অভয়াকান্ডের পর এবার Civic Volunteer দের দায়িত্ব নিয়ে নয়া নির্দেশ নবান্নের। ভুল হলেই কড়া পদক্ষেপ

আরজি কর মেডিকেল কলেজের তরুণী ডাক্তারের মৃত্যুতে প্রধান অভিযুক্ত Civic Volunteer হওয়ায় কার্যত এবার সিভিক পুলিশদের কার্যাবলী ও সীমা পরিসীমা নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি করলো প্রশাসন। এমনিতেই এই নৃশংস ঘটনা রাজ্য সরকারের শীর্ষ স্তরে প্রবল উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। তার ওপর সিভিক পুলিশদের কথা সামনে আসায় আরো চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে তা সারা রাজ্যে। জানা যাচ্ছে সিভিক পুলিশদের এমন কিছু কার্যক্রম দেখা গেছে যা সন্দেহ সৃষ্টি করছে রাজ্য সরকারের মনে।

Civic Volunteer Job Role after RG Kar Hospital Abhaya Case

এই কারণেই সিভিক পুলিশদের নিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। এরপর কি হতে চলেছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের?
রাজ্য জানিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের মূলত পুলিশের ‘সহযোগী’ হিসেবে কাজ করার কথা। তাঁদের কাজ মূলত পুলিশের নির্দেশে সাধারণ জনগণের সহায়তা করা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। কিন্তু সম্প্রতি তাদের কাজের পরিধি ও ক্ষমতা নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। আরজি কর হাসপাতালে ঘটনার পর থেকে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও তল্লাশির কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে, যা তাঁদের দায়িত্বের বাইরে।

নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে যে নির্দেশিকা রয়েছে তা অনেক জায়গাতেই উপেক্ষিত হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের অনেক থানায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই ভলান্টিয়ারদের হাতে পুলিশি কাজের অনেক দায়িত্বই চলে এসেছে। তাঁরা এখন কেস ডায়েরি পরিচালনা, কেন্দ্রীয় পোর্টালে ডেটা আপলোডের মতো কাজও করছেন, যা সম্পূর্ণভাবে তাঁদের অধিকারিক কাজের বাইরে। এমনকি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য তাঁরা লাঠি ও ওয়াকিটকি ব্যবহার করছেন।

আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পর Civic Volunteer দের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা কলকাতা পুলিশের লোগো যুক্ত মোটরবাইক ব্যবহার করে পুলিশের কাজ করছে এবং নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিদের সঙ্গে গোপন চুক্তির অভিযোগও রয়েছে। ফলে তদন্তকারী অফিসারদের কাজ বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। থানায় কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাছে অবৈধভাবে তথ্য পাচারের অভিযোগ উঠেছে, যা তদন্তকারীদের জন্য বিরাট সমস্যার সৃষ্টি করছে।

কলকাতা হাইকোর্টও নির্দেশনা দিয়েছে যে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের শুধু ‘সহযোগী’ হিসেবে কাজ করতে হবে, কিন্তু বাস্তবে তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব পালন করছে। এই ধরনের কার্যক্রম প্রশাসনকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে এবং পুলিশ অফিসারদের ওপর চাপ বাড়িয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে এই নতুন সমস্যার প্রেক্ষিতে নবান্ন সরকার নতুন নির্দেশিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে তাঁদের কাজ ও দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারিত হয়।

আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের নতুন প্রকল্পে আবেদন করলেই ১৫,০০০ টাকা পাবেন। কিভাবে আবেদন করবেন?

নতুন নির্দেশিকায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্য পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকবে কোন কাজগুলো তাঁরা করতে পারবেন এবং কোন কাজগুলো তাঁদের দায়িত্বের বাইরে। এর মাধ্যমে রাজ্য সরকার আশা করছে যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর অতিরিক্ত চাপ কমবে এবং আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি আরও সুসংগঠিত হবে।

এখন অপেক্ষা, নতুন নির্দেশিকা কিভাবে কার্যকরী হয় এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজের ক্ষেত্র কিভাবে পুনর্নির্ধারিত হয় তা দেখতে। যতদিন না এই নতুন বিধি কার্যকর হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত রাজ্য প্রশাসনকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে বলেই মনে হচ্ছে।
Written by Nabadip Saha.

শেয়ার করুন: Sharing is Caring!

Leave a Comment