বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। এখন মোবাইলের নেশায় হাতের স্মার্টফোনে মজে থাকে সকলে। আর অতিমারীতে স্কুল বন্ধ থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ার নেশা থেকে অনলাইন গেমের নেশায় বুঁদ আট থেকে আশি সকলেই। আর সেই সাথে স্কুল পড়ুয়ারাও অনেকক্ষণ সময় মোবাইলে কাটায়। মহামারীর পর থেকে এই মোবাইলের নেশা আরও বেড়েছে।
মোবাইলের রমরমার ফলে বই পড়ার অভ্যাসটা প্রায় চলে গিয়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে থেকে। ফলত, এই বছর থেকে স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক পঠন-পাঠন শুরু হলেও কিছুতেই পড়ায় মন বসছে না পড়ুয়াদের। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের মধ্যে মোবাইলের নেশা কাটিয়ে আবার বই পড়ার অভ্যেস ফিরিয়ে আনতে এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করল রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর।
পড়ুয়াদের মোবাইলের নেশা কাটিয়ে বইমুখী করতে নয়া নির্দেশ জারি শিক্ষা পর্ষদের।
ঠিক কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির প্রতিটি পড়ুয়ার মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে চেষ্টা করতে হবে। এর জন্য প্রত্যেকের সঙ্গে খোলামেলাভাবে কথা বলতে এবং তাদের মনে বই নিয়ে আগ্রহ তৈরি করার কথা বলা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং বাকি সহ-শিক্ষকদের।
এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে প্রতিটি স্কুলে লাইব্রেরি তৈরীর উপর জোর দিতে হবে। যে সমস্ত হাইস্কুলে এখনও গ্রন্থাগার নেই, তাদের অবিলম্বে গ্রন্থাগার তৈরি করে উপযুক্ত সংখ্যক বই রাখতে নির্দেশ দিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফর। অন্যদিকে যেসব স্কুলগুলোতে গ্রন্থাগার আছে তাদের সেটা সঠিকভাবে ব্যবহার করা ও বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে।
লাইব্রেরিতে ছোটদের পছন্দ হবে, তারা পড়তে চাইবে এমন গল্পের বই এবং কমিকস বই রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদের গ্রন্থাগারমুখী করার জন্য গ্রন্থাগারের পরিবেশ সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে ছাত্রছাত্রীরা স্বচ্ছন্দে স্কুলের গ্রন্থাগারে যায় এবং সেটি নিয়মিত ব্যবহার করে।
পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও ছেলেমেয়েরা যাতে নিয়মিত গল্পের বই পড়ে তার জন্য উৎসাহ দিতে বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকাতে। পড়া গল্পের বই নিয়ে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে আলাপ-আলোচনা করতে পড়ুয়াদের উৎসাহ প্রদানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে শিক্ষকদের।
পশ্চিমবঙ্গের কর্মীরা কবে পাবেন বকেয়া ডিএ? কি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
স্কুলে পড়ুয়ারা মোবাইল আনতে পারবে না, এবং ক্লাস চলাকালীন মোবাইল ব্যবহার করবেন না শিক্ষকেরা। শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের সামনে মোবাইল ব্যবহার করলে তাদের ও মোবাইলের মোবাইলের নেশা কমবে না।
পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ডিএ মামলা ফিরিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট! ভুলে ভরা আবেদন।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, প্রতিমাসে একজন পড়ুয়া পাঠ্যপুস্তকের বাইরে গিয়ে নূন্যতম তিনটি গল্পের বই যাতে পড়ে সেই বিষয়টির দিকেও খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। এর জন্য প্রয়োজনে মাসের শেষে যে পড়ুয়া সবচেয়ে বেশি বই পড়বে তার নাম স্কুলের নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে সবাইকে উৎসাহ দেওয়া যেতে পারে বলেও জানিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। তাতে পড়ুয়াদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি করা হবে। ফলে আরও বেশি বইমুখী হবে তারা।
Written by Antara Banerjee.