ
একদিনে ৫০০ টি শীট দিয়ে আনুমানিক ১৫০০ টি প্যাকেট তৈরি করা যায়। প্রতিটি বাক্সের বিক্রয় মূল্য ৩ টাকা করে হলে ১৫০০ টি প্যাকেটের বিক্রয় মূল্য ৪৫০০ টাকা। ১৫০০ টি প্যাকেট তৈরি খরচ আনুমানিক ২৫০০ টাকা হলে লাভ হতে পারে আনুমানিক ২০০০ টাকা। (Business Ideas)
অর্থাৎ দিনে ২০০০ টাকা আয় হবে সমস্ত খরচ দিয়ে। মাসে ২৫ দিন কাজ হলে মাসিক লাভ ৫০০০০ টাকা। বছরে ৬ লাখ টাকা। এবার আপনি উৎপাদন বাড়ালে আয় ও বাড়বে। কেমন লাগলো আমাদের এই বিজনেস আইডিয়াটা (Business Ideas)। নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এবং আরো ব্যাবসা সম্পর্কে জানতে সঙ্গে থাকুন।
Business Ideas – বিনামুল্যে আমূলের ফ্রাঞ্চাইজি নিয়ে মাসে লাখ টাকা আয় করুন