মাসের অর্ধেকেই মাইনে প্রায় শেষ! এ সমস্যা আপনার একার নয় (Home Management)! এই সমস্যা হাতেগোনা কয়েক জন ছাড়া আমাদের প্রত্যেকেরই। আর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে কম খরচে গুছিয়ে সংসার চালানো নিঃসন্দেহে কঠিন কাজ। এই কাজটি যিনি রপ্ত করতে পারেন তিনি অবশ্যয়ই প্রশংসার দাবিদার।
আর সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সামাল দিয়ে ভবিষ্যৎ জীবনে আর্থিক সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ, জরুরি চিকিৎসা, অতিথিদের আপ্যায়ন তো লেগেই আছে। এসবের মধ্যে কখনো পারিবারিক বা নিজের আলাদা চাহিদাও রয়েছে। এছাড়াও সারা বছরের ক্লান্তি, টেনশন থেকে দূরে রেখে মনের আনন্দের জন্য মাঝে মধ্যে বেড়াতে যাওয়াও দরকার। এজন্য দরকার সঞ্চয়। ভাবছেন নিশ্চয়ই, এত কিছু সামাল দিয়ে আবার সঞ্চয় করাও সম্ভব নাকি? হ্যাঁ, সম্ভব, তবে তার জন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা (Home Management)। নিজের কয়েকটি বিষয়ে হিসেব (Money Management) করে চললে নিজেই পরিবর্তন বুঝতে পারবেন।
প্রয়োজনীয়তা এবং চাওয়ার মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণ (Home Management):
লকডাউন আমাদের একটি মূল্যবান বিষয় শিক্ষা দিয়েছে, তা হলো আমরা কম জিনিস দিয়েও চালিয়ে নিতে পারি (Home Management)। কিন্তু আমরা এতকিছু সংগ্রহ করি বা জমা করি যে তার অনেককিছুই ব্যবহার করিনা। এটিই প্রয়োজনীয়তা এবং চাওয়ার মধ্যে পার্থক্য। চাওয়া হলো এমনকিছু যার অনেক কিছু্ই বাড়িতে অব্যবহৃত থেকে যায়, আর প্রয়োজনীয়তা হলো যা প্রকৃতপক্ষে ব্যবহার করি।
যেমন, আপনার পরিবারে সবার জন্য একটি টিভি হলেই চলে, কিন্তু আপনার টাকা আছে তাই আপনি পরিবারের সবার জন্যই একটি করে টিভি কিনলেন। সেটা অপচয় বা অপ্রয়জনীয় বললেও কম বলা হবে (Home Management)।
খরচের আগে সঞ্চয়:
কঠিন সময়ে কঠিন পদক্ষেপ নিতে হয়। এই সময়ে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ওয়ারেন বাফেটের বলেছেন “খরচের পর যা থাকে তা সঞ্চয় করো না, কিন্তু সঞ্চয়ের পর যা থাকে তাই খরচ করো”। আপনি যদি এই খারাপ সময় পার করতে চান তাহলে বাফেটের এই উক্তিকে আর্থিক স্লোগান করুন। Home Management
স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ:
আপনি যেভাবে সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে থাকেন, খরচের বেলাতেও তাই করুন। কোনকিছু কেনার আগে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, আজ কি এটি সত্যিই আপনার দরকার? কিংবা এর জন্য কি কয়েকমাস অপেক্ষা করা যায়? আপনার উত্তর এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণ অতিরিক্ত খরচ থেকে আপনাকে বাঁচাবে।
বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা:
আপনি যদি আয় এবং ব্যয়ের মধ্যে সমন্বয় করতে হিমশিম খান তখনই আপনাকে বাড়তি আয়ের পথ খুঁজতে হবে। নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অবসর সময়ে কোনো কাজের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এই বাড়তি আয় ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা যেতে পারে। (অনলাইনে বাড়িতে বসে মোবাইলের মাধ্যমে আয় করতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন)
সময়মতো ধার বা লোন পরিশোধ:
আর্থিক সংকটের কারণে সবাই যে বড় ভুলটি করে থাকে তা হলো নিজেদের ধার বা লোন পরিশোধ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এর ফলে যে তিনি আরও বড় বোঝা নিজের কাঁধে তুলছেন, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
এমারজেন্সি ফান্ড তৈরি করা:
সঞ্চয় ও লগ্নির পাশাপাশি একটি এমন ফান্ড রাখুন, হঠাৎ প্রয়োজন হলে যেখান থেকে টাকা খরচ করতে পারবেন।
ইনসিওরেন্স করা:
প্রথম জীবনেই যদি অন্তত দু-একটা ইনসিওরেন্স করা যায়, তা হলে পরবর্তী কালে গিয়ে অসুবিধা হয় না। কিন্তু, এই ব্যাপারটি নিয়ে অনেকেই সে ভাবে ভাবেন না।
অবসরের পরের কথা ভাবুন এখনই:
প্রথম জীবনে প্রায় প্রত্যেকেই ভাবেন, বুড়ো বয়সের জন্য সময় আছে তো। এখনই না ভাবলে সংসারের চাপ আরও বাড়লে পরে আর ভাবার সময় পাবেন না।
আগাম পরিকল্পনা:
বাজেট মাসের(Monthly Salary) শুরুতেই আলাদা রাখুন। আপনার রোজের খরচে হাত দেবেন না। অ্যাপ ক্যাব নেওয়ার চেয়ে সাধারণ বাস, ট্রেন, মেট্রোতে ভরসা রাখুন। উইকেন্ড প্ল্যানের জন্যে ইমার্জেন্সি ফান্ড নষ্ট করবেন না। বাইরে খাওয়ার পরিকল্পনা কাটিয়ে ঘরেই আয়োজন করা যেতে পারে মাসের শেষ সপ্তাহটায়। ধৈর্য ধারণ এবং ইতিবাচকতা: পরিশেষে একটি কথাই বলবো, সুখ দুঃখ মিলিয়ে জীবন, তাই এ অবস্থায় সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে এবং ইতিবাচক হতে হবে। সবসময় মনে রাখতে হবে, এই অবস্থা চিরস্থায়ী নয়। এটি শেষ হবেই। আপনি যখন খারাপ সময়ের শেষপ্রান্তে এসে পৌঁছবেন, যখন আর ভার নিতে পারবেন না, তখন অন্যের সহায়তা চাইবেন। (Home Management)