দুর্গা পুজোর শুরুতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যায়, (Durgapuja Bangladesh) কুমিল্লার নানুয়ার দিঘি এলাকায় পুজো মণ্ডপে হনুমান মূর্তির পায়ের সামনে কোরান রেখে অপবিত্র করা হয়েছে। এলাকা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গেলে তাদের দিকে এলোপাথাড়ি পাথর ছোড়া হয়। এই ঘটনার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় দুর্গাপুজো মণ্ডপে কেউ বা কারা প্রতিমা ভাঙচুর করে যায়। চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাঁশখালি এবং কক্সবাজারের পেকুয়া থেকে এ ধরনের অপ্রীতিকর খবর আসে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এও জানিয়েছে, দুর্গাপুজো মণ্ডপে হামলায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের।
এরপর সম্প্রতি বাংলাদেশের নোয়াখালীর ইস্কন মন্দিরে দুর্গা পুজোর সময়ে নতুন করে হিংসার ঘটনা। আক্রান্ত সংখ্যালঘুরা। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে প্রশ্নের মুখে হাসিনা সরকার। নোয়াখালিতে ইস্কন মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। আর এই ঘটনার পরেই দুই যুবকের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। নোয়াখালির বেগুমগঞ্জ এলাকা থেকে হিন্দু দুই ভক্তের দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। Durgapuja Bangladesh
শুক্রবার বাংলাদেশের নোয়াখালীর ইসকন মন্দির সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি মন্দিরে হামলায় চারজন নিহত এবং ৩০জন আহত হয়েছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সে দেশের বেশ কয়েকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি জায়গাতে দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল এবং প্রতিমা ভাঙচুর করার করার খবর প্রকাশিত হয়েছে৷ বাংলাদেশের হিন্দু নেতারা ঘোষণা করেছেন যে পুলিশের উপস্থিতিতে জেএম সেন হলের পূজা ভাঙচুরের প্রতিবাদে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন করবে না। পাশাপাশি ওই ঘটনায় একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে অপসারণেরও দাবি জানিয়েছেন হিন্দু নেতারা। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল বাংলাদেশ।Durgapuja Bangladesh
এই ঘটনার পর থেকেই সর্বস্তরে চলছে প্রতিবাদ। বাংলাদেশে ইতিমধ্যে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে সংখ্যালঘু বিভিন্ন সংগঠন। এভাবে ইস্কনের আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসতেই চরম অস্বস্তিতে সরকার। ইতিমধ্যে রাষ্ট্রসংঘে অভিযোগ জানানো হয়েছে ইস্কনের তরফে। যদিও এই ঘটনাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড়া হবে না। ঘটনায় দোষীদের খুঁজে বের করা হবে এবং যোগ্য জবাব দেওয়া হবে।
তবে এই বিষয়ে ভারতকেও সতর্ক করেছেন হাসিনা। তিনি বলেছেন, ভারতকেও সচেতন থাকতে হবে। তাঁর মতে, সেখানেও (ভারতে) এমন কিছু যেন না করা হয়, যার প্রভাব আমাদের দেশে এসে পড়ে। আর আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত আসে, চাঞ্চল্যকর মন্তব্য। যদিও এই ঘটনার পরেই বাংলাদেশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনাতে বাংলাদেশ কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে।Durgapuja Bangladesh
অন্যদিকে এই ঘটনার কারনে দফায় দফায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয় সারা বাংলাদেশ জুড়ে। তবে ধীরে ধীরে কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রামের পর ঢাকার সংলগ্ন জেলায় ও ছড়িয়ে পড়ছে, গতকাল শনিবার রাতে সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ প্রভৃতি জেলায় গভীর রাতে সঙ্খ্যালঘুদের বাড়িতে আক্রমন করার কথা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। এবার ভয় হচ্ছে এই হিংসা ধীরে ধীরে সারা দেশ ব্যাপী না ছড়ায়। ইতিমধ্যেই ভারতের পক্ষ থেকেও এই হিংসা বন্ধের জন্য হুসিয়ারি দেওয়া হয়েছে।